সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে বেকার ২৬ লাখ কার্যকর উদ্যোগ নিন

নতুনধারা
  ৩১ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

বাংলাদেশ একটি জনসংখ্যাবহুল দেশ। আর এ কথাও বলার অপেক্ষা রাখে না, জনসংখ্যাবহুল দেশে কর্মসংস্থানের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গত কারণেই দেশের বেকারত্বের হার পর্যবেক্ষণ করা এবং কর্মসংস্থান পরিস্থিতি সংক্রান্ত সামগ্রিক বিষয় আমলে নেওয়া জরুরি। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল যে, দেশে বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৩০ হাজার। এর মধ্যে বেকার পুরুষের সংখ্যা ১৬ লাখ ৯০ হাজার, আর বেকার নারীর সংখ্যা ৯ লাখ ৪০ হাজার। উলেস্নখ্য, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বু্যরো (বিবিএস) জানায়, দেশে এখন বেকার জনগোষ্ঠীর হার কমে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হয়েছে- যা আগে ছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ। বুধবার বিবিএস প্রকাশিত 'শ্রমশক্তি জরিপ-২০২২' এ এমন চিত্র উঠে এসেছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পরিসংখ্যান ভবনে এ উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে বিবিএস। আমরা মনে করি, এটা আমলে নেওয়া দরকার, দেশে এখন বেকার জনগোষ্ঠীর হার কমে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হয়েছে- যা আগে ছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ। আর এই তথ্য ও সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নেও কাজ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই।

উলেস্নখ্য, বিবিএস আয়োজিত আলোচনা সভায় এটাও উঠে এসেছে যে, এ বিশাল বেকার জনগোষ্ঠী সপ্তাহে এক ঘণ্টা কাজ করার সুযোগও পায় না। বেকারত্বের এ হিসাব আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) দেওয়া মানদন্ড অনুযায়ী। আইএলও মনে করে, সপ্তাহে এক ঘণ্টা কাজ না করলে ওই ব্যক্তিকে বেকার হিসেবে ধরা হয়। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, বিবিএসের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বিগত পাঁচ বছরে শ্রমবাজারের সূচকগুলো উলেস্নখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। ২০২২ সালের ফলাফলে পাওয়া যায়, বেকারত্বের হারের সূচক কমেছে। শ্রমশক্তিতে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণের হারে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেছে এবং কর্মে নিয়োজিত বিশেষ করে শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। যুব জনগোষ্ঠীর শ্রমবাজারে অংশগ্রহণ বেড়েছে। কৃষি এবং সেবা খাতে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী বেড়েছে। আমরা মনে করি, শ্রমশক্তিতে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণের হারে যে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেছে তা আশাব্যঞ্জক, একইসঙ্গে বেকারের সংখ্যা আরও কমিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

এটাও উলেস্নখ্য, পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেছেন, মহামারি করোনাভাইরাসের সময় কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্যের হার কমেছে। সরকার বিশেষ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে কর্মসংস্থান বেড়েছে। করোনার সময় ২০ শতাংশ থেকে দারিদ্র্য কমে ১৬ শতাংশ হয়েছে। সরকার বিলিয়ন ডলার প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছে। আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশের মতো জনসংখ্যাবহুল দেশের জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তর করার কোনো বিকল্প নেই। দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধি অর্জনের প্রশ্নে জনসংখ্যা জনসম্পদে যেমন রূপান্তর করতে হবে, তেমনি বেকার জনগোষ্ঠীকে কর্মক্ষম করে তুলে নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ। এটা কোনোভাবেই ভুলে যাওয়া যাবে না যে, বেকারত্ব নিরসন না হলে দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধি অর্জনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে। দেশে এখন বেকার জনগোষ্ঠীর হার ৪ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হয়েছে, কিন্তু এটাও বিবেচনায় নেওয়া দরকার, দেশে বেকারের সংখ্যা ২৬ লাখ ৩০ হাজার। ফলে এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে কর্মক্ষম করে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার কোনো বিকল্প নেই।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, বেকারত্ব কমিয়ে আনতে সুষ্ঠু পরিকল্পনা গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে। কেননা, বেকারত্ব বৃদ্ধি কোনোভাবেই সুখকর নয়। কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি দক্ষ জনশক্তিও গড়ে তুলতে হবে। বাড়াতে হবে প্রশিক্ষণের পরিধি। দেশকে এগিয়ে নিতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি এবং তরুণদের প্রশিক্ষণ বা কর্মসংস্থানের সঙ্গে যুক্ত করতে উদ্যোগী হতে হবে। এর আগে এমন আলোচনাও সামনে এসেছিল যে, গ্রামীণ প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলো কেবল নামে মাত্র দাঁড়িয়ে আছে। সেখানে ঠিকমতো প্রশিক্ষণের ক্লাস হয় না, ভালো প্রশিক্ষক নেই। ফলে এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও ভালো প্রশিক্ষকের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। কেননা, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি করা সম্ভব। সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে, বেকারত্ব নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে