সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
জাবি ছাত্রী হেনস্তা

পুলিশ সদস্যকে পিটুনি দিয়ে থানায় সোপর্দ

প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
জাবি প্রতিনিধি
  ১৩ জুন ২০২৩, ০০:০০

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রীকে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে হেনস্তার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত এক পুলিশ কনস্টেবলকে গণধোলাই দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে নিরাপত্তা শাখা আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে অভিযুক্তকে সোপর্দ করে। অভিযুক্ত ওই পুলিশ কনস্টেবল মেহমুদ হারুন নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনসে কর্মরত। তার বাড়ি সাভার উপজেলায়। এছাড়াও সহপাঠীকে হেনস্তার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্তের যথাযথ বিচার ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোববার রাত ১০টার দিকে বোটানিক্যাল গার্ডেনসংলগ্ন রাস্তা দিয়ে হলে ফিরছিলেন প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী। এ সময় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ও তার সঙ্গে থাকা এক যুবক পথ আটকে ওই ছাত্রীকে অশ্লীল ইঙ্গিত ও কুপ্রস্তাব দেন। ভয় পেয়ে ওই ছাত্রী এক রিকশাওয়ালার সহায়তায় মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে এসে তার বন্ধুদের বিষয়টি জানান। তার বন্ধুরা হেনস্তাকারীদের হলসংলগ্ন দোকানের সামনে তাড়া করেন। এ সময় সঙ্গে থাকা যুবক পালিয়ে গেলেও মূল অভিযুক্ত হারুনকে ধরে গণধোলাই দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কাছে তুলে দেন শিক্ষার্থীরা।

ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, হলে ফেরার পথে দুই ব্যক্তি আমার পথরোধ করে ক্যাম্পাসের কিনা জিজ্ঞাসা করে। কিন্তু তাদের আচরণ অস্বাভাবিক দেখে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে তারা আবারও পথ আটকে বলে 'আমার সঙ্গে জঙ্গলে যাবে?', 'মোবাইল নম্বর দাও' ইত্যাদি যৌন নীপিড়নমূলক কথা বলা শুরু করে। রিকশা উঠে স্থান ত্যাগ করতে গেলে তারা আবারও রিকশা থামিয়ে আমার মোবাইল নম্বর নিতে জোরজবরদস্তি করে।'

অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল মেহমুদ হারুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কাছে অভিযোগ স্বীকার করেছেন। এ সময় তার কাছে অবৈধভাবে ব্যবহার করা হ্যান্ডকাফ, নকল ওয়াকিটকি এবং আইডি কার্ড পাওয়া যায় বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন। তিনি বলেন, 'আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাদী হয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা করে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছি।'

আশুলিয়া থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, 'ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি অবহিত হয়েছি। সে যা করেছে তা পুলিশ বাহিনীর জন্য অসম্মানের। অফ ডিউটিতে থাকাকালীন নকল ওয়াকিটকি ও হ্যান্ডকাফ ব্যবহার অবৈধ। তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের রুজু করা মামলার পাশাপাশি বিভাগীয় মামলা হবে।'

এদিকে ক্যাম্পাসে ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় যথাযথ বিচার এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শতাধিক শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন। স্মারকলিপিতে ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ ও চলাচল নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ গ্রহণ, ক্যাম্পাসের মূল সড়কগুলোতে সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক নিরাপত্তা কর্মী নিয়োজিত করাসহ ছয়টি দাবি জানানো হয়। উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম স্মারকলিপি গ্রহণ করে দাবি বাস্তবায়নে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন বলে আশ্বস্ত করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে