সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে ৬ বিয়ে হাতিয়েছেন কোটি টাকা :পুলিশ

যাযাদি ডেস্ক
  ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

মানব পাচার, ধর্ষণ ও প্রতারণার মামলায় আবুল কালাম আজাদ ওরফে শাহারিয়ার নাফিজ ইমন (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যিনি নিজেকে পরিচয় দিতেন সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে। ইমন চাকরি দেওয়ার নাম করে চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দিতে একের পর এক বিয়ে করেছেন। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিয়ের পর হাতিয়ে নিয়েছেন টাকা। তিনি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার বড় দুধপাতিলা গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য

জানান রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ।

পুলিশ সুপার বলেন, রাজবাড়ীর পাংশা থানা-পুলিশ ওর্ যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে আবুল কালাম আজাদকে গ্রেপ্তার করে। ইমন ৬টি বিয়ে করে মোট ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন- এমনটাই দাবি রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদের।

তিনি আরও বলেন, 'আমরা তার (আবুল কালাম আজাদ) মোট ছয়টি বিয়ের বিস্তারিত তথ্য পেয়েছি। তবে এলাকাবাসীর ধারণা, তিনি ২০টির বেশি বিয়ে করেছেন। ৬টি বিয়ের মাধ্যমে তিনি এক কোটি ৬৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এর সঙ্গে একটি বড় চক্র আছে। আমরা পুরো চক্রটিকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।'

সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, আবুল কালাম আজাদ ওরফে শাহরিয়ার নাফিজ ইমন ওরফে বুলবুল নিজেকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের অডিট অফিসার হিসেবে পরিচয় দিতেন। এই পরিচয়ে তিনি রাজবাড়ীর পাংশার এক কলেজ শিক্ষার্থীর সঙ্গে বন্ধুত্ব করেন। গত ৭ মার্চ তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর শ্যালকের চাকরি দেওয়ার কথা বলে তিনি ৮ লাখ টাকা নেন। ২৭ আগস্ট কলেজছাত্রী বউকে বিক্রির চেষ্টা করেন। তরুণী সেটি বুঝতে পেরে সেখান থেকে পালিয়ে যান। পরে ১৮ সেপ্টেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে পাংশা থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় তাকে নাটোর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আবুল কালাম আজাদ ওরফে শাহরিয়ার নাফিজ ইমন ওরফে বুলবুল সাংবাদিকদের সামনে দাবি করেন, তিনি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হাউলি ইউনিয়নের স্বাস্থ্য পরিদর্শক ছিলেন। তার পোস্টিং চুয়াডাঙ্গায় হলেও তিনি প্রেষণে ঢাকায় স্বাস্থ্যের প্রধান কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করতেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি নিয়োগে তিনি চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এক সহকারী সচিবকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা দেন। ঘুষ আদান-প্রদানের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে তিনি ৯ লাখ টাকা কমিশন পান। এই নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে জাতীয় একটি দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হয়। সবাই তার কাছে টাকা ফেরত চান। তিনি সেই টাকা পরিশোধের জন্য বিয়ে করেন। বিয়ের পর সেই পরিবারের সদস্য ও পরিচিতদের চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নেন। একপর্যায়ে সটকে পড়েন। আবার বিয়ে করে একই কায়দায় টাকা হাতিয়ে নেন। এখন পর্যন্ত তিনি ছয়টি বিয়ে করেছেন বলে দাবি করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. রেজাউল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্‌) মুকিত সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইফতেখারুজ্জামান, সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) সুমন কুমার সাহা, ডিআইও-১ বিপস্নব দত্ত চৌধুরীসহ জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে