বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিজয়ী জাতি কেন মাথা নিচু করে চলব :প্রধানমন্ত্রী

এবার স্বাধীনতা পুরস্কার পেলেন ৮ ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠান
যাযাদি রিপোর্ট
  ৩০ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০
বৃহস্পতিবার ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ৮ ব্যক্তি ও ১টি প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২০ তুলে দেন -পিবিএ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নস্যাৎ করা হয়। যে ৭ মার্চের ভাষণ দেশের মানুষকে উজ্জীবিত করেছিল সেই ভাষণ নিষিদ্ধ হয়। ইতিহাস থেকে জাতির পিতার নামটা পর্যন্ত মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে বাংলাদেশের ইতিহাস মানুষের সামনে তুলে ধরে।

বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২০ বিতরণ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পুরস্কারজয়ী ও তাদের প্রতিনিধিদের হাতে পদক তুলে দেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

মহামারির কারণে এবার স্বাধীনতা পুরস্কার বিতরণী বিলম্বিত হওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মার্চে করোনাভাইরাস সারা বিশ্বে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষ ইতোমধ্যে মারা গেছে। সে কারণে আমরা ২৫ মার্চে অনুষ্ঠানটি করতে পারিনি। তারপর আমি চিন্তা করলাম যে যেহেতু স্বাধীনতা পুরস্কার, এটা যেভাবেই হোক সকলের হাতে তুলে দেওয়া আমাদের কর্তব্য। সে কারণে এই ব্যবস্থাটা আমাদের নিতে হলো। এটুকু আমরা যে দিতে পারলাম, এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা।

স্বাধীন জাতি হেসেবে মর্যাদা নিয়ে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা সকলে আপনাদের স্ব-স্ব ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে যাচ্ছেন। আমাদের চিকিৎসা সেবায় বলেন, শিক্ষায় বলেন, সংস্কৃতিতে বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রেই আপনাদের অবদান রয়েছে। কাজেই আমি আপনাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। আমরা যেন স্বাধীন জাতি হিসেবে মর্যাদা নিয়ে চলতে পারি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি। বিজয়ী জাতি কেন অন্যের কাছে হাত পেতে চলব, মাথা নিচু করে চলব? বিজয়ী জাতি সারাবিশ্বে বিজয়ীর বেশেই চলবে। পঁচাত্তরের পর আমরা সেই সম্ভাবনা এবং অধিকার হারিয়েছিলাম। কিন্তু সেটা আবার পুনরুদ্ধার করে জাতির পিতার যে স্বপ্ন এবং যে চেতনায় লাখো শহীদ বুকের তাজা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনে দিয়ে গেছে; তাদের ও লাখো মা-বোনের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেই আমরা এই বাংলাদেশকে আবার গড়ে তুলতে চাইছি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা হিসেবে।

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রয়াত কমান্ডার আবদুর রউফ ও শহীদ বুদ্ধিজীবী মুহম্মদ আনোয়ার পাশাসহ নয়জন ব্যক্তি এবং ভারতেশ্বরী হোমসকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে এবং জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল অবদানের জন্য এবারের স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হলো। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন রাষ্ট্রের এই সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার দেওয়ার কথা থাকলেও মহামারিজনিত কারণে ৭ মাস পর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

কমান্ডার (অব.) আবদুর রউফ ও লেখক-অধ্যাপক আনোয়ার পাশা ছাড়াও স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ও আজিজুর রহমান বাংলাদেশের বেসামরিক সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেয়েছেন। চিকিৎসাবিদ্যায় অধ্যাপক ডা. মো. উবায়দুল কবীর চৌধুরী এবং অধ্যাপক ডা. এ কে এম এ মুকতাদিরকে দেওয়া হয়েছে এ পুরস্কার। সংস্কৃতিতে কালীপদ দাস ও অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার এবং শিক্ষায় ভারতেশ্বরী হোমসকে এই পদক দেওয়া হয়েছে।

পুরস্কারজয়ী প্রত্যেকে পেয়েছেন ১৮ ক্যারেট মানের পঞ্চাশ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, পাঁচ লাখ টাকার চেক ও একটি সম্মাননাপত্র।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা, অসামান্য আত্মত্যাগ ও অসাধারণ অবদানের জন্য যারা চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন এবং শিক্ষা-সংস্কৃতি, শিল্প-সাহিত্য, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও জনকল্যাণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা দেশ ও সমাজকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন- তাদের যথাযথ সম্মান ও স্বীকৃতি প্রদানের দায়িত্ববোধ থেকে দেশের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে 'স্বাধীনতা পুরস্কার' দেওয়া হয়। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে সরকার।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের পরিচালনায় এ অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, মুক্তিযোদ্ধাসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। গণভবন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<117258 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1