রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

কৃষিঋণ বিতরণ কৃষকস্বার্থ সংরক্ষণ করতে হবে

নতুনধারা
  ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

কৃষিঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে উলেস্নখযোগ্য সাফল্য এখন দৃশ্যমান। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে জুলাই-মার্চ নয় মাসে ২৪ হাজার ১২২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা কৃষিঋণ বিতরণ করা হয়েছে। যা পুরো বছরের লক্ষ্যমাত্রার ৭৮ শতাংশ। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি। গত বছর একই সময়ে বিতরণ হয়েছিল ৭৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তথ্যানুযায়ী, নয় মাসে বিতরণকৃত কৃষিঋণে সরকারি ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ১০ হাজার ২৬ কোটি টাকা। যা সরকারি ব্যাংকগুলোর মোট লক্ষ্যমাত্রা ১১ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকার ৮৫ দশমিক ২৭ শতাংশ। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ১৪ হাজার ৯৬ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার ৭৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে কৃষিঋণ বিতরণে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১৯ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা। কৃষিঋণ বিতরণে সরকারি ব্যাংকগুলো এগিয়ে আছে। এই সময়ে কৃষিঋণ বিতরণে সব চেয়ে ভালো করেছে দেশে কর্মরত বিদেশি ব্যাংকগুলো। বিদেশি ব্যাংকগুলো পুরো বছরে লক্ষ্যমাত্রার ৮ শতাংশ অতিরিক্ত কৃষিঋণ বিতরণ করেছে এই নয় মাসে। বিদেশি ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ৮৩২ কোটি ৩২ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরে বিদেশি ব্যাংকগুলোর কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৭৭১ কোটি টাকা। কৃষিঋণ বিতরণে পিছিয়ে থাকা ব্যাংকগুলো হলো, সরকারি বেসিক ব্যাংক, গেস্নাবাল ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক ও কমিউনিটি ব্যাংক। আমরা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।

বলার অপেক্ষা রাখে না, করোনাকাল শুরু হওয়ার সময় থেকেই সরকার কৃষির ওপর বেশ গুরুত্ব দিয়েছে। বাংলাদেশ যেহেতু খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ সেহেতু আমরা আশাবাদী হতে পারি। তা ছাড়া এবার দেশে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে কৃষকদের বাঁচানোর জন্য পরীক্ষামূলকভাবে শস্যবীমা চালুর কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারের গবাদিপশু বীমা চালু করারও পরিকল্পনা আছে। অন্যদিকে বিভিন্ন ধরনের কৃষিযন্ত্রে স্থানীয় ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া এবং ফসল মাড়াই যন্ত্রের কর কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সরকার প্রতিবছর কৃষি খাতে সার, সেচ ও বিদু্যতে ভর্তুকি, নগদ সহায়তা ও প্রণোদনা হিসেবে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে। ব্যয়িত অর্থের সিংহভাগই খরচ হয় প্রভাবশালী ও রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বড় কৃষকদের পেছনে। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক সব সময় সরকারের এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। থাকেন উপেক্ষিত। দেখা গেছে, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককরাই পারিবারিক শ্রম ও নিজস্ব মেধা দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী কৃষিকে। এসব ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের সরকারি ভর্তুকি ও প্রণোদনার সুযোগ-সুবিধা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি যেসব কৃষককে ঋণ দেওয়া হয়েছে তাদের প্রতি সরকার ও ব্যাংকগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক হওয়া উচিত। কারণ ঋণ পরিশোধ করতে না পারার কারণে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে। সরকারের পরিকল্পিত উদ্যোগই কেবল পারে কৃষকস্বার্থ সংরক্ষণ করতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে