আজকের যায়যায়দিন

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, নির্বাচনের আগে বিএনপি, জামায়াত যেটা খুব ভালো পারে সেটা হচ্ছে ষড়যন্ত্র। তারা কিন্তু ষড়যন্ত্র করছে। যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা না থাকে, আমরা না থাকি, আপনাদের বলতে পারি আওয়ামী লীগের তৃণমূলও রক্ষা পাবে না। সেইজন্য আপনাদের বলছি ঐক্যবদ্ধ থাকুন। আমরা সবাই এক পরিবারের সদস্য। আমাদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি থাকতে পারে। কিন্তু কেউ আমরা এই পরিবারের বাইরে নই। তাদের ষড়যন্ত্রের কথা মনে রেখে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে শক্তিশালী হতে হবে। আমি আশা করি আপনারা তা করবেন।

শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, 'বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলাম চেয়েছিল বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসাবে পরিচিত করতে। তাদের লজ্জা হয় না, যখন এদেশের জনগণের সম্পদ এরশাদ সাহেব এক টাকার বিনিময়ে খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টে ৬৩ বিঘা জমি দিয়েছিলেন, গুলশানে দিয়ে দিলেন একটি অট্টালিকা। তারা বাংলাদেশকে লুট করে নিজেদের আখের গুছিয়েছেন।'

তিনি বলেন, 'পাকিস্তানও কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারে নাই। বঙ্গবন্ধুকে, জাতির পিতাকে কিছু ষড়যন্ত্রকারী, কিছু বেঈমান, কিছু কুলাঙ্গার, কিছু নাফরমান হত্যা করেছে। জাতির পিতাকে হত্যা করার পর আপনাদের মতো আওয়ামী লীগের তৃণমূলের কারনে আওয়ামী লীগ টিকে গেছে। আপনাদের শক্তির কারণেই আপনাদের নেতৃত্ব দিতেই কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন। শেখ হাসিনা দেশকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে সৃষ্টি করেছেন। যখন বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাংক টাকা দেয় নাই পদ্মা সেতু বানানোর জন্য, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেছেন- বাংলাদেশের জনগণের টাকায় এই পদ্মা সেতু বানাবেন, তিনি বানিয়েছেন।'

দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়ছে শাল-গজারির সবুজ বন

আনিসুল হক বলেন, 'শেখ হাসিনা কথা রেখেছেন, করোনা মহামারির সময়ে ভ্যাক্সিন আবিষ্কার হওয়ার প্রথমেই বাংলাদেশের জনগণের জন্য বিনা পয়সায় টিকা দিয়েছেন।'

গোপীনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কাদির ভূইয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ও গোপীনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান ভুইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদুল কাওসার ভূইয়া, কসবা পৌরসভার মেয়র মো. গোলাম হাক্কানী, কসবা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. আজহারুল ইসলাম, মো, আনিছুল হক ভূইয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এমএ আজিজ, কসবা পৌরসভার সাবেক মেয়র এমরান উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম, কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আফজাল হোসেন।

এ সময় বক্তব্য রাখেন ওর্য়াড আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউপি সদস্য মো. ফরিদ মিয়া. আওয়ামী লীগ নেতা জলিল সরকার, গোলাম মোস্তফা লিটন, আবুল কালাম আজাদ, সৈয়দ মাহবুব হাসান রুবেল, আবু আক্কাছ প্রমুখ।

যারা সংবিধান মানে না তারা নিজেদের

দেশের নাগরিক বলা সঠিক না

এর আগে তিনি ঢাকা থেকে আন্তঃনগর মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনে এ দিন সকাল সাড়ে ১০টায় আখাউড়া এসে পৌঁছান। এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক, পৌর তাকজিল খলিফা কাজলসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলালীগসহ সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুযায়ীই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা বাংলাদেশের সংবিধান মেনে চলি। তার কারণ হলো- ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরকে এই সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন। আমরা সেই সংবিধান মেনেই নির্বাচন করব। যারা এই সংবিধান মানে না, তারা নিজেদেরকে বাংলাদেশের নাগরিক বলাটা সঠিক হবে না।'

উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'জননেত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে এ দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আমরা তার সেই নির্দেশনা মেনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যেই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করব।'