শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও বোরো ধান-চাল সংগ্রহ হয়নি

'লক্ষ্যমাত্রাটা এবার বেশি করে নির্ধারণ করা হয়েছিল এর আগে কখনোই আট লাখ টন ধান সংগ্রহ করা হয়নি। সেদিক থেকে সংগ্রহ যে খুব বেশি কম হয়েছে তা নয়
যাযাদি রিপোর্ট
  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০
সিলেট বিভাগ ও হাওড়াঞ্চলে উৎপাদিত ধান কৃষকদের কাছ থেকে কিনে নৌ-পথে আশুগঞ্জের ভিওসি ঘাটে নিয়ে আসেন ব্যাপারীরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাড়ে ৩০০ চালকলে ধানের জোগান দেয় এই প্রাচীন হাট। প্রতিদিন ভোর থেকে ব্যস্ত হয়ে পড়েন ব্যাপারীরা। ছবিটি বুধবার তোলা -ফোকাস বাংলা

চালকল মালিকদের অসহযোগিতার মধ্যে মহামারির কারণে এক দফা সময় বাড়িয়েও বোরো ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও পূরণ করতে পারেনি সরকার।

বোরো ধান-চাল সংগ্রহের শেষ দিন মঙ্গলবার পর্যন্ত ৯ লাখ ৪৩ হাজার ৯০১ মেট্রিক টন ধান-চাল সংগৃহীত হয়েছে; যা চালের আকারে ৮ লাখ ৬৭ হাজার ৯৪৫ মেট্রিক টন।

এবার সাড়ে ২১ লাখ মেট্রিক টন বোরো ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে সরকারের নির্ধারণ করা দামের থেকে বাজারে চালের দাম বেশি থাকায় বেশিরভাগ চালকল এবার সরকারকে চাল দেয়নি।

সব মিলিয়ে এবার চালের আকারে নয় লাখ মেট্রিক টনের বেশি বোরো সংগ্রহ হয়েছে বলে ধারণা দেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সারোয়ার মাহমুদ।

প্রকৃতপক্ষে কত মেট্রিক টন বোরো ধান-চাল সংগৃহীত হয়েছে সেই তথ্য আগামী সপ্তাহে পাওয়া যাবে বলে বুধবার জানিয়েছেন তিনি।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ লাখ ৪৩ হাজার ৯০১ মেট্রিক টন বোরো ধান-চাল সংগৃহীত হয়েছে।

এর মধ্যে ২ লাখ ১৭ হাজার ১৮ মেট্রিক টন ধান, ৬ লাখ ৩২ হাজার ৫৩৬ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ৯৪ হাজার ৩৪৭ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগৃহীত হয়েছে; যা চালের আকারে ৮ লাখ ৬৭ হাজার ৯৪৫ মেট্রিক টন।

লক্ষ্যমাত্রা কীভাবে পূরণ করা হবে, সেই প্রশ্নে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সারোয়ার বলেন, 'লক্ষ্যমাত্রাটা এবার বেশি করে নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর আগে কখনোই আট লাখ টন ধান সংগ্রহ করা হয়নি। সেদিক থেকে সংগ্রহ যে খুব বেশি কম সংগ্রহ হয়েছে তা নয়। সামনে আমনের মৌসুম রয়েছে। দুই মাস পর তো আমন সংগ্রহ করা হবে। দুই মাস তেমন কোনো সমস্যা হবে না। এই দুই মাসে সরকার যে পরিমাণ খাদ্যশস্য বের করে দেবে তা মোকাবিলার করার জন্য এই শস্যই যথেষ্ট।'

আগামী দুই মাসে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে তিন লাখ মেট্রিক টন চাল ছাড়াও অন্যান্য কর্মসূচিতে আরও দেড় লাখ মেট্রিক টনসহ মোট সাড়ে চার লাখ টন চালের প্রয়োজন হবে বলে জানান সারোয়ার।

আর এই সময়ে চাল ও গম মিলিয়ে ১০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য সরকারি গোডাউনে মজুত থাকবে বলে জানান তিনি।

এবার বন্যা হওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা না থাকা এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম দিকে কর্মহীন ও দরিদ্রদের চাল দেওয়া হলেও এখন তা আর বিতরণের প্রয়োজন না থাকায় লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক খাদ্যশস্য সংগৃহীত হলেও খুব বেশি সমস্যা হবে না বলেই মনে করেন সারোয়ার।

যেসব মিল এবার সরকারকে কোনো চাল দেয়নি তাদের আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে জানিয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, 'যারা এই দুঃসময়ে সরকারকে চাল দিয়েছে তারা জনগণের বন্ধু। আর যারা চাল দেয়নি তাদের কাছে ব্যবসাটাই বড়। যারা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে তারা অবশ্যই ভালো অবস্থানে থাকবে। সরকারকে চাল না দিয়ে মিলগুলো নিজেরাই সরকারের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে ফেলেছে।'

খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটি এবার ২৬ টাকা কেজি দরে বোরো ধান, ৩৬ টাকা কেজিতে সিদ্ধ ও আতপ চালসহ ১৯ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন বোরো ধান-চাল কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে সরকারিভাবে বোরো সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা আরও দুই লাখ মেট্রিক টন বাড়িয়ে সাড়ে ২১ লাখে উন্নীত করা হয়।

সারাদেশে এবার দুই কোটি মেট্রিক টন বোরো ধান উৎপাদন হলেও সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের সঙ্গে বাজারের দামের তফাৎ থাকায় সরকারের সঙ্গে চুক্তির পরেও মিলাররা চাল দেয়নি।

গত ২৬ এপ্রিল থেকে ধান এবং ৭ মে থেকে বোরো চাল সংগ্রহ শুরু হয়; গত ৩১ আগস্ট তা শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেই সময় বাড়িয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত করা হয়।

অন্যদিকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি গুদামে ১৪ লাখ ৪৮ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। এর মধ্যে ১১ লাখ ৬৬ হাজার মেট্রিক টন চাল এবং দুই লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টন গম।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<112339 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1