সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমলাতন্ত্র নিয়ে খুশি বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে মন্ত্রী এ কথা জানান।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও প্রতিমন্ত্রী ডক্টর শামসুল আলম সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, 'আমলাতন্ত্র নিয়ে প্রধানমন্ত্রী খুশি। সবাই ভালো কাজ করছেন। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি কমানো ও প্রকল্পে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানোর জন্যও তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।'
মন্ত্রী বলেন, 'বিভিন্ন প্রকল্পে গাছ লাগানোসহ দেশের হাসপাতালগুলোতে লোকবল সংকট নিয়েও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। লোকবল সংকট দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছেন তিনি।'
'অহেতুক ব্যয় কমানোর বিষয়ে ফের প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন' জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, 'এক্ষেত্রে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, অহেতুক, বাড়াবাড়ি, অপচয় কমাতে হবে। যে প্রকল্পগুলো ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কাজ হয়েছে সেগুলোকে উচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে শেষ করতে হবে হবে। ঋণের প্রয়োজনে নতুন জানালা খুলেছে। এক্ষেত্রে নিউ ডেভলপমেন্ট ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া যাবে। তাহলে এখন আমরা দর দাম করে ঋণ নিতে পারব। এখন আমাদের এডিবি, বিশ্বব্যাংক, এআইআইবি এবং নিউ ডেভলপমেন্ট ব্যাংক; যেখান থেকে সহজ শর্তে ঋণ পাব সেখান থেকে আমরা ঋণ নেব।'
এমএ মান্নান বলেন, 'নালা বা পুকুরের নিচে পাকা না করার নির্দেশনাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কারণ এতে পানি নিচে যেতে পারে না। এছাড়া স্স্নুইস গেট করার ক্ষেত্রে সতর্ক করেছেন। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, স্স্নুইস গেট যারা করে তারা চলে যায়। আর যারা দায়িত্বে থাকেন তাদেরও খুঁজে পাওয়া যায় না। এছাড়া প্রকল্পে গুরুত্ব দিয়ে সবুজ বেষ্টনী করতে বলেছেন। ক্লাইমেট ফান্ড থেকে অর্থ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। হাসপাতাল উন্নয়ন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, শুধু বিল্ডিং করলে হবে না। এর সঙ্গে যন্ত্রপাতি ও জনবল নিশ্চিত করতে হবে। প্রায়ই শুনি হাসপাতাল আছে যন্ত্রপাতি নেই, জনবল নেই। এটা ঠিক না।'
একনেক সভায় ২০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি নতুন, ৭টি প্রকল্প সংশোধন করা হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১৪ হাজার ৭৭ কোটি টাকা।
অনুমোদিত ২০টি প্রকল্প
?১) স্মল হোল্ডার এগ্রিকালচারাল কম্পিটিটিভনেস প্রজেক্ট (এসএসিপি) (২য় সংশোধিত)। ২) গোপালগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পলস্নী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (২য় পর্যায়)। ৩) জলবায়ু ও দুর্যোগ সহনশীল ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প। ৪) মেঘনা নদীর ভাঙন হতে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলায় নলের চরে নির্মিত অবকাঠামোসমূহ রক্ষার্থে প্রতিরক্ষামূলক কাজ বাস্তবায়ন। ৫) ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলাধীন শুভাঢ্যাখাল পুনঃখনন এবং খালের উভয় পাড়ের উন্নয়ন ও সুরক্ষা (১ম পর্যায়)। ৬) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলায় মহানন্দা নদী ড্রেজিং ও রাবার ড্যাম (২য় সংশোধিত)। ৭) বাগেরহাট কালেক্টরেটের নতুন ভবন নির্মাণ। ৮) হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশুপার্ক আধুনিকীকরণ। ৯) পূর্বাচল ৩০০ ফুট সড়ক হতে মাদানী এভিনিউ পর্যন্ত সংযোগকারী দুটি সড়ক উন্নয়ন। ১০) সিলেট সড়ক বিভাগাধীন সিলেট (তেলিখাল)-সুলতানপুর-বালাগঞ্জ (জেড-২০১৩) সড়কের ২৫তম কিলোমিটারে বড়ভাঙা সেতু নির্মাণ। ১১) মুন্সীগঞ্জ সড়ক বিভাগের আওতায় রামেরকান্দা-লাকিরচর (রোহিতপুর বাজার) সংযোগ সড়ক (আর-৮২৩) উন্নয়ন প্রকল্প। ১২) এস্টাবলিশমেন্ট অব ফাইভ হান্ড্রেড বেডেড হসপিটাল ও এনসিলারি ভবন ইন যশোর, কক্সবাজার, পাবনা ও আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ এবং জননেতা নুরুল হক আধুনিক হাসপাতাল, নোয়াখালী (১ম সংশোধন-প্রস্তাবিত)। ১৩) শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন (কম্পোনেন্ট-২) : দেশের ০৮টি বিভাগীয় শহরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক ইমেজিং ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ (১ম সংশোধন-প্রস্তাবিত)। ১৪) খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও একাডেমিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ (প্রস্তাবিত ১ম সংশোধন)। ১৫) লিভিং নো ওয়ান বাহাইন্ড : ইম্প্রম্নভিং স্কিল অ্যান্ড ইকোনমিক অপরচুনিটিস ফর দ্য ওমেন অ্যান্ড ইয়ুথস ইন কক্সবাজার, বাংলাদেশ। ১৬) পটুয়াখালী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা। ১৭) অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৩। ১৮) উপজেলা পর্যায়ে ৫০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন। ১৯) রংপুর, নীলফামারী, পীরগঞ্জ শহর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গ্যাস বিতরণ পাইপলাইন নেটওয়ার্ক নির্মাণ (১ম সংশোধিত)। ২০) সৈয়দপুর ১৫০ মেগাওয়াট+ ১০% সিম্পল সাইকেল (এইচএসডি ভিত্তিক) বিদু্যৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প (১ম সংশোধিত)।
Google News ফিড অনসরণ করুন
