শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
সাক্ষাৎকার

অনুপ্রবেশকারীরা কখনোই কল্যাণ বয়ে আনে না :বাহাউদ্দিন নাছিম

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতিসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। একসময় তিনি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী। সম্প্রতি তার ধানমন্ডির বাসভবনে যায়যায়দিনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সাংগঠনিক নানা বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন বাহাউদ্দিন নাছিম। আলাপচারিতায় উঠে আসা কথাগুলো তুলে ধরেছেন আমাদের স্টাফ রিপোর্টার ফয়সাল খান
নতুনধারা
  ২৫ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

যায়যায়দিন : আওয়ামী লীগে সম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে আলোচিত-সমালোচিত বিষয় অনুপ্রবেশ। বিষয়টি আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?

বাহাউদ্দিন নাছিম :যেকোনো প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল থেকে আওয়ামী লীগে যে কেউ যোগ দিতে পারেন। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় যোগ দিলে অনুপ্রবেশ হবে না। কেউ নিজের পরিচয় গোপন করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার লক্ষ্যে দলে যুক্ত হলে সেটা অনুপ্রবেশ। অনুপ্রবেশকারীরা দলের জন্য কখনই কল্যাণ বয়ে আনে না। তাই দলের সবপর্যায় থেকে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে বের করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

যাযাদি : দীর্ঘসময় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। এই সময়ে সাংগঠনিক ভিত কতটা মজবুত হয়েছে?

নাছিম :আওয়ামী লীগ প্রতিদিনই শক্তিশালী হচ্ছে। দল গোছানোর কাজ একটি চলমান প্রক্রিয়া। সে প্রক্রিয়ায় দলকে সাধারণ মানুষের কাছে আরও জনপ্রিয় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সে লক্ষ্যে সাংগঠনিক কাজ চলছে। আওয়ামী লীগ দিন দিন শক্তিশালী ও জনপ্রিয় হচ্ছে।

যাযাদি :দীর্ঘসময় ক্ষমতায় থেকে সাংগঠনিক কাজে শিথিলতা চলে এসেছে, এমনটিও আলোচনা চলছে। আপনি কি মনে করেন?

নাছিম :বিএনপির কার্যক্রম না থাকার কারণে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম অনেক সময় দৃশ্যমান হয় না। সারা বছরই আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম চলে। দলের সব পর্যায়ে সম্মেলন হচ্ছে। নতুন নেতৃত্ব আসছে। এখানে শিথিলতার কিছু নেই। দেশ ও দলের প্রয়োজনের সময় নেতকর্মীরা তাদের দায়িত্ব পালন করার জন্য সদা প্রস্তুত রয়েছে।

যাযাদি :করোনার সেকেন্ড ওয়েভ শুরু হওয়ার একটা আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এ সময়ের রাজনীতি কেমন হওয়া উচিত?

নাছিম :করোনার মধ্যেও আওয়ামী লীগের কার্যক্রম থেমে থাকেনি। জনসমাগম হয় এমন কর্মসূচি না দিয়ে অন্যান্য সাংগঠনিক কাজগুলোকে এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। সহযোগী সংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণসহ তৃণমূলের অনেক শাখায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ শেষ পর্যায়ে। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি যেখানে আছে সেখানে সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে সামনে কারোনার সেকেন্ড ওয়েভ আসার কারণে এসব সম্মেলন করা নিয়ে একটু চিন্তা করতে হচ্ছে। সবার আগে মানুষের জীবন। মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে দলীয় কর্মকান্ড পরিচালনা করা হবে।

যাযাদি :বিএনপির নেতারা বারবার বলছেন, দেশে গণতন্ত্র নেই। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ধ্বংস করে ফেলেছে। এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কি?

নাছিম :সেনাছাউনিতে বসে বিএনপি সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশবিরোধী, একাত্তরের ঘাতক-দালালদের নিয়ে বিএনপি গঠন করেছিলেন স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান। তাদের হাত থেকে, ক্যান্টনমেন্ট থেকে গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হয়েছে। তারা জাতির পিতার হত্যাকারীদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করেছে। নারী শিশু হত্যাকারীদের বিচার করা যাবে না- এটা সংবিধানে যুক্ত করেছে। সুতরাং তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না। যারা বার বার দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষক, যারা বোমা মেরে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করে, তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা বেমানান। বিএনপির এসব মিথ্যাচার মানুষ বিশ্বাস করে না।

যাযাদি :আপনার হাতে পুনরুজ্জীবিত স্বেচ্ছাসেবক লীগের বর্তমান কর্মকান্ড কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?

নাছিম :করোনা মহামারিতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা অত্যন্ত ভালো কাজ করেছে। আমরা দেখেছি লকডাউনের সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কিভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তারা। স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ও খাদ্য মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে গিয়ে অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। অনেকে জীবনও দিয়েছেন।

যাযাদি :সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে ভোটার উপস্থিত খুব কম হচ্ছে। এজন্য বিএনপি আওয়ামী লীগকে দায়ী করছে। আর আপনারা দায়ী করছেন বিএনপিকে। আসলে বিষয়টি কি?

নাছিম :ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার দায় আওয়ামী লীগের না। বিএনপির দায় বেশি। তারা জেতার জন্য ভোটে অংশ নেয় না। অভিযোগ করার জন্য নির্বাচনে আসে। নির্বাচনে জয়ের জন্য নামতে হবে। অভিযোগের চিন্তা না করে প্রচারণা চালাতে হবে। কেন্দ্রে এজেন্ট দিতে হবে। তাহলে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। এজন্য সব দলকেই কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে