শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যশোর থেকে পালিয়ে যাওয়া দশ করোনা রোগীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

আটকের পর জামিন নিয়ে বাড়ি ফিরলেন ৭ জন
স্টাফ রিপোর্টার, যশোর
  ১১ মে ২০২১, ০০:০০

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়া দশ করোনা রোগীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এর মধ্যে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার পর সোমবার সকালে তাদের আটক করা হয়। পরে আদালত থেকে জামিন নিয়ে তারা বাড়ি ফিরেছেন। এর আগে ৮ মে ওই দশজনের বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপপাড়া গ্রামের জালাল হোসেনের ছেলে মিলন হোসেন (৩২), যশোর সদর উপজেলার পশ্চিম বারান্দিপাড়া এলাকার বিশ্বনাথ দত্তের স্ত্রী মনিমালা দত্ত (৪৯), রাজবাড়ী সদরের রামকান্তপুর গ্রামের গোলাম রব্বানীর স্ত্রী নাসিমা আক্তার (৫০), খুলনার পাইকগাছা উপজেলার ডামরাইল গ্রামের আহম্মদ সানার ছেলে আমিরুল সানা (৫২), খুলনা শহরের নতুন বাজার খ্রিষ্টান গলির শের আলীর ছেলে সোহেল সরদার (১৭), খুলনা শহরের বিকে মেইন রোড এলাকার পুলিন কৃষ্ণ সরকারের ছেলে বিবেকানন্দ সরকার (৫২) ও যশোর সদরের পাঁচবাড়িয়া এলাকার রবিউল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা (১৯)। এর মধ্যে ফাতেমা ছাড়া সবাই ভারতফেরত।

এছাড়াও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার সোনাতলা দক্ষিণ শ্রীপুরের মনোতাষ সরদারের স্ত্রী শেফালি রাণী সরদার (৪০), যশোর সদরের পাঁচবাড়িয়া এলাকার একরামুল কবীরের স্ত্রী রুমা (৩০) ও শহরের ওয়াপদা গ্যারেজ এলাকার মৃত ভদ্র বিশ্বাসের ছেলে প্রদীপ বিশ্বাসের (৩৭) নামে। এদের মধ্যে রুমা ও প্রদীপ স্থানীয় রোগী।

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ২৩ ও ২৪ এপ্রিল ভারত থেকে ফিরে আসা সাত করোনা রোগী ও স্থানীয় তিন করোনা রোগী যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের রেডজোন থেকে পালিয়ে যায়। রেডজোন থেকে দশ করোনা রোগী পালিয়ে যাওয়ার খবর জানাজানি হলে এ নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ২৬ এপ্রিল পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় এদের বাড়ি থেকে 'ধরে এনে' ফের যশোর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরবর্তীতে যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশ এই ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে নন-এফআইআর প্রসিকিউশন নং-৬১, তারিখ ০৮.০৫.২১ সংক্রমণ রোগ (প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর ২৫(২) ধারায় মামলা দাখিল করে। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ওই ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় সোমবার সাতজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। দুইবারের পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ আসায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র দেওয়ার পর তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বাকি তিনজনকেও হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়া সাপেক্ষে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

এদিকে গ্রেপ্তার সাতজনকে আদালতে সোপর্দের পর সোমবার দুপুরে শুনানি শেষে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহাদী হাসান তাদের জামিন মঞ্জুর করেছেন।

আদালত সূত্র জানিয়েছে, বিজ্ঞ আদালতে যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশের দাখিলকৃত নন-এফআইআর প্রসিকিউশন নং-৬১, তারিখ ০৮.০৫.২১ সংক্রমণ রোগ (প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮ এর ২৫(২) ধারা অনুযায়ী, সংক্রমণ বিধি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান ও নির্দেশ পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করায় আদালত তাদের অনূর্ধ্ব তিন মাসের কারাদন্ড বা অনূর্ধ্ব ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত করতে পারেন। তবে বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে বিচারক এই দন্ড প্রদান করতে পারেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে