শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
শাবিপ্রবির আন্দোলন

জাফর ইকবালের আশ্বাসে অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

অনশন ভাঙলেও আন্দোলন চলবে সাবেক পাঁচ শিক্ষার্থীর জামিন 'ভিসি ফরিদ একটা দানব '
ম শাবি প্রতিনিধি
  ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বুধবার পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল -ফোকাস বাংলা

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে দীর্ঘ ১শ ৬৩ ঘণ্টা না খেয়ে থাকার পর শিক্ষাবিদ ডক্টর মুহম্মদ জাফর ইকবালের আশ্বাসে অনশন ভেঙেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনশনকারী শিক্ষার্থীরা। বুধবার সকালে ১০টা ২০ মিনিটে অনশন ভাঙেন তারা। তবে প্রিয় শিক্ষকের আশ্বাসে অনশন ভাঙলেও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

গত ১৩ জানুয়ারি রাতে বেগম সিরাজুন্নেসা হলের প্রভোস্টের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন নানা ঘটনার পর উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের আন্দোলনে পরিণত হয়। বুধবার তা ১৩ দিনে গড়িয়েছে। এর মধ্যে ১৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া শিক্ষার্থীদের অনশনের সাত দিন পেরিয়ে অষ্টম দিনে পৌঁছার আগে ডক্টর জাফর ইকবাল দাবি মেনে নেওয়া হবে এমন আশ্বাস দিয়ে অনশন ভাঙান শিক্ষার্থীদের।

বুধবার ভোর ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে পৌঁছান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ডক্টর জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ডক্টর ইয়াসমিন হক। এরপর ভোর ৪টা থেকে দেড় ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং অনশনকারীদের সব কথা মন দিয়ে শুনেন। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের অনশন ভেঙে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার কথা বলেন। সঙ্গে অধ্যাপক ইয়াসমিন হকও শিক্ষার্থীদের অনেক বোঝান। অবশেষে অনশনরতরা জাফর ইকবালকে সবাই একযোগে অনশন ভাঙবেন বলে প্রতিশ্রম্নতি দেন। পরে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে একে একে প্রত্যেককে পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান ডক্টর জাফর ইকবাল।

এর আগে ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে ডক্টর জাফর ইকবাল বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর এমন হামলার ঘটনা খুবই নিন্দনীয়। এখানে শিক্ষার্থীরা সবাই বাইরে থেকে শীতে কষ্ট করছে। শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ কিন্তু তাদের জন্য কোনো মেডিকেল টিম নেই।

যারা তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করত তাদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যা খুবই নিন্দনীয় একটি কাজ।

শিক্ষার্থীদের সব অভিযোগ ও দাবি শোনার পর জাফর ইকবাল বলেন, 'তোমরা আমাকে গণমাধ্যমের সামনে কথা দিয়েছ, এই অনশন ভাঙবে। তোমাদের জীবন অনেক মূল্যবান। একজন মানুষের জন্য তোমরা জীবন দিয়ে দিবা এটা মানা যায় না। সাবেক ৫ শিক্ষার্থীর বিষয়ে কথা হয়েছে। যেহেতু মামলা করা হয়ে গেছে, আদালতে তোলা হবে। তারা কথা দিয়েছেন ছাত্রদের জামিন দেওয়া হবে।'

প্রতিবাদে দিলেন আর্থিক সহায়তা

এ সময় আর্থিক সহায়তা প্রদান করায় সাবেক শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন ডক্টর জাফর ইকবাল। তিনি বলেন, 'তোমাদের সাহায্য করতে যদি অ্যারেস্ট হতে হয় তাহলে আমি হব। আমি তোমাদের এই ১০ হাজার টাকা দিলাম। এ টাকা দিয়ে তোমাদের তেমন কিছু হবে না জানি। কিন্তু আমি দেখতে চাই সিআইডি আমাকে অ্যারেস্ট করে কি না।'

শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন পুরো দেশে আলোড়ন তুলেছে উলেস্নখ করে জাফর ইকবাল বলেন, 'তোমরা ইতিহাস গড়েছ। তোমাদের মাধ্যমে যে বার্তা গিয়েছে, তাতে ভবিষ্যতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগের আগে একবার অন্তত ভাবা হবে। তোমাদের সঙ্গে দেশের সব তরুণ আছে।'

মেডিকেল টিম সরিয়ে দেওয়া চরম অমানবিকতা

তিনি আরও বলেন, 'আমি ধরে নিয়েছিলাম, অনশনের এখানে মেডিকেল টিম আছে। তারা সার্বক্ষণিক দেখভাল করছে। কিন্তু এখানে এসে দেখলাম, কোনো ডাক্তার নেই। ডাক্তাররা ছিলেন, কিন্তু তাদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে এখান থেকে সরিয়ে দিয়েছে। আমি এসব ঘটনা বলব। এখানে অনশনকারীদের অবস্থাই যখন এত খারাপ, তাহলে অসুস্থ ২০ জনের কী অবস্থা! আমি শঙ্কিত। এটা চরম অমানবিকতা।'

'তোমরা ইতোমধ্যে বিজয়ী হয়ে গেছো'

শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর পর বুধবার সকালে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'তোমরা কেন তোমাদের জীবন অপচয় করবে? তোমাদের বাঁচতে হবে। তোমরা ইতোমধ্যেই বিজয়ী হয়ে গেছ। সারাদেশের মানুষ তোমাদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে।'

'ভিসি ফরিদ উদ্দিন একটা দানব!'

বেলা সোয়া ১১টায় ডক্টর মুহম্মদ জাফর ইকবাল সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতে বলেন, 'ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ একটা দানব। শিক্ষার্থীদের এমন অবস্থা দেখেও যার মন গলে না, নিজের জায়গায় অনড় থাকেন; আমি তাকে অন্তত মানুষ বলতে পারি না, তিনি দানব।'

শিক্ষার্থীদের আশ্বাস

ডক্টর জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, 'সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল থেকে আমাদের নিশ্চিত করা হয়েছে, তোমাদের দাবি মানা হবে। দু'টি মামলাই ওঠানো হবে। আর সে কারণেই আমরা এসেছি। নিশ্চিত না হলেও আমরা আসতাম, কিন্তু তোমাদের অনশন ভাঙতে বলতে পারতাম না।'

আন্দোলনে সারা বাংলাদেশ নড়েছে

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ করে জাফর ইকবাল বলেন, 'তোমাদের আন্দোলনে ৩৪ জন ভিসির ঘুম নষ্ট হয়ে গেছে। এই ভিসি পদত্যাগ করলে তারাও পদত্যাগ করতে চেয়েছে। আমি ৩৪ জন ভিসির পদত্যাগ দেখতে চাই। তোমরা সারা বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে নাড়া দিয়েছ।'

উলেস্নখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা। এর জেরে পুলিশের লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডে শিক্ষার্থীসহ ক্যাম্পাসের অন্তত অর্ধশত লোকজন আহত হন। সে ঘটনায় পুলিশ 'গুলি বর্ষণ ও হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিটের অভিযোগ' এনে অজ্ঞাতপরিচয় ২০০ থেকে ৩০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে।

তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে উল্টো উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

একপর্যায়ে ১৯ জানুয়ারি বিকাল ৩টায় তারা অনশনে যান; ঘোষণা দেন উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার। শুরুতে মোট ২৪ শিক্ষার্থী অনশনে বসেন। এর মধ্যে নয়জন ছাত্রী এবং ১৫ জন ছাত্র। একজন অনশনকারীর বাবা গুরুতর অসুস্থ হলে তিনি প্রথম দিনই গ্রামের বাড়ি চলে যান। পরে তাদের সঙ্গে আরও পাঁচজন যুক্ত হন।

অনশন ভাঙলেও আন্দোলন চলবে

এদিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙার পর দুপুর ১টা থেকে ক্যাম্পাসে কমে গিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আনাগোনা।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ১০টা ২১ মিনিটে অনশনের পর দুপুর একটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ফাঁকা হতে থাকে। বিকাল ৩টায় আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের কোনো আনাগোনা বা কোনো কর্মসূচি দেখা যায়নি। ভিসির বাসভবনের সামনে অনশনকারীদের বিছানাপত্র গোছাতে দেখা যায় কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবীকে। পুরো ক্যাম্পাসে কয়েকজন সাংবাদিক, আর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কয়েকজন লোক রয়েছে।

ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থানরত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সবুর খান বলেন, 'রাতে কেউ ঘুমায়নি। শিক্ষার্থীরা সবাই ক্লান্ত, বিশ্রামে গিয়েছে। অনশন ভাঙলেও আন্দোলন চলবে। সন্ধ্যা ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে সবাই জড়ো হবে। সঙ্গে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।'

অনশন ভাঙার পর শিক্ষার্থীদের খবর জনতে চাইলে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থানরত আন্দোলনকারী সবুর খান ও আমিনা জানান, 'অনশনরত ছিল ২৮ জন। এর মধ্যে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাগিব রাবেয়া হাসপাতালে ২৪ জন গিয়েছে চিকিৎসা নিতে। আর বাকি ৪ জন বাড়িতে চলে গেছেন। ওরা বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নেবে।'

