শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

৫ হাজার রানের কীর্তির দিনে সেঞ্চুরি মুশফিকের

ম ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ১৯ মে ২০২২, ০০:০০

মুশফিকুর রহিমের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়ে একটু-আধটু সমালোচনা হচ্ছিল। চট্টগ্রামে সমালোচকদের জবাব দিলেন তিনি। ৮১তম টেস্টে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে পাঁচ হাজার টেস্ট রানের মালিক হওয়ার দিন করলেন অষ্টম সেঞ্চুরি। দুই বছরেরও বেশি সময় পর সাদা পোশাকে তিন

অঙ্কের জাদুকরী ফিগার স্পর্শ করলেন ৩৫ বছর বয়সি ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।

ইনিংসের ১২৩তম ওভারে লংকান পেসার অসিথা ফার্নান্দোর বলে উইকেটের পেছনে খেলে দৌড়ে দুই রান নিয়ে এই মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন মুশফিক। তার এই অর্জনে সতীর্থ, টিম ম্যানেজমেন্টের সদস্যরা করতালি দিয়ে সাধুবাদ জানিয়েছেন ড্রেসিংরুম থেকে।

চট্টগ্রাম টেস্টে বুধবার চতুর