সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
৮শ' মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

মিরসরাইয়ে শখের বাগানে বাণিজ্যিকভাবে আম চাষ

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
  ২০ জুন ২০২৪, ০০:০০
মিরসরাইয়ে শখের বাগানে বাণিজ্যিকভাবে আম চাষ
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলছে আম - যাযাদি

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের অলিনগর গ্রামে ২০১৬ সালে শখের বশে ২২ একর জায়গায় বিভিন্ন প্রজাতির ১৪শ' আমগাছ রোপণ করেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী মঈন উদ্দিন। তিনি পরিবার নিয়ে দেশের বাইরে থাকলেও নাড়ির টানে নিজ এলাকা মিরসরাইয়ের করেরহাট ইউনিয়নের অলিনগর গ্রামের বিস্তীর্ণ পাহাড়ে প্রায় ৩১ একর জায়গাজুড়ে গড়ে তুলেছেন একটি সমন্বিত খামার। এখন সেই খামারকে পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তুলেছেন তিনি। নাম দিয়েছেন মধুরিমা রিসোর্ট অ্যান্ড হিলসডেল মালটিফার্ম। সেখানে রয়েছে ডেইরি ফার্ম, হরিণের খামার, ময়ূর, ইমু পাখি, দেশি-বিদেশি হাঁস-মুরগি, নানা জাতের ফলজ বনজ ও ওষুধি বৃক্ষ।

হিলসডেল মালটিফার্মের অভ্যন্তরে প্রায় ২২ একর জমিতে ২০১৬ সালে শখের বশে তিনি আম বাগান গড়ে তুললেও বর্তমানে সেটি ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার লাগানো হাঁড়িভাঙা, আম্রপালি, গোরমতি, ব্যানানা, মিয়াজাকি, হিমসাগর, মলিস্নকা, ল্যাংড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে আম।

1

করেরহাটের অলিনগরের হিলসডেল মালটিফার্ম সূত্রে জানা গেছে, হাঁড়িভাঙা আম হার্বেস্টিং শুরু হয়েছে এবং জুনের ১৫ তারিখের পর আম্রপালি হার্বেস্টিং শুরু হয়েছে। গুঁটি জাতের আম হার্বেস্টিং বাজারজাত শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ২০ মণ আম বিক্রি হয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। প্রায় ৮শ গাছে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৮শ মণ। যার বাজারমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪-১৫ লাখ টাকা। উৎপাদিত এসব আম যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিলস্না, ফেনীসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, হিলসডেল মালটিফার্মে আম বাগানের পাশাপাশি রয়েছে পর্যটন ব্যবস্থা। এ মালটিফার্মের আরেক নাম মধুরিমা রিসোর্ট। আমগাছগুলোতে থোকায় থোকায় ঝুলে থাকা পাকা আমের গন্ধে ম ম করছে সমগ্র বাগান। আমের ভারে নুয়ে পড়েছে গাছের ডাল। বাগানে সারি সারি আমগাছের তলায় বেঞ্চে বসে পর্যটকদের আম খাওয়ার দৃশ্য চোখে পড়ে।

হিলসডেলের ম্যানেজার আশরাফুল ইসলাম বলেন, এ ফার্মে জৈব উপায়ে আম উৎপাদন করা হয়। ইতোমধ্যে গুঁটি ও হাঁড়িভাঙা জাতের আম বাজারজাত করছি। আম্রপালি কিছুদিনের মধ্যেই পাকতে শুরু করবে। বিগত বছরের তুলনায় শতকরা ২০ ভাগ ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে।

উদ্যোক্তা প্রবাসী মঈন উদ্দিন জানান, প্রায় ১০ বছর আগে শখের বশে আমগাছগুলো লাগিয়েছিলাম। কখনো ভাবিনি এটি বাণিজ্যিক কেন্দ্রবিন্দু হয়ে গড়ে উঠবে। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। ৮শ গাছে সাড়ে ৭শ থেকে ৮শ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ১৪-১৫ লাখ টাকা। তিনি আরও বলেন, আমি প্রবাসে থাকলেও আমার মন পড়ে থাকে এই খামারে। ছুটি পেলেই আমি খামারে চলে আসি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, 'মিরসরাইয়ে বাণিজ্যিকভাবে ১৮০ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। এই বছর ১ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হবে। যার বাজারমূল্য প্রায় ১২ কোটি টাকা। এ বছর করেরহাটের হিলসডেল মালটিফার্মে আমের ভালো ফলন হয়েছে। আমরা আশা করছি তিনি লাভবান হবেন।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে