রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

টিভি নাটকে আশা জাগাচ্ছেন নতুনরা

মাসুদুর রহমান
  ০৭ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

টিভি নাটকের বিশাল আঙিনাজুড়ে কাজ করছেন নতুনরা। অভিনয়ের মতো পরিচালনাতেও নতুনরা মেধার পরিচয় দিচ্ছেন। মৌসুমী হামিদ, মেহজাবীন, শবনম ফারিয়া, সাফা কবির, জোভান, তৌসিফ মাহবুব, মনোজ প্রামাণিকদের পর টেলিপর্দায় আলো ছড়াচ্ছেন একঝাঁক নতুন অভিনয়শিল্পী। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে তারা বেশ পরিচিতি পেয়েছেন। নির্মাতাদের কাছেও তাদের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে বেশ। এই সময়ের অভিনয়ের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন তাসনিয়া ফারিণ, মুশফিক আর রহমান, সামিরা মাহি, আরশ খান, কেয়া পায়েল, জিয়াউল হক পলাশ, রোকেয়া জাহান চমক, মাহা, তাসনুভা তিশা, তটিনীসহ আরও কয়েকজন। এই প্রজন্মের কাছে এখন নির্ভর করছে টিভি নাটক। বিনোদন পেতে টিভি নাটক দেখতে বসলেই পর্দায় আসে তাদের কেউ না কেউ। তাদের অভিনয় সৌন্দর্র্য ক্রমেই মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। গেল কয়েক বছরের হিসাব ধরলে সবচেয়ে আলোচনায় রয়েছে তাসনিয়া ফারিণ। এক ঘণ্টার নাটক, টেলিফিল্ম, ওয়েব সিরিজ ও ওয়েব ফিল্মে তার সরব উপস্থিতি। ইতোমধ্যে এই অভিনেত্রীর একটি চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে ওপার বাংলায়। বর্তমানে অভিনয় করছেন ঈদের নাটকে। কিছুদিন আগে রাফাত মজুমদারের পরিচালনায় 'নো মোর' নামে ঈদের নাটকে কাজ করেছেন।

ঈদের নাটক নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন নতুন অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান। কিছুদিন আগে 'মায়া শালিক' নামে একটি ওয়েব ফিল্মে মাধ্যমে বেশ আলোচনায় আসেন। জামাল মলিস্নকের 'মুখোমুখি যদি একদিন', 'শাড়িওয়ালা ক্লথিং সেন্টার', সীমান্ত সজলের 'ঘুমন্ত পাখি', পথিক সাধনের 'কষ্টের নাম মায়া', চয়নিকা চৌধুরীর 'জল তরঙ্গ', মারুফ হোসেন সজীবের 'বাবুই পাখির বাসা', আরমান রহমান প্রত্যয়ের 'গুলাইল', রুবেল আনুশের 'আদম হাওয়া' ও এল আর সোহেলের 'দই ফুচকা'সহ আরও বেশ কিছু ঈদের নাটকের কাজ শেষ করেছেন। নাটকগুলোতে তার সহশিল্পী হিসেবে রয়েছেন আব্দুন নূর সজল, খায়রুল বাশার, তৌসিফ মাহবুব, ইয়াশ রোহান প্রমুখ। এরই মধ্যে নানামাত্রিক চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে একজন সুঅভিনেতা হিসেবে প্রমাণ করেছেন মুশফিক আর ফারহান। দর্শক চাহিদা ও নির্মাতাদের আস্থা নিয়ে বর্তমানে প্রায় দিনই নাটকের শুটিংয়ে অংশ নিচ্ছেন তিনি। অন্যদিকে চলতি প্রজন্মের অভিনেত্রীদের মধ্যে নিজের মেধার পরিচয় দিয়েছেন সামিরা খান মাহি। তিনিও বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। ফারহান ও মাহি একসঙ্গে বেশকিছু নাটকে সাড়া ফেলেছেন। সময়ের আলোচিত অভিনেত্রী কেয়া পায়েল। অভিনয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে শখের বশে একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হয়ে। তবে অভিনয়ে নিয়মিত ২০২০ সাল থেকে। এই ছোট্ট ক্যারিয়ারে প্রশংসিত অনেক নাটকে অভিনয় করেছেন। আসছে ঈদের নাটক নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন এই অভিনেত্রী। সৈয়দ শাকিলের পরিচালনায় 'চোখের ক্ষুধা', অনন্য ইমনের 'দূর থেকে দূরে' এ ছাড়া 'কমলাকান্ত', 'ফিটিং ইসমাইল', 'খোট', 'ভালোবাসার কয়েকটা দিন', এস আর মজুমদারের পরিচালনায় 'জ্যোৎস্না হারা'সহ কয়েকটি নাটকের শুটিং শেষ করেছেন কেয়া পায়েল। টেলিভিশন, ইউটিউব কিংবা ফেসবুক ক্লিপগুলোয় চোখ রাখলে দেখা মেলে জান্নাতুল সুমাইয়া হিমির। বিশেষ করে নিলয়ের সঙ্গে হিমির জুটি দর্শকের মাঝে ভালো সাড়া ফেলে। আসছে ঈদে তাকে দেখা যাবে একাধিক নাটকে। এর মধ্যে উলেস্নখযোগ্য- 'হৃদয় ক্ষরণ', 'রাত ১১:৩০ গেট বন্ধ', 'স্বাগতম ডাক্তার', 'ওয়েডিং অব দ্য ইয়ার', 'নোনা জলে প্রেম' প্রভৃতি। 'ব্যাচেলর পয়েন্ট' খ্যাত অভিনেতা জিয়াউল হক পলাশ। অল্প সময়েই সুনিপুণ অভিনয় দিয়ে দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছেন এই নতুন অভিনেতা। আসছে ঈদে পলাশ অভিনীত বেশ কিছু নাটক প্রচার হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে উলেস্নখযোগ্য কাজল আরেফিন অমি পরিচালিত 'বিদেশ'। এর বাইরে আরও কিছু নাটকে দর্শক তাকে দেখতে পাবেন বলে জানান পলাশ। তিন বছরের ক্যারিয়ারে 'সুহাসিনী', 'বাঁচিবার হলো তার সাধ' ও 'সময় সব জানে'সহ বেশ কয়েকটি নাটক, ওয়েব সিনেমায় অভিনয় করে দর্শক মহলে পরিচিতি পেয়েছেন তানজিম সাইয়ারা তটিনী। আসন্ন ঈদে অন্তত পাঁচটি নাটকে পাওয়া যাবে তাকে। এর মধ্যে ছোটপর্দার অভিনেতা অপূর্বর সঙ্গে জুটি বেঁধে 'এসো হাত বাড়াই' নাটকের কাজ শেষ করেছেন। তিনি বলেন, 'পাঁচটার মতো কাজ করছি। প্রতিটি গল্পই বেশ আলাদা। আশা করি, সবার ভালো লাগবে।' অল্প সময়ে মূকাভিনেতা থেকে ছোটপর্দার প্রিয় মুখে পরিণত হয়েছেন খায়রুল বাসার। বিশেষ করে খায়রুল বাসারের অন্যতম কাজ ভিকি জাহেদের 'চরের মাস্টার' ও আশফাক নিপুণের ওয়েব সিরিজ 'মহানগর'। আসন্ন ঈদুল ফিতরে বেশ কিছু নাটকে দেখা যাবে তাকে। এর মধ্যে আছে এল আর সোহেল পরিচালিত 'দই ফুচকা'। নতুন অভিনেত্রী নাজনীন নাহার নিহা সম্প্রতি প্রবীর রায় চৌধুরীর পরিচালনায় 'লাভ সেমিস্টার' নাটকে কাজ করেছেন জোভানের বিপরীতে।

নবীন অভিনয়শিল্পীদের মতো পরিচালনাতেও সাড়া জাগিয়েছেন নতুরা। সিনিয়র নির্মাতাদের পাশাপাশি টেলিভিশন নাটকে কাজ করছেন অনেক তরুণ পরিচালক। বলতে গেলে তারাই এখন আলোচিত ও প্রশংসিত কাজগুলো করছেন। গল্প ও নির্মাণে ভিন্নতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে তরুণ পরিচালকদের কাজে। দিন দিন তাদের গ্রহণযোগ্যতাও বাড়ছে। 'বড় ছেলে' খ্যাত নির্মাতা মিজানুর রহমান আরিয়ান ২০১২ সালে 'তুমি আমি সে' শিরোনামের একটি নাটক নির্মাণের মধ্য দিয়ে তার নাটক পরিচালনা শুরু হয়েছিল। এরপর থেকে তিনি অর্ধ শতাধিকেরও বেশি নাটক নির্মাণ করেন। এছাড়া এই সময়ে আলোচনার দিক থেকে বেশি এগিয়ে রয়েছেন তরুণ নির্মাতা মাবরুর রশীদ বান্নাহ্‌?, আশফাক নিপুণ, কাজল আরেফিন অমি, মহিদুল মহিম ও নূহাশ হুমায়ূন প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে