শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাদীর পরিচয় নিশ্চিতে হাইকোর্টের পাঁচ নির্দেশনা বিদেশিদের লাগবে পাসপোর্ট

যাযাদি ডেস্ক
  ২৫ জুন ২০২১, ০০:০০

ভুয়া পরোয়ানা, মামলায় হয়রানি বন্ধে থানা, আদালত বা ট্রাইবু্যনালে অভিযোগ দায়েরের সময় অভিযোগকারীর পরিচয় যথাযথভাবে নিশ্চিত হতে পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছে হাইকোর্ট।

'অস্তিত্বহীন' বাদীর মামলা চ্যালেঞ্জ করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১৪ জুন রুলসহ এসব নির্দেশনা দেয়।

পূর্ণাঙ্গ আদেশটি বুধবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।

হাই কোর্টের নির্দেশনায় বলা হয়েছে। অভিযোগ/এজাহারে অভিযোগকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর, ক্ষেত্রমতে পাসপোর্ট নম্বর উলেস্নখ করতে হবে। এজাহারকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে সে ক্ষেত্রে এজাহারকারীকে শনাক্তকারী ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর উলেস্নখ করতে হবে। বিশেষ বাস্তব পরিস্থিতিতে জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট নম্বর লভ্য (অ্যাভেইলেবল) না হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা এজাহারকারীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার

জন্য স্বীয় বিবেচনায় অন্যান্য যথাযথ পদ্ধতি গ্রহণ করবেন। আদালত কিংবা ট্রাইবু্যনালে অভিযোগ দাখিলের ক্ষেত্রে অভিযোগকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট না থাকলে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী অভিযোগকারীকে শনাক্ত করবেন। অভিযোগকারী প্রবাসী কিংবা বিদেশি নাগরিক হলে সংশ্লিষ্ট দেশের পাসপোর্ট নম্বর উলেস্নখ করতে হবে।

আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এমদাদুল হক বসির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি অরবিন্দ কুমার রায় ও জেনারেল বিপুল বাগমার।

রিট আবেদনটি করেছিলেন ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, চুরি-ডাকাতি, মানব পাচার, এসিড নিক্ষেপসহ নানা অভিযোগের ৪৯টি মামলার আসামি রাজধানীর শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চন।

মারামারির এক মামলায় ২০১৩ সালের ১৮ আগস্ট সূত্রাপুর থানা পুলিশ কাঞ্চনকে প্রথম গ্রেপ্তার করে। এরপর দুই বছর তিন মাস তিনি কারাগারে ছিলেন। এর মধ্যে ১৭টি মামলা হয়।

২০১৫ সালের ২১ মে জামিনে বেরিয়ে আসেন কাঞ্চন। পরে আরও বিভিন্ন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তিনি জামিনে মুক্ত হন।

গত বছর অক্টোবরে নারায়ণগঞ্জের যুগ্ম জেলা জজ আদালতে এক কারখানার মালিক পরিচয় দিয়ে তার বিরুদ্ধে ৪৯তম মামলাটি করা হয়। কিন্তু সেই মামলার বাদীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ অবস্থায় 'অস্তিত্বহীন' বাদীর এসব মামলা চ্যালেঞ্জ করে গত ৭ জুন হাইকোর্টে রিট করেন ৫৫ বছর বয়সি কাঞ্চন। মামলা দায়েরে সম্পৃক্ত বা বাদীকে খুঁজে বের করতে তদন্তের নির্দেশনা চাওয়া হয় রিটে।

গত ১৪ জুন এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেয়।

আবেদনকারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা ও হয়রানিমূলক ফৌজদারি মামলা দায়েরে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।

আইন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)'র অতিরিক্ত মহাপরিদর্শককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এছাড়া একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন হয়রানিমূলক মামলা দায়েরের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় আদেশে।

আদেশ পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শককে এ বিষয়ে প্রতিবেদনও দিতে বলা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে