সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলেন তারা এই নির্বাচনগুলো দেখুন

যাযাদি ডেস্ক
  ২৩ জুন ২০২৩, ০০:০০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় বক্তব্য রাখেন -ফোকাস বাংলা

যারা নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাদের স্থানীয় সরকারের সাম্প্রতিক নির্বাচন ও সংসদীয় উপনির্বাচনগুলো দেখার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষ যাতে নির্বাচনে ভোট দিতে পারে আওয়ামী লীগ সরকার সে ব্যবস্থা করে। সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে প্রমাণিত হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্বাচন স্বচ্ছ হয়।

বৃহস্পতিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সূচনা বক্তব্যে নির্বাচন প্রসঙ্গ এসব কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, 'যেসব দেশ আমাদের নির্বাচনের দিকে শ্যেন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন, তাদেরকেও বলব, আমাদের যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন বা আমাদের যে উপনির্বাচনগুলো হলো সেই নির্বাচনগুলো দেখেন, কীভাবে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে। এরপর আবার কেন প্রশ্ন ওঠে?'

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, 'বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমরা জয়লাভ করেছি। কক্সবাজার মেয়র নির্বাচনসহ বিভিন্ন নির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচন নিয়ে কারও কোনো প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই।'

২১ জুন বুধবার রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয় শান্তিপূর্ণভাবে। তার আগে ১২ জুন বরিশাল ও খুলনা এবং ২৫ মে গাজীপুর সিটির ভোট হয়, ওই তিন সিটিতেও বড় কোনো গোলযোগ ঘটেনি। গাজীপুর বাদে বাকি চার সিটিতেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন।

এদিকে গত দুটি জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ ধরে বাংলাদেশের আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে বিভিন্ন পশ্চিমা দেশ। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র গত মে মাসে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে বলেছে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত ব্যক্তিদের ভিসা দেবে না মার্কিন সরকার।

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আওয়ামী লীগের ভোট চুরি করা লাগে না। আওয়ামী লীগ এমনি ভোট পায়। যখনই মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, মানবাধিকারে বিশ্বাস করে।'

বিএনপি আমলের নির্বাচনের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, 'বিএনপি আমলে নির্বাচন মানে কি ছিল? প্রত্যেকটা উপনির্বাচন মানে ছিল- আমরা যে বলতাম দশটা হুন্ডা, ২০টা গুন্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা।'

ভোট ডাকাতি করেই তাদের (বিএনপি) জন্ম, ভোট ডাকাতি করাই তাদের অভ্যাস মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, 'প্রত্যেকের মনে রাখা উচিত যে সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপিকে কেউ ভোট দেয়নি। তাই, তারা ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেয়নি বরং অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে মানুষকে জীবন্ত আগুনে পুড়িয়ে হত্যার মাধ্যমে দেশব্যাপী নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে।'

শেখ হাসিনা বলেন, 'সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে বিএনপি গঠন করেছিলেন। তার অবৈধ ক্ষমতা দখলকে বৈধ করতে ভোট কারচুপির সংস্কৃতি চালু করেন। জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী খালেদা জিয়া হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা এবং নেতাকর্মীদের ওপর অমানবিক নির্যাতনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার বারবার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তারা এটা করতে ব্যর্থ হয়েছে, কারণ আওয়ামী লীগ মাটি ও মানুষের সংগঠন।'

বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে দেশকে দুর্নীতি, জঙ্গি, সন্ত্রাসের দেশে পরিণত করেছে উলেস্নখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'তাদের আমলে বাংলাদেশ পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। অথচ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় গত সাড়ে ১৪ বছর ধরে দেশে গণতান্ত্রিক ধারা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অব্যাহত রয়েছে। আমরা মানবসৃষ্ট ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছি। এই অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে এবং বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ।'

'আমরা জনগণকে সচেতন করেছি। জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দিব- এ সেস্নাগানকে আওয়ামী লীগ বাস্তবায়ন করেছে' যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঞ্চালনায় কার্যনির্বাহী কমিটির সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী এবং আওয়ামী লীগের সিনিয়র সদস্য আবুল হাসনাত আবদুলস্নাহ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে