সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

আশাশুনিতে ২৫ বছরেও নির্মাণ হয়নি ৬৫০ মিটার বেড়িবাঁধ

পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির অভিযোগ
আশাশুনি (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি
  ০১ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
সাতক্ষীরার আশাশুনি সদরের দয়ারঘাট এলাকার খোলপেটুয়া নদীর তীর -যাযাদি

সাতক্ষীরায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতিতে দীর্ঘ ২৫ বছরেও নির্মাণ হয়ানি আশাশুনি সদরের দয়ারঘাট এলাকার ৬৫০ মিটার বেড়িবাঁধ। খোলপেটুয়া নদীর জোয়ারের পানি আটকানো হচ্ছে মৎস্য ঘেরের সরু রিং বাঁধ দিয়ে।

১৯৯৫ সালে বলাবাড়িয়া ও দয়ারঘাট গ্রামের মাঝামাঝি ৬ ব্যান্ড স্স্নুইচগেট সংলগ্ন এলাকায় স্রোতস্বিনী খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে উপজেলা সদরসহ পার্শ্ববর্তী শ্রীউলা ইউনিয়নসহ কয়েকটি ইউনিয়ন পস্নাবিত হয়ে ভেসে যায় বসতবাড়িসহ শত শত মৎস্য ঘের। সে সময় জোয়ার ভাটার কারণে স্স্নইচগেট সংলগ্ন এলাকায় গভীর খালের সৃষ্টি হয়। এরপর এলাকাবাসীর প্রচেষ্টায় প্রায় ২ হাজার বিঘা জমি ঘুরে রিং বাঁধের মাধ্যমে জোয়ারের পানি আটকে দেওয়া হয়।

প্রায় ১০ বছর পর ২০০৫ সালে মূল বাঁধ থেকে সরে চুক্তির ভিত্তিতে ক্লোজার চাপান দিয়ে ওই ২ হাজার বিঘাতে মৎস্য চাষ শুরু করেন খুলনার জনৈক ব্যবসায়ী আব্দুল হাই বাহার। তৎকালীন তার মৎস্য ঘেরের বাঁধটিই অদ্যাবধি ওয়াপদা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে

এরপর সেই ক্ষত কাটিয়ে ওঠার আগে আবারও ২০২০ সালে আম্পানে উক্ত এলাকায় রিং বাঁধের ৪টি পয়েন্টে ভেঙে জোয়ারের পানিতে ভেসে যায়। এতে বসতবাড়িসহ শতাধিক মৎস্য ঘের পস্নাবিত হয়। এরপরও টনক নড়েনি পাউবো কর্তৃপক্ষের।

স্থানীয়রা জানান, আশাশুনি উপজেলা সদর থেকে মাত্র দেড় কি.মি. দূরে দয়ারঘাট গ্রামের নিমাই মন্ডলের বাড়ি থেকে বলাবাড়িয়া গ্রামের সুনীল মন্ডলের বাড়ি পর্যন্ত ৬৫০ মিটার খোলপেটুয়া নদীর কোনো বেড়িবাঁধ নেই। সেখানে রিং বাঁধের ওপর ভর করে রয়েছে স্রোতস্বিনী খোলপেটুয়া নদী। গত আম্পানের জলোচ্ছ্বাসে সেই নিচু রিং বাঁধ ছাপিয়ে ও ভেঙে হু হু করে জোয়ারের পানি ভেতরে ঢুকে শত শত মৎস্যঘের তলিয়ে যায়। ৬৫০ মিটারের মধ্যে আরও চার জায়গায় ভেঙে জোয়ার ভাটা চলতে থাকে। এক মাস ধরে বলাবাড়িয়া থেকে আশাশুনি সদরে যাতায়াত দূরুহ হয়ে পড়ে। কোনো রেড়িবাঁধ না থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল, রোগীসহ নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের যাতায়াতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। স্কুল শিক্ষক বিকাশ মন্ডল বলেন, এখানে ৬৫০ মিটার মৎস্যঘেরের বাঁধের রাস্তা স্থানীয় জনগণের ব্যক্তিগত জমির ওপর দিয়ে হওয়ায় ১৯৯৫ সাল থেকে অদ্যাবধি বলাবাড়িয়া গ্রামে যাতায়াতের জন্য কোনো সরকারি রাস্তা নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।'

আশাশুনি সদর ইউপি চেয়ারম্যান এসএম হোসেনুজ্জামান বলেন, 'জমি জটিলতার কারণে ২৭ বছরে রেড়িবাঁধ নির্মাণ সম্ভব হয়নি। এলাকাবাসীর প্রাণের দাবির কারণে স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. আফম রুহুল হকের তৎপরতায় গত কিছুদিন আগে জাইকা দয়ারঘাট বলাবাড়িয়া এলাকায় নির্দিষ্ট সীমানায় ৫৫০ মিটার স্থায়ী বেড়িবাঁধে মাপজরিপ সম্পূর্ণ করেছেন। আগামী বছরের মধ্যে টেন্ডার হবে বলে আশা করছি।'

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বহী প্রকৌশলী আেশিকুর রহমান বলেন, 'দয়ারঘাট থেকে বলাবাড়িয়া বেড়িবাঁধের বিষয়টি মাত্র জানলাম, সরেজমিন গিয়ে পরিদর্শন করতে হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে