সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

গৌরবের ৫৩ বছরে পা রাখল জাবি

শিহাব উদ্দিন
  ১২ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আজ। ১৯৭১ সালের এই দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়টি। দীর্ঘপথ পরিক্রমায় গৌরব ও ঐতিহ্যের ৫২ বছর পেরিয়ে ৫৩ বছরে পা রাখল সাংস্কৃতির রাজধানী খ্যাত জাবি। দীর্ঘ এ পথচলায় প্রতিষ্ঠানটির রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও সফলতার স্বাক্ষর।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ লীলাভূমি হিসেবে পরিচিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। শীতের মৌসুমে এখানকার স্বচ্ছ পানির লেকে আসে হরেক রকমের অতিথি পাখি। লেকগুলোতে ফুটে থাকা লাল শাপলার বুকে অতিথি পাখির জলকেলি মুগ্ধ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের। এছাড়া এখানে প্রজাপতির সংরক্ষণ ও প্রজনন বৃদ্ধির জন্য রয়েছে 'প্রজাপতি পার্ক'। প্রতি বছর প্রজাপতি সংরক্ষণে সচেতনতা বৃদ্ধিতে অনুষ্ঠিত হয় 'প্রজাপতি মেলা'। বিজ্ঞান গবেষণার জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মিত হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ 'ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র'।

দেশের পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় এটি। ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথকভাবে ৮টি করে মোট ১৬টি আবাসিক হল চালু আছে। এছাড়াও নির্মাণাধীন ছয়টি হল। নতুন হল চালু হলে আবাসন সংকট কেটে যাবে।

দীর্ঘপথ পরিক্রমায় বিশ্ববিদ্যালয়টি পেয়েছে অসংখ্য জ্ঞানীগুণী মানুষের সংস্পর্শ। তাদের মধ্যে প্রখ্যাত কবি সৈয়দ আলী আহসান, অধ্যাপক সুনীল কুমার মুখোপাধ্যায়, লেখক হায়াৎ মামুদ, লেখক হুমায়ুন আজাদ, নাট্যকার সেলিম আল দীন, কবি মোহাম্মদ রফিক, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী দিলারা চৌধুরী, আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক তারেক শামসুর রেহমান, রসায়নবিদ অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির, ডক্টর সৌমিত্র শেখর, অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আনু মুহাম্মদ, অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি, শহীদুজ্জামান সেলিম, জাকিয়া বারী মম, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মুশফিকুর রহিম প্রমুখ।

সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যে রয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবজ্জ্বল পদাঙ্ক। এখানে গড়ে উঠেছে শতাধিক সাংস্কৃতিক সংগঠন। রয়েছে 'সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চ'। নির্মিত হয়েছে দেশের সর্বোচ্চ শহীদ মিনার। এছাড়াও ভাষাশহীদদের স্মরণে নির্মিত 'অমর একুশে' ও অকুতোভয় সৈনিকের আদলে নির্মিত 'সংশপ্তক' জাতিকে দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত হওয়ার প্রেরণা যোগায় প্রতিনিয়ত।

তবে শীর্ষ এ বিদ্যাপীঠের কাছে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির সমীকরণে রয়ে গেছে বিস্তর পার্থক্য। বিশ্ববিদ্যালয়টি গবেষণা কার্যক্রমে পিছিয়ে অনেক। তবে বর্তমানে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় চলমান রয়েছে অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ। এসব নির্মাণকাজ শেষ হলে আমূল বদলে যাবে বিশ্ববিদ্যালয়। নির্মাণ করা হবে লেকচার থিয়েটার ও পরীক্ষার হল যেখানে একসঙ্গে ৮ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। নির্মাণাধীন রয়েছে স্পোর্টস কমপেস্নক্স ও ছয়তলা বিশিষ্ট নতুন লাইব্রেরি ভবন।

প্রতিষ্ঠার ৫৩ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সংকট কাটিয়ে জাবিকে বিশ্বর্ যাংকিংয়ে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সংকট উত্তরণের চেষ্টায় আছি। নতুন হল নির্মাণকাজ শেষ হলে আবাসন সংকট পুরোপুরি দূর হবে। এছাড়াও নতুন লাইব্রেরি ভবন নির্মাণাধীন। আশা করি, সব অংশীজনের সহায়তায় একটি গবেষণাবান্ধব আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে