রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

কানাডায় চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন কবি আসাদ চৌধুরী

যাযাদি ডেস্ক
  ০৭ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

ষাটের দশকের বাংলা কবিতার স্বতন্ত্র কাব্যভাষার কবি আসাদ চৌধুরী কানাডার পিকারিং ডাফিন মেডোজে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন। বাংলা একাডেমি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি বৃহস্পতিবার কানাডার অশোয়া শহরের লেকরিজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃতু্যবরণ করেন। তিনি প্রায় এক বছর ধরে বস্নাড ক্যানসারে ভুগছিলেন। তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।

শুক্রবার বাদ জুমা টরন্টোর নাগেট মসজিদে কবির

নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযার পর তার মরদেহ সাধারণের শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানোর জন্য নাগেট মসজিদ রাখা হয়। এরপর তার মরদেহ পিকারিং ডাফিন মেডোজে দাফন করা হয়েছে।

কবি আসাদ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে কানাডার টরেন্টোতে একমাত্র মেয়ে নুসরাত জাহান চৌধুরীর সঙ্গে বসবাস করছিলেন। কবির জামাতা নাদিম ইকবাল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আসাদ চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত মাসে তাকে কানাডার লেকরিজ হেলথ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

উলেস্নখ্য, আসাদ চৌধুরী ছিলেন একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও আবৃত্তিকার। সাহিত্যে তিনি গণমুখী, নান্দনিক ও রোমান্টিক। স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে বাংলার লোকায়ত জীবন সবই তিনি তার লেখায় স্পষ্ট করে ফুটিয়ে তুলেছেন।

কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমেও মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। কবির বাচনভঙ্গি, টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও উপস্থাপনার জন্যও সর্বমহলে পরিচিত ছিলেন তিনি। মৌলিক কবিতা ছাড়াও শিশুতোষ গ্রন্থ, ছড়া, জীবনী ও অনুবাদ করেছেন। ১৯৮৩ সালে তার 'বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ' শীর্ষক উলেস্নখযোগ্য গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া একই বছর তিনি সম্পাদনা করেন বঙ্গবন্ধুর জীবনী ভিত্তিক গ্রন্থ 'সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধু।'

আসাদ চৌধুরী ১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রম্নয়ারি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কবির বাবার নাম মোহাম্মদ আরিফ চৌধুরী এবং মায়ের নাম সৈয়দা মাহমুদা বেগম। তিনি ১৯৫৭ সালে আরমানিটোলা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬০ সালে বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকে যাওয়ার পর কলেজে অধ্যাপনার মধ্য দিয়ে কবি আসাদ চৌধুরী কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৬৪ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে শিক্ষকতা করেন। পরে ঢাকায় থিতু হয়ে তিনি বিভিন্ন খবরের কাগজে সাংবদিকতা করেন। ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি 'ভয়েস অব জার্মানি'র বাংলাদেশ সংবাদদাতার দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭৩ সালে ঢাকায় বাংলা একাডেমিতে যোগ দিয়ে দীর্ঘকাল চাকরির পর প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হিসেবে অবসর নেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে