শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কাঁচাবাজারের দখলে শ্রীপুরের মহাসড়ক

আলফাজ সরকার আকাশ, শ্রীপুর (গাজীপুর)
  ২৬ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার এমসি, নয়নপুর ও জৈনা এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চারলেনের দুই পাশই থাকে কাঁচাবাজারের দখলে। এসব স্থানে নিয়মিত বাজার বসায় অরক্ষিত মহাসড়কে যানচলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। একই সঙ্গে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

জানা যায়, ২০১৬ সালে জয়দেবপুর থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার সড়ক চারলেনে উন্নীত করা হয়। কিন্তু মহাসড়কের নির্দিষ্ট স্থান পর্যন্ত স্থায়ী-অস্থায়ী স্থাপনা বা বাজার বসা সম্পূর্ণ অবৈধ হলেও সড়কঘেঁষে ও জনপথ বিভাগের জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে ইজারা দিয়ে বাজার বসাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন।

সরেজমিনে বাজারের বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়, জৈনা বাজারের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে দুপুরের পর থেকেই বাজার বসে। সেখানে মাছ, তরিতরকারি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল নিয়ে বসে দোকানদাররা। বাজারের কারণে সড়কে যান চলাচলের জায়গা সংকুচিত হয়ে যায়। ফলে যানবাহনগুলোকে চলতে হয় অতিরিক্ত সতর্কতা মেনে। এ কারণে ব্যস্ত মহাসড়কটির এ স্থানে যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে হয় দূরপালস্নার গাড়িগুলোকে। পাশাপাশি কাঁচাবাজারের ক্রেতা-বিক্রেতারাও থাকে দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে। সম্প্রতি এ স্থানগুলোতে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনার ঘটনাও ঘটেছে। এসব বাজারের ইজারাদারদের ভাষ্য, স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে এসব বাজারের অনুমতি পেয়েছেন তারা। বিপুল পরিমাণ রাজস্ব দিয়ে তাদের বাজার পরিচালনা করতে হয়।

এমসি বাজার অংশের ইজারাদার শফিক মোড়ল বলেন, প্রায় অর্ধ কোটি টাকা দিয়ে বাজার ইজারা নিয়েছেন। সঙ্গে উপরিও গুনতে হয়েছে আরও কয়েক লাখ। প্রশাসন যেভাবে ইজারা দেয়, তারা সেভাবেই নেন।

জৈনাবাজার অংশের ইজারাদার সাহাব উদ্দিন বলেন, সব মিলিয়ে প্রায় ৭০ লাখ টাকায় বাজার ইজারা নিয়ে করোনায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখানে বাজারের জন্য নির্দিষ্ট কোনো জায়গা নেই। প্রশাসন যেখানে ইজারা দেয় তারা সেখানেই বসতে রাজি আছেন।

মাওনা হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এআরএম আল মামুন জানান, মহাসড়কের নিরাপত্তার স্বার্থে সেখান থেকে বাজার সরিয়ে দিতে তারা প্রতি সপ্তাহেই সতর্ক করার পাশাপাশি অভিযান পরিচালনা করছেন। অভিযান এখনো অব্যাহত আছে। গাজীপুর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইফুদ্দিন মুঠোফোনে জানান, এসব স্থানে বাজার বসানোর অনুমতি দেওয়ার কোনো সুযোগ তাদের হাতে নেই। বিধি অনুযায়ী মহাসড়কের পাশে ১০ মিটার জায়গা সম্পূর্ণ খালি রাখতে হবে। এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা ফলক তারা মহাসড়কজুড়েই স্থাপন করেছেন। অথচ সেখানে প্রতিদিনই বাজার বসে। উপজেলা প্রশাসন থেকে ইজারা নিয়ে বাজারগুলো বসানো হয় বলে তিনি শুনেছেন। এসব বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়েও অনেকবার বলেছেন। এবার তারা তালিকা করে উচ্ছেদের পরিকল্পনা করছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাসলিমা মোস্তারীর দাবি, অতীতের ধারাবাহিতায় বাজারগুলো ইজারা দেওয়া হচ্ছে। তবে সড়কের পাশে বাজারের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস. এম তরিকুল ইসলাম যায়যায়দিনকে জানান, মহাসড়কের ওপর বাজার বসানো বা ইজারা দেওয়ার কোনো এখতিয়ার প্রশাসনের নেই। সব অরক্ষিত বাজারের তালিকা করে শিগগিরই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে