আজকের যায়যায়দিন

নারায়ণগঞ্জে সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে মন্তব্য করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ডক্টর হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'রোববার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে যে নির্বাচন হয়েছে তা এমন সুন্দর যে প্রচারণা থেকে নির্বাচন পর্যন্ত কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়নি। ইনশাআলস্নাহ আগামী (২০২৩ সালে) জাতীয় সংসদ নির্বাচনও এরকম নির্ভেজাল হবে।'

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে দৈনিক পত্রিকা 'ভোরের আকাশ'-এর আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, গতকালের নির্বাচনে এটাই প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা আগের চেয়ে বেড়েছে। বিএনপি নির্বাচন থেকে পালিয়ে গেলেও সব জায়গায় তারা ছিল। তারাও নিশ্চয় বুঝতে পেরেছে তাদের জনপ্রিয়তা কোথায় আছে।

যে কেউ যেন সাংবাদিক পরিচয় দিতে না পারে সেজন্য কারা সাংবাদিক হতে পারবেন সেই মানদন্ড তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, 'আমরা ভুতুড়ে পত্রিকা বন্ধ করার ব্যবস্থা করছি। একই সঙ্গে যে কেউ যেন সাংবাদিক পরিচয় না দিতে পারে সেটিরও উদ্যোগ নিয়েছি। আমি প্রেস কাউন্সিলকে অনুরোধ জানিয়েছি, নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে কারা সাংবাদিক হতে পারেন সেটির অন্তত নীতিমালা বা মানদন্ড তৈরি করার।'

আলোচনা সভায় ড. হাছান মাহমুদ / জিয়া মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে পাকিস্তানের দোসর ছিলেন

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'ইতোমধ্যে ৪০০ পত্রিকা বাতিলের জন্য জেলা প্রশাসকদের কাছে তালিকা ও নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। ব্রিফকেসনির্ভর পত্রিকা দেশে থাকবে না; যেখানে প্রকাশক নিজেই রিপোর্টার, নিজেই বিজ্ঞাপন সংগ্রাহক। নামধারী সাংবাদিকদের যন্ত্রণায় টেকা যায় না। আমরা এ ধরনের পত্রিকা বন্ধ করব।'

তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি সাংবাদিক ইউনিয়নগুলোকেও অনুরোধ জানাব, আপনারাও এসব ভুয়া পত্রিকা বন্ধে কাজ করুন। অনেক গাড়িতে সাংবাদিক লিখে ইয়াবা পাচার করা হয়। অনলাইন পত্রিকায় এসব বেশি চলছে। অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড আমরা খুব সচেতন হয়ে দিচ্ছি। অনলাইন নিউজ পোর্টালের ব্যাপারে আরও বেশি সচেতন। ভুতুড়ে অনলাইন ও নিবন্ধনহীন অনলাইনের জন্য অ্যাক্রেডিটেশন ও সচিবালয়ের কার্ড দেওয়া আমরা বন্ধ করেছি।'

স্বাধীনতা থাকলেও সেটি প্রয়োগের ক্ষেত্রে সচেতন হতে হয় উলেস্নখ করে তিনি বলেন, 'আমাদের দেশের গণমাধ্যম স্বাধীনতা ভোগ করেছে। স্বাধীনতা থাকলে তা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সচেতন হতে হয়। যার হাতে অস্ত্র থাকে, তিনি সব জায়গায় গুলি করতে পারেন না। তেমনি সাংবাদিকদের হাতে কলম আছে। তিনি হচ্ছেন কলমযোদ্ধা। তার কলমটি কোথায় ব্যবহার হবে সেই বিষয়টিতেও সতর্ক থাকতে হবে।'

ওয়েজ বোর্ড না দেওয়ার বিরুদ্ধে পত্রিকার মালিক মামলা করেছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'ওয়েজ বোর্ড যাতে বাস্তবায়ন করা না হয় সেজন্য পত্রিকার মালিকরাই মামলা করেছেন। সুতরাং আমি মনে করি সমস্যা কোথায়, সেটা আপনারা জানেন। কোন মালিকরা মামলা করেছেন সেটিও আপনারা জানেন। আপনাদের ইউনিয়নের ইউনিটিও আছে। আমি আশা করব যেখানে সমস্যা, সেই সমস্যার গোঁড়ায় আপনারা হাত দিবেন।'

আইন যাদের জন্য, তারা যেভাবে চাবেন সেভাবে হবে জানিয়ে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে পার্লামেন্টের স্ট্যান্ডিং কমিটির অনেক ক্ষমতা। আমি আইনমন্ত্রী ও আইন সচিবকে অন্তত ৫০ বার তাগাদা দিয়েছি। যেকোনো আইন কমিটিতে পরিবর্তন পরিমার্জন হতে পারে।

দেশের উন্নয়নের খবরগুলো প্রচার হয় না মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'সাংবাদিক ফেডারেশনের প্রতি অনুরোধ, দেশের অনিয়ম নিয়ে যেমন সব পত্র-পত্রিকায় খবর আসতে হবে, তেমনি দেশের অগ্রযাত্রার খবরও আসতে হবে। করোনার সময়েও যে দেশ এত এগিয়ে গেল, এটা তো খবরে এলো না। লেখনীর স্বাধীনতা যেমন সমুন্নত রাখতে হবে, সেই সঙ্গে অপরের স্বাধীনতাও যেন খর্ব না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।'

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ এবং সমাজ কল্যাণবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, ভোরের আকাশ পত্রিকার সম্পাদক খালেদ ফারুকী প্রমুখ।