রাগিব রাবেয়া হাসপাতালে অবস্থানরত স্বেচ্ছাসেবক জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের শিক্ষার্থী আদিল বিকাল ৩টার দিকে বলেন, 'অনশনে যারা ছিল তাদের মধ্যে হাসপাতালে ৬ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আরও ২ থেকে ৩ জনকে ভর্তি করানো লাগতে পারে।'

তিনি বলেন, 'ভর্তি ৬ জনের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা গুরুতর। তাদের প্রচন্ড জ্বর, খিচুনি আছে। সন্ধ্যার সময়ে বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে নেবে। অনেকে সাময়িক চিকিৎসা করে বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা নেবে বা অন্য কোথাও গিয়ে।

ক্যাম্পাসে চালু হলো 'চাষাভুষা টং'

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যেই মঙ্গলবার থেকে ক্যাম্পাসের ফুডকোর্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই দিন রাত ৭টা থেকে 'চাষাভুষার টং' নামে এক ভ্রাম্যমাণ দোকান চালু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একাংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরের পাশে ফুডকোর্ট এলাকায় এ নতুন টং চালু করেন তারা।

এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন নাম না বলার শর্তে বলেন, আন্দোলন বন্ধে খাবারের দোকান ও ফুড কোর্ট বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। এ অবস্থায় শিক্ষার্থী এবং আন্দোলনের খবর সংগ্রহে আসা গণমাধ্যমকর্মীদের খাবার পেতে সমস্যা হচ্ছে। প্রতিবাদ হিসেবে ভ্রাম্যমাণ দোকানটি চালু করা হয়েছে।

'শাবিপ্রবির উপাচার্য মেরুদন্ডহীন'

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি)র উপাচার্য ফরিদ উদ্দীন আহমেদকে 'মেরুদন্ডহীন' বলে আখ্যা দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রভাষক হাসান তৌফিক ইমাম বলেছেন, 'পুলিশ রাখা হয় গুন্ডা পাহারা দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ থাকবে কেন? পুলিশ থাকা মানেই বুঝতে হবে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো মুক্তবুদ্ধির চর্চা নেই। শাবিপ্রবি উপাচার্যের মাথায় বিবেক নেই। তিনি মেরুদন্ডহীন। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান অধিকর্তা হওয়ার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন।'

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও তাদের দাবির সমর্থনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে 'বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের' ব্যানারে এ কর্মসূচি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে পালিত হয়।

সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাইদুল ইসলামের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গোলাম হোসেন হাবিব। তিনি বলেন, 'ভিসি ফরিদ সাহেবের পতন করা গেলেই এই আন্দোলন সফল হবে বলে আমি মনে করি না। কারণ এক ফরিদ গেলে আরেক ফরিদ আসবে। নজরটা দেওয়া প্রয়োজন ভিত্তিমূলে। না হলে এ রকম অনশন আমাদের করেই যেতে হবে।'

কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুবর্ণা মজুমদার, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রাজেশ্বর দাশগুপ্ত, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী গোরচাঁদ ঠাকুর, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মঞ্জুরুল হক, বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান ও সোহেল চাকমা।

শাহবাগে গণ-অবস্থান

শাবিপ্রবি উপাচার্য (ভিসি) ফরিদ উদ্দীন আহমেদের পদত্যাগ দাবিতে শাহবাগে গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে বামপন্থি ছাত্র সংগঠন, শিক্ষক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, অভিভাবকসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ।

বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত গণ-অবস্থান কর্মসূচি করেন তারা। এই কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিল আর্কিটেকচার সাস্ট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (আশা)।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্কসবাদী) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়দ্বীপ ভট্টাচার্য বলেন, 'এ আন্দোলনটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হল, শিক্ষক-ভিসি নিয়োগে যেসব অনিয়ম হয় সেগুলোকে সামনে নিয়ে এসেছে। আন্দোলনকে পন্ড করে দেওয়ার সরকারি চিরাচরিত কৌশলকে তারা ব্যর্থ করে দিয়েছে। তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়েই আমাদের এই অবস্থান।'

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, যদি ভিসি অপসারণ না হয়, আমরা লাগাতার বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে, হলে, ডাইনিংয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ চাই। শিক্ষাঙ্গনকে গণতান্ত্রিক করতে চাই। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আমরা বাঁচাতে চাই। সেক্ষেত্রে এই ধরনের একজন স্বৈরাচারী ভিসি ক্যাম্পাসে থাকেন, তাহলে কখনো বিশ্ববিদ্যালয় গণতান্ত্রিক হতে পারে না।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে