গলুই'য়ের পর নতুন কোনো সিনেমার পরিকল্পনা আছে?
দেশে সিনেমাটি ভালো করার পর এখন এটা বহির্বিশ্বে বাংলা ভাষাভাষী দর্শকের কাছেও পৌঁছে দিতে চাই। ঈদ উপলক্ষে ৮ জুলাই এটা উত্তর আমেরিকার হলে, যারা বাংলা ভাষাভাষী আছেন তাদের জন্য প্রদর্শিত হবে। এটাও আমার জন্য দারুণ ভালো লাগার। আমার তো আনন্দের শেষ নেই। এখন আমি গলুই নিয়েই বিভোর আছি। তবে সামনে আগস্টে আমার 'যোদ্ধা' নামের অনুদানের সিনেমার শুটিং করার আশা রাখছি।
ঢাকায় দর্শক কম হতে পারে এই চিন্তাতেই সিনেমাটি রাজধানীর বাইরে মুক্তি দেন?
আমাদের টার্গেট আসলে ছিল মধ্যবিত্ত পরিবার, ওইটা তো একটা ব্যাপার ছিলই। এটা ঠিক ঈদে সিনেমা মুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে সবাই ঢাকার হলগুলোকেই প্রথমে টার্গেট করেন। মুক্তি পাওয়া চারটা ছবির মধ্যে তিনটা ছবিই বড় ছবি ছিল। ঈদে সবাই তো ঢাকার সিনেমাহলকে টার্গেট করেন। তবে আমরা চেয়েছি সিনেমাটি দেশের সর্বোচ্চ সংখ্যক দর্শকের কাছে পৌঁছে দিতে। সে হিসেবেই সারা বাংলাদেশে এটির মুক্তি দিয়েছি। সাধারণ সিনেমাহলে না হলেও ঢাকার সব সিনেপেস্নক্সে মুক্তি দিয়েছি।
নাটকের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী সিনেমার
অভিজ্ঞতা কেমন?
অনেক অনেক তফাত। নাটক তো ছোট আয়োজন ছোট পরিসরের চিন্তায় হয়। সিনেমায় তো থাকে অনেক বড় ব্যাপার। এখানে ক্যানভাস, আয়োজন, উপস্থাপনা সবকিছুই আলাদা। আমি যখন প্রথম সিনেমা বানাই ভয়ে ভয়েই ছিলাম। যখন রিলিজ তখন টেনশনে থাকি। আমি আসলে নাটক বানাই ভাত খাওয়ার জন্য আর সিনেমা বানাই বেঁচে থাকার জন্য। একদিন তো চলেই যেতে হবে। এই যে এত বছর ধরে আমি নাটক বানাই অথচ অনেকেই জানেন না আমি নাটক বানাই। আর একটি 'হৃদয়ের কথা' বানানোর পর থেকেই মানুষ জানে আমি সিনেমা বানাই। আমাকে তো বাঁচিয়ে
রেখেছে 'হৃদয়ের কথা'ই।
এখনকার সিনেমায় শক্তিমান অভিনেতার অভাব কেমন?
এ রকম একটা অভাব তো আছেই। এখন একজন বাবা-মা বা বড় ভাই চরিত্রের জন্য চিন্তা করতে হয়। আগে এজন্য অত চিন্তা করতে হতো না।
তারপরও যারা আছেন তাদেরকে নিয়ে যদি নির্মাতারা ওইভাবে চরিত্র তৈরি করে দর্শকের সামনে যথোপযুক্ত প্রেজেন্ট করতে পারেন তখন এই অভাব থাকবে না। আমার গলুইয়ে নায়ক-নায়িকার পাশাপাশি প্রতিটি চরিত্রই কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্বের দিক থেকে অভিনয়ে কারো চেয়ে কারোরই কমতি ছিল না।
এটা আসলে নির্ভর করে গল্পের ওপর তারপরে উপস্থাপনার ওপর।
টিভি তারকা থেকে অনেকে সিনেমায়।
এটা কীভাবে দেখেন?
বিষয়টি আমি এভাবে দেখি না। এখন আসলে সিনেমা, নাটক, ওটিটি- সবই এমন একটা কাছাকাছি জায়গায় এসে গেছে যে, এখন আসলে কোনো নির্মাতা বা অভিনয় শিল্পী বা লেখক কেউই একটা পার্টিকুলার জায়গার জন্য সীমাবদ্ধ নন। এখন একটা সিনেমা হলে মুক্তি পাওয়ার পর ইউটিউব বা ওটিটিতে মুক্তি পাচ্ছে কিংবা কোনো নাটক-টেলিফিল্ম কোনো চ্যানেলে প্রকাশের পর সেটা আবার ওটিটিতে দেখানো হচ্ছে। এভাবে পারফর্মারের অভাব থেকে নয় বরং বিভিন্ন মাধ্যমগুলো সবার জন্যই সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। সবগুলো ঘরই তাদের জন্য উন্মুক্ত।
অভিনয়ের পাশাপাশি তো গানও লেখেন- নতুন কোনো গান লিখেছেন?
আমি মূলত নির্মাতা হিসেবেই পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। গান লিখি শখের বশে মাঝে মাঝে। গান আসলে পেশাদারিত্বের সঙ্গে লিখি না। এক্ষেত্রে আমি খুবই অলস প্রকৃতির। আমি এনজয় করি নির্মাতা হিসেবেই। আর আমি তো অভিনয়ের স্বপ্ন দেখেই এসেছিলাম। কিন্তু নির্মাতা হিসেবে কাজ করায় এর সুযোগ হয় না। তবে অন্যের কাজ টুকটাক করা হয়। সবকিছু ছাপিয়েই এখন আমি এমন একটা সেরা কাজের অপেক্ষায় আছি যেটা আমাকে যুগের পর যুগ ধরে বাঁচিয়ে রাখবে।