সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

সখীপুরে ঘর পেয়ে উচ্ছ্বাস কমছে না গৃহহীনদের

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
  ৩০ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

অন্য মানুষের বাড়িতে সারা দিন কাজ শেষে এখন আর অন্যের বাড়ি পাহারা দিতে হয় না। আজীবনের জন্য দীর্ঘ ৩০ বছর পর নিজের নামে পেলেন জমির দলিল ও ঘরের কাগজ। তাই উচ্ছ্বাস যেন কমছে না আশ্রয়প্রাপ্তদের। এদের একজন লাল বানু। বাড়ি উপজেলার কালিদাস গ্রামে। নতুন পাওয়া ঘরের চারপাশ ঘুরে আঙুল উঁচিয়ে দেখিয়ে বললেন, আধাপাকা ঘরটি তার খুব পছন্দ হয়েছে। থাকার কক্ষের সঙ্গে রান্নাঘর। পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থাও ভালো। বিদু্যৎ আছে, পানি আছে। বেড়বাড়ি কলাবাগান আশ্রয়ণ প্রকল্পে খুব ভালোভাবে রয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী সারা দেশের মতো সখীপুরেও আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ভূমি ও গৃহহীন পরিবারদের মধ্যে নতুন ঘর উপহার দেওয়া হচ্ছে। সখীপুরে মোট ২০০ ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেওয়া হয়েছে। নতুন ঘর পাওয়া এই ভূমি ও গৃহহীন মানুষগুলোর চোখেমুখে এখন সীমাহীন স্বপ্ন।

বাড়ি পাওয়ার আনন্দে বেড়বাড়ি গ্রামের ভূমিহীন লাইলী বেগমের চোখেও ভেসে আসছে আনন্দ অশ্রম্নর বান। ঘর পেয়ে কেমন লাগছে, জিজ্ঞেস করায় তিনি বলেন, 'আমি ছেলে, নাতি ও বোনকে নিয়ে মানুষের জায়গায় কুঁড়েঘর তুলে থাকি। স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারিনি যে, আমি জমিসহ ইটের একখানা নতুন ঘর পাব। শেখ হাসিনার সরকার আমাকে ইটের ঘর দেবেন। এ বয়সে ইটের ঘরে থাকতে পারব। আমি ভীষণ খুশি হয়েছি ঘর পেয়ে। দোয়া করি শেখ মুজিবের বেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য।'

আকলিমা নামের আমতৈল আশ্রয়ণ প্রকল্পের এক উপকারভোগী বলেন, 'আমার জায়গা-জমি ছিল না। শেখ হাসিনা ঘর দিছে, জমি দিছে। স্বামী-সন্তান নিয়্যা সুখে আছি। মনে হচ্ছে আমি যেন 'মা' শেখ হাসিনার বুকে রয়েছি।'

লালু মিয়া উচ্ছ্বাস ভরা কণ্ঠে বলেন, 'এত দিন খুব কষ্ট করেছিলাম। আজ আমরা ঘর পেয়েছি, বিদু্যৎ পেয়েছি, পাকা রাস্তা সবই আমাদের আছে। আমরা খুব খুশি।'

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার চৌধুরী জানান, সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি ঘরের জন্য ২ শতাংশ খাসজমির বন্দোবস্তসহ দুই কক্ষের সেমিপাকা ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এসব ঘরের প্রতিটিতে একটি রান্না ঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা রয়েছে। ঘরগুলোর পাশেই সবজি বাগান হচ্ছে।

উপজেলায় ২০০ পরিবারকে জমি ও ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বহেড়াতৈল ইউনিয়নের আমতৈল ২৭, যাদবপুর কলাবাগান ২৯, হাতিবান্ধা ইউনিয়নের কামালিয়া চালা ১৯, জামলহাটখুরা ১২, কুতুবপুর ৬, বড় মৌশা ১২ এবং একক ঘর ৯৩। প্রতিটি ঘরে প্রথমে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। পরে ১ লাখ ৯০ হাজার, পরে ২ লাখ ৪০ হাজার, ২ লাখ ৫৯ হাজার ৫০০। বর্তমানে প্রতিটি ঘরের নির্মাণ বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আলম বলেন, ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য চমৎকার পরিবেশে মানসম্মত টেকসই ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। এসব ঘরে আশ্রয় পাওয়াদের অধিকাংশই রাস্তার ধারে ফুটপাত বা কারও আশ্রয়ে বসবাস করতেন। এখন তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে