সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

বৃদ্ধা ছবিরার মাথা গোঁজার ঠাঁই যেন 'আসমানি'দের ঘর ভেঙে নতুন ঘর দিচ্ছেন ইউএনও

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি
  ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
বৃদ্ধা ছবিরার মাথা গোঁজার ঠাঁই যেন 'আসমানি'দের ঘর ভেঙে নতুন ঘর দিচ্ছেন ইউএনও

কবিতায় পড়া সেই 'আসমানি'র ঘরখানিই যেন অশীতিপর বৃদ্ধা ছবিরা বেগমের ঘর। ঘূর্ণিঝড়প্রবণ এ মৌসুমে একটু ঝোড়ো বাতাসেই হুড়মুড় করে ছবিরা বেগমের ওপরেই সেই ঘর ভেঙে পড়ার শঙ্কা ছিল। কিন্তু ফেসবুকের কল্যাণে সেই ঘরের কথা জেনে ছুটে গেলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তার পাশাপাশি নতুন ঘরও বানিয়ে দিচ্ছেন। এ ঘটনা যশোরের অভয়নগর উপজেলার। মানবিক ইউএনও কে এম আবু নওশাদের এমন উদ্যোগে সাধুবাদ জানাচ্ছেন সবাই।

জানা যায়, যশোরের অভয়নগরে স্বামী ও সন্তানহারা অসহায় বৃদ্ধা ছবিরা বেগম (৭৫)। উপজেলার সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের সিদ্ধিপাশা গ্রামে পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত একখন্ড জমিতে পলিথিন দিয়ে তৈরি ঝুপড়ি ঘর বানিয়ে বসবাস করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন।

স্বামী সগির সরদারের মৃতু্যর পর ছোট ছেলে মারা যায়। একমাত্র বড় ছেলে দিনমজুরের কাজ করে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে অন্যত্র বসবাস করেন। একাকি পলিথিনের ঝুপড়ি ঘরে অমানবিক জীবনযাপন করে যেন মৃতু্যর প্রহর গুনছিলেন ছবিরা বেগম।

তার এই অমানবিক জীবনযাপনের চিত্র নিজের ফেসবুকে তুলে ধরেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুনীল দাস। সেই পোস্টটি নজরে আসে অভয়নগর ইউএনও কে এম আবু নওশাদের। গত রোববার ছুটির দিনে কিছু খাদ্যসামগ্রী নিয়ে ছবিরা বেগমকে দেখতে ও সহযোগিতা করতে ছুটে যান তিনি।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুনীল দাস বলেন, 'সিদ্ধিপাশা গ্রামে গিয়ে বৃদ্ধা ছবিরা বেগমের অমানবিক জীবনযাপন দেখে খুবই কষ্ট পেয়েছিলাম। তার স্বামী ও ছোট ছেলের মৃতু্যর পর একমাত্র বড় ছেলে তাকে ফেলে অন্যত্র চলে গেছে। এলাকাবাসী খাবার দিলে খেতে পান, অন্যথায় না খেয়ে দিন কাটাতে হতো তাকে। বৃদ্ধার অমানবিক জীবনযাপনের চিত্র তুলে ধরে ফেসবুকে একটি পোস্ট করি। এরপর ইউএনও আমার সঙ্গে কথা বলে বৃদ্ধার ঠিকানা নেন।'

এ ব্যাপারে অভয়নগর ইউএনও কে এম আবু নওশাদ বলেন, 'ফেসবুকে পোস্ট দেখে বৃদ্ধা ছবিরা বেগমের কাছে যাই। তার সঙ্গে কথা বলে সাহস জুগিয়ে কিছু খাদ্যসামগ্রী, চিকিৎসা ও ওষুধের ব্যবস্থা করি। তার পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত জমিতে থাকা পলেথিনের ঝুপড়ি ঘর ভেঙে নতুন ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করি। আশা করি ঈদের আগেই ঘর নির্মাণ হবে। এছাড়া ছবিরা বেগমের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখার জন্য স্থানীয় ইউপি মেম্বারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে