শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বাজার মূল্য বেশি থাকায় সরকারি গুদামে ধান দিচ্ছে না কৃষক

জামালগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ১৪ জুন ২০২১, ০০:০০

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় সরকারি খাদ্য গুদামে ধান চাল সংগ্রহে ভাটা পড়েছে। সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় গুদামে ধান দিতে অনীহা প্রকাশ করছে কৃষকরা। অপরদিকে ধান বিক্রির টাকা উত্তোলনে বিলম্ব ও ভোগান্তির কারণে কৃষকরা খাদ্য গুদামের প্রতি আগ্রহ হারিয়েছেন। এর কারণে সরকারি ধান চাল সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

জামালগঞ্জ খাদ্য গুদাম সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় ৩ হাজার ২৯৭ মেট্রিক টন বোরো ধান, ৪৪১ মেট্রিক আতব চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৭ টাকা কেজি দরে ধান ও ৩৯ টাকা কেজি দরে মিল মালিকদের আতব চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রায় গত মে মাসের ৫ তারিখ থেকে ধান-চাল সংগ্রহ শুরু হয়েছে। আগামী ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ধান-চাল সংগ্রহ চলবে। তবে সংগ্রহের ১ মাস ৮ দিন অতিবাহিত হলেও ৭২ শতাংশ ধান কিনতে পারেনি খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ। খোলা বাজারে ধানের দাম ভালো পাওয়া এবং খাদ্য গুদামে বিক্রিত ধানের টাকা তুলতে ভোগান্তির কারণে কৃষকরা এ বছর ধান দিচ্ছে না খাদ্য গুদামে। এর কারণে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত একমাস ৮ দিনে মাত্র ৯২৪ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে।

উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করলে টাকা তুলতে বিভিন্ন অফিসে ঘুরতে হয়। এতে টাকা হাতে পেতে অনেক সময় লাগে। কিন্তু তাৎক্ষণিক টাকার প্রয়োজনে ধান বিক্রি করেন। এ ছাড়া ধানের দাম এমনিতে বাজারে ভালো। খাদ্য গুদামে ধান দিতে যাতায়াত ও শ্রমিক খরচ দিয়ে যে মূল্য পাওয়া যায় তার চেয়ে বেশি মূল্য ঘরে বসেই পাওয়া যায়। তাই খাদ্য গুদামে ধান দেওয়ার আগ্রহ নেই।

উপজেলার মিল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল মুকিত চৌধুরী বলেন, এ বছর ৩৭টি মিল মালিকের সঙ্গে ৩৯ টাকা কেজি দরে ৬৪১ মেট্রিক টন আতব চাল খাদ্য গুদামে সংগ্রহের জন্য চুক্তি করা হয়েছে। কিন্তু গুদামে বিক্রির উপযোগী চাল প্রস্তুত করতে প্রতি কেজিতে ব্যয় হয়েছে ৪০ টাকা। এতে প্রতি কেজিতে ১ টাকা মিল মালিকদের ক্ষতি হচ্ছে। অথচ এই চাল বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৩ টাকা কেজি দরে। এ অবস্থায় খাদ্য গুদামে চাল সংগ্রহ করতে ক্ষতি হচ্ছে জেনেও চুক্তি থাকার কারণে চাল সরবরাহ করতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহাব উদ্দিন বলেন, খোলাবাজারে দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকরা ধান দিতে আগ্রহ হারিয়েছে। যার কারণে ৩০ মে থেকে ধান সরবরাহ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে