সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

১০০ কোটি টাকার আইস জব্দ অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে

নতুনধারা
  ২৮ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

দীর্ঘদিন থেকেই মাদকবিরোধী অভিযান চলছে। অভিযানে প্রতিদিনই মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা ধরা পড়ছে। জব্দ করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মাদক। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্ত থেকে ২১ কেজি ক্রিস্টাল মেথের (আইস) একটি চালান জব্দ করা হয়েছে। এ সময় তিনজনকে আটক করেছে বিজিবি। এটি দেশে জব্দ হওয়া মাদকের সবচেয়ে বড় চালান বলে দাবি বিজিবির। মঙ্গলবার ভোরে উখিয়া সীমান্তের বালুখালী সাইক্লোন শেল্টার এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদকের চালানটি জব্দ করা হয়। আটকরা হলো- বালুখালী এলাকার মৃত ছিদ্দিক আহম্মেদের ছেলে বুজুছে মিঞা (৫১), একই এলাকার মো. আবদুস শুকুরের ছেলে মো. ইসমাইল (২৩), মো. আবুল মন্ডলের ছেলে ছৈয়দুল বাশার (৪০)। বিজিবির অভিযানে কক্সবাজারের বালুখালী সীমান্ত থেকে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২১ কেজি ক্রিস্টাল মেথ (আইস) জব্দ করা হয়েছে। যেটির সিজার মূল্য ১০০ কোটি টাকা। এ ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগে ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বিভিন্ন অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৬৭৩ পিস ইয়াবা, ১ কেজি গাঁজা, ১৪৫ গ্রাম ৫৮ পুরিয়া হেরোইন, ৫২ বোতল ফেনসিডিল ও ৮ লিটার দেশি মদ উদ্ধারমূলে জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ১৬টি মামলা করা হয়েছে বলে জানানো হয়।

দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বড় ধরনের মাদকের চালান প্রায়ই ধরা পড়ছে- যা আমাদের মধ্যে বিস্ময়ের জন্ম দেয়। এর আগে টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে কোস্ট গার্ডের অভিযানে ৭ লাখ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, মাদকের ভয়াবহ বিস্তার দেশের সবাইকেই উদ্বিগ্ন করেছে। এর বিষাক্ত ছোবল অকালে কেড়ে নিচ্ছে অনেক প্রাণ। অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণী হচ্ছে বিপথগামী। কোনোভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না মাদকের চোরাচালান।

এটা সত্য, বাংলাদেশে ইয়াবা আর ফেনসিডিলের বাজার তৈরি হওয়ায় মিয়ানমার এবং ভারত সীমান্তে অসংখ্য ইয়াবা আর ফেনসিডিলের কারখানা গড়ে উঠছে। এসব কারখানায় বাংলাদেশের যুবসমাজের জন্য মিয়ানমার মরণ নেশা ইয়াবা এবং ভারত থেকে ফেনসিডিল উৎপাদন করে তা নির্বিঘ্নে সরবরাহ করা হচ্ছে। বলতে দ্বিধা নেই যে, এসব দেশে মাদক তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশের যুবসমাজের জন্যই। বাংলাদেশ ঘেঁষা সীমান্তে মিয়ানমারে অসংখ্য ইয়াবা কারখানা গড়ে উঠেছে। সেসব কারখানায় কোটি কোটি পিস ইয়াবা তৈরি হচ্ছে। মিয়ানমার সীমান্তে ইয়াবা কারখানার কথা আমরা জানি, আমাদের সরকারও জানে, কিন্তু ইয়াবা চোরাচালান রোধ হচ্ছে না। কেন হচ্ছে না- এটাই এখন বড় প্রশ্ন?

উলেস্নখ্য, রাজধানীতে মাদকের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করা হয়। এর আগে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা করে সরকারের একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা। ওই তালিকা অনুযায়ী অভিযান শুরু করা হয়। এতে অনেকেই গা ঢাকা দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, অভিযানের জোরদারের খবর আগেই ফাঁস হয়ে যাওয়ায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। আবার অনেকেই গোপনে দেশে এসে আবার মাদক ব্যবসা শুরু করেছে।

আমরা মনে করি, মাদক ব্যবসার সঙ্গে দেশের অনেক রাঘববোয়াল জড়িত। এদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিতে পারলে আমাদের যুব সমাজকে রক্ষা করা যাবে না। এ ব্যাপারে দ্রম্নত কঠোর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে