শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
নগদ ও বিকাশে সরকারি ভাতা যাবে সরাসরি উপকারভোগীর হাতে

প্রধানমন্ত্রিত্ব আমার কাছে কাজ করার সুযোগ :শেখ হাসিনা

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৫ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০
cÖavbgš¿x †kL nvwmbv e„n¯úwZevi mvgvwRK wbivcËv Kg©m~wPi AvIZvq eq¯‹fvZv, weaev I cÖwZeÜxfvZv Ges wkÿv_©x‡`i Dce„wËi UvKv †gvevBj-Avw_©K cÖwZôv‡bi gva¨‡g †cÖiY Kvh©µ‡gi Abyôv‡b e³…Zv K‡ib Ñ÷vi‡gBj

মানুষের সেবক হিসেবে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'আমি যেদিন প্রথম প্রধানমন্ত্রী হয়ে শপথ নিই, সেদিনই বলেছিলাম আমি মানুষের সেবক হিসেবে কাজ করব। প্রধানমন্ত্রিত্ব আর কিছু না, প্রধানমন্ত্রিত্ব আমার কাছে এটা যে, আমি কাজ করার সুযোগটা পাচ্ছি। কাজ করার ক্ষমতাটা পাচ্ছি। কাজেই সেই মানুষের জন্য কাজ করব, মানুষের সেবা করব। আমার সরকার মানে মানুষের সেবক। সেবক হিসেবে কাজ করতে চাই।' বৃহস্পতিবার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বয়স্কভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা এবং প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা মোবাইল-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রেরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এতে অংশ নেন শেখ হাসিনা। মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস 'নগদ' ও 'বিকাশ'র মাধ্যমে গভর্নমেন্ট টু পারসন পদ্ধতিতে ভাতাভোগীর কাছে অর্থ পাঠানো হবে। বর্তমানে দেশের প্রায় এক-চতুর্থাংশ পরিবারকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে মোট ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরে জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকা হারে ৪৯ লাখ বয়স্ক পুরুষ ও নারীকে বয়স্ক ভাতা, জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকা হারে ২০ লাখ ৫০ হাজার নারীকে বিধবা ভাতা, জনপ্রতি মাসিক ৭৫০ হারে ১৮ লাখ ব্যক্তিকে প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া এক লাখ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে শিক্ষা উপবৃত্তি কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, পর্যায়ক্রমে সব প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে আর্থিক সহায়তার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এখন পর্যন্ত আমরা ১১২টি উপজেলায় শতভাগ বয়স্ক ও বিধবা ভাতার জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছি। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য উপজেলায়ও শতভাগ বরাদ্দ নিশ্চিত করা হবে। লালমনিরহাটে পেস্নন তৈরি করা হবে উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এভিয়েশন ও এরোস্পেস ইউনিভার্সিটি হলে ওই এলাকার চিত্র পাল্টে যাবে। তিনি বলেন, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম এলাকা এক সময় খুবই অবহেলিত ছিল। এ কারণে লালমনিরহাটে এভিয়েশন ও এরোস্পেস ইউনিভার্সিটি তৈরি হচ্ছে। এই একটি প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে আরও ভালো ভালো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। এছাড়া কুড়িগ্রামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, '২০০৭ সালে সেনানিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে সর্বপ্রথম আমাকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। যদিও আমি বিরোধী দলে ছিলাম, তারপরও। সাধারণত আমাদের দেশে সেটা হয় না। সব সময় দেখা যায় যারা ইমার্জেন্সি দিয়েছে, তারা ক্ষমতায় যে থাকে তাকেই ধরে। কিন্তু সেই সময় আমাকে আগে ধরল। গ্রেপ্তারের পর ভবিষ্যতে দেশকে কীভাবে উন্নত, সমৃদ্ধ হিসেবে গড়ে তোলা যায় কারাগারে বসেই সেই পরিকল্পনা করেছিলাম। আমি বসে থাকিনি। ওই কারাগারে যখন ছিলাম, প্রথম যখন গেলাম, তখনই আমি চিন্তা করলাম যে একদিন না একদিন তো এখান থেকে মুক্তি পাব, দেশের জন্য কাজ করব। তাহলে কী কাজ করব, কোন সালে কী করব, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা, স্যানিটারি ল্যাট্রিনের ব্যবস্থা করা, মানুষের স্বাস্থ্যসম্মত জীবন-যাপন নিশ্চিত করা, শিক্ষার হার বাড়ানো, খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া, এসব বসে বসে চিন্তা করে করে আমি লিখে রাখতাম। ২০০৮ সালে মুক্তি পেয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সময় নির্বাচনী ইশতেহার প্রস্তুত করতে গিয়ে সেসব পরিকল্পনাসহ অন্যান্য পরিকল্পনা যুক্ত করে 'দিন বদলের সনদ' ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।' অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'দ্য উডস আর লাভলি, ডার্ক অ্যান্ড ডিপ। বাট আই হ্যাভ প্রমিজেস টু কিপ অ্যান্ড মাইলস টু গো বিফোর আই স্স্নিপ, অ্যান্ড মাইলস টু গো বিফোর আই স্স্নিপ।' অন্ধকার, ঘন অন্ধকার বনায়ন... দেখতে সুন্দর। কিন্তু আমাকে এই ঘন অন্ধকারের সেই ঘন গভীর জঙ্গল পার হতেই হবে এবং আমার চলার পথ শেষ নেই। মাইলের পর মাইল আমাকে যেতে হবে। আমাকে ক্লান্ত হলে চলবে না, ঘুমালে চলবে না। আমার অভিষ্ট লক্ষ্যে আমাকে পৌঁছাতেই হবে। আর সেই লক্ষ্যটা কি? সেই লক্ষ্যটা হলো এ দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করা।' প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা যখন বয়স্কভাতা শুরু করি আমি এভাবে হিসাব করেছিলাম যে, কেউ ভাতার উপর শুধু নির্ভরশীল হোক সেটা আমরা চাই না। ভাতা পাবে কিন্তু যার কর্মক্ষমতা আছে সে নিজে কিছু কাজও করবে, একেবারে ঘরে বসে থাকবে না। যেন অন্তত ১০ কেজি চাল কিনতে পারে সেই হিসাবে আমরা ভাতা দেওয়া শুরু করি। তখন ১০ টাকায় এক কেজি চাল পাওয়া যেত। তাই আমরা ১০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া শুরু করি। এখন সেটা বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছে, যা আগের চেয়ে সংখ্যায় বেশিসংখ্যক লোক পাচ্ছেন।' প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষ এবং আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে লক্ষ্য আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করা। আর সেই কাজ করতে গিয়ে শুধু সরকার একা না, যে যেখানে আছেন তাদেরও নিজ নিজ কিছু দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রত্যেক এলাকার গৃহহীন, ভূমিহীনের তালিকা পেলে তাদের সরকার বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেবে। যাদের সামর্থ্য আছে তারাও করে দিতে পারেন। সবাই মিলে যদি আমরা করি, এই দেশটাকে আমরা নিশ্চয়ই এগিয়ে নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ করতে পারব। এই বিশ্বাস আমার আছে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই সময় সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী চাঁদপুর, পিরোজপুর, লালমনিরহাট ও নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সংযুক্ত হয়ে উপকারভোগীসহ জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে