শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

জাতিকে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন মির্জা ফখরুল :কাদের

যাযাদি ডেস্ক
  ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের

সুনির্দিষ্ট আইন দ্বারা নির্ধারিত বিষয়ে লজ্জাহীনভাবে মিথ্যা ও বিকৃত তথ্য মির্জা ফখরুল জাতির সামনে উপস্থাপন করেছেন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তিনি ও বিএনপি তাদের চিরাচরিত অপরাজনীতির ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়েও ক্রমাগতভাবে সীমাহীন মিথ্যাচারের মাধ্যমে জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।

বুধবার এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেশের আইন ও বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে দেওয়া সাম্প্রতিক বক্তব্যকে দায়িত্বহীন ও মিথ্যাচার আখ্যা দিয়ে এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান ওবায়দুল কাদের।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত একজন আসামি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাহী ক্ষমতাবলে তার সাজা বর্তমানে স্থগিত রয়েছে। খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে হলে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাকে আদালতের শরণাপন্ন হতেই হবে। বিষয়টি সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ারাধীন এবং এ বিষয়ে রাজনীতি করার কারো কোনো সুযোগ নেই।'

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ মানবিকতা ও উদারতা নিয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়াকে নিজ ঘরে থেকে দেশের সর্বাধুনিক হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার গ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছেন। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের ইতিহাসে একজন দন্ডপ্রাপ্ত অপরাধীর জন্য এমন মানবিকতার উদাহরণ বিরল। শেখ হাসিনার সেই উদারতাকে বিএনপি মহাসচিব শুধু অসম্মানই করেননি, গোটা বিষয় নিয়ে অত্যন্ত উসকানিমূলক মন্তব্যের মধ্য দিয়ে দেশের আইন, বিচারপ্রক্রিয়া ও সংবিধান সম্পর্কে দায়িত্বহীন বক্তব্য প্রদান করেছেন। বিএনপি যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে পুঁজি করে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য জল ঘোলা করার অপতৎপরতা চালাচ্ছে।'

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিএনপি মহাসচিব রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও প্রতিপক্ষকে মৃতু্যর দিকে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন! কিন্তু ইতিহাস জানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা অবৈধ ক্ষমতাদখলকারী সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে সপরিবারে হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল। এমনকি খুনিদের বিচারপ্রক্রিয়া বন্ধ করার জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আইনি সুরক্ষা দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, খুনিদেরকে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে খালেদা জিয়াও বঙ্গবন্ধুর খুনি রশিদ ও হুদাকে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রম্নয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনে পার্লামেন্টে বসিয়েছিল। খুনি খায়রুজ্জামানকে চাকরিতে পুনর্বহাল করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরি দিয়ে পদোন্নতির মাধ্যমে রাষ্ট্রদূত পদে নিয়োগ দিয়েছিল। ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের দিন বেগম খালেদা জিয়া ভুয়া জন্মদিন পালনের মধ্য দিয়ে আজ অবধি প্রতিহিংসাপরায়ণ ষড়যন্ত্রের রাজনীতির ধারা অব্যাহত রেখেছে।'

বিবিৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'প্রতিহিংসার রাজনীতি এবং প্রতিপক্ষকে হত্যা করার মতো নিকৃষ্ট মানসিকতা ঐতিহ্যগতভাবেই বিএনপির মতাদর্শ। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা কখনো প্রতিহিংসার রাজনীতি করেন না। বরং তিনি বারবার বিএনপির প্রতিহিংসা ও আক্রোশের রাজনীতির শিকার হয়েছেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোট সরকারের সময় হাওয়া ভবনের সরাসরি তত্ত্বাবধানে বঙ্গবন্ধুকন্যাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃতু্যর পর প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা সমবেদনা জানাতে গেলে বাসার প্রবেশ পথ তালা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়।'

সেতুমন্ত্রী বলেন, 'মির্জা ফখরুল ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণের বিষয়ে সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। শেখ হাসিনা কোনো দন্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন না। তার বিদেশ গমনে আদালতের কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না। শেখ হাসিনা সর্বদা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তিনি তার বিরুদ্ধে দাখিলকৃত সব মামলার জামিন পাওয়ার পর এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণ করতে গিয়েছিলেন।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে