আজকের যায়যায়দিন

সরকারের উন্নয়নের সমালোচনাকারীদের সারাদেশ ঘুরে কথা বলার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেক কথা বলার পরও বলবেন, আমাদের কথা বলতে দেওয়া হয় না। টেলিভিশনের মাধ্যমে এখন সবাই কথা বলতে পারেন, টক শো করতে পারেন। যখন টক শোতে কথা বলেন কেউ তো আপনাদের মুখ চেপে ধরেনি বা গলাও চেপে ধরেনি। সবাই যার যার ইচ্ছে মতো বলতে পারেন।

সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে 'এসডিজি বাস্তবায়ন পর্যালোচনাবিষয়ক দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলন, ২০২২' অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।

ঢাকায় বসে অনেকেই সমালোচনা করেন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'তাদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, সারা বাংলাদেশটা আপনারা একটু ঘুরে দেখুন, তাহলে বুঝবেন পরিবর্তনটা কোথায় এসেছে, কতটুকু এসেছে। এ বিষয়ে গ্রাম পর্যায়ে একটু যোগাযোগ করলে সেটা জানতে পারবেন।'

শেখ হাসিনা বলেন, 'অনেকেই হয়তো এখন সমালোচনা করে বলেন, এটা করা হচ্ছে কেন? পরমাণুবিদু্যৎ কেন করা হলো? এত টাকা খরচ হয়েছে। খরচের দিকটা সবাই শুধু দেখেন। কিন্তু এই খরচের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জে কী লাভ হবে বা আমাদের অর্থনীতিতে এটা কতটা অবদান রাখবে, আমাদের উন্নয়ন কতটা গতিশীল হবে, মানুষের জীবনে কতটা পরিবর্তন আসবে, সেটা বোধহয় তারা বিবেচনা করেন না। এটা হচ্ছে খুব দুঃখজনক।'

হাসিনা-থাভিসিন বৈঠক / বাংলাদেশে চিকিৎসা খাতে থাই বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী

দেশের নৌপথে যোগাযোগ

ব্যবস্থার উন্নয়ন একান্তভাবে অপরিহার্য উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'নৌপথ যত বৃদ্ধি পাবে মানুষের পণ্য পরিবহণ তত বৃদ্ধি পাবে। মানুষের যাতায়াত? বৃদ্ধি পাবে, অর্থনীতি সচল হবে। একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করা সহজ হবে। যেটা আমাদের অর্থনীতিকে আরও সচল করবে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমাদের তৃণমূলের মানুষ সব থেকে বেশি লাভবান হবে। আমাদের দেশের কৃষক, শ্রমিক আর খেটে খাওয়া মানুষদের ভাগ্য পরিবর্তন করাই তো আমার লক্ষ্য। এসডিজিতে যে সমস্ত বিষয় আছে, যেগুলো আমাদের জন্য প্রযোজ্য, আমরা তা বাস্তবায়ন করেছি এবং বাস্তবায়ন করে যাব। এই সমস্ত প্রকল্পগুলো যখন সম্পন্ন হবে বা মানুষ যখন এর সুফল ভোগ করবে তখন এদেশের অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল হবে, সচল হবে, দারিদ্র্য বিমোচন হবে। আমরা দেশের মানুষের সার্বিক উন্নতি করতে পারব।'

শেখ হাসিনা বলেন, 'সরকারের পক্ষ হতে সময়োচিত প্রণোদনা প্যাকেজ ও যথাযথ নীতি সহায়তা দেওয়ার কারণে অর্থনীতি আবারও ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসছে। নির্দিষ্ট সময়ে এসডিজি'র পথ পরিক্রমা নিশ্চিত করা কঠিন, তবে আমি বিশ্বাস করি, সঠিক ও উদ্ভাবনী কর্মপরিকল্পনা এবং কার্যকর ব্যবস্থার মাধ্যমে লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।'

তিনি বলেন, 'আমি আশা করি, এ সম্মেলনের মাধ্যমে এসডিজি বাস্তবায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করার এবং বাস্তবায়ন সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানের পন্থা খুঁজে বের করতে সমর্থ হবে।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহ, এনজিও এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিরা সমানভাবে অংশীদার। এ সম্মেলনে সবার অংশগ্রহণ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।'

বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে বেসরকারি খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ঘরে ঘরে বিদু্যৎ পৌঁছে দিয়েছি। অবকাঠামো উন্নয়নে মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে বেসরকারি খাত আরও বেশি গতিশীল হবে। এ সম্মেলনে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ সম্মেলনের উদ্দেশ্য পূরণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশা করি। এসডিজি বাস্তবায়নে আমরা নীতি সহায়তা এবং অর্থের যোগান অব্যাহত রাখব। তবে অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার এবং অপচয় রোধ নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, 'আমরা সকলে মিলে একসঙ্গে কাজ করলে ২০৩০-এর আগেই আমরা নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন এবং ২০৪১ সালের পূর্বেই জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত এবং উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে সমর্থ হব।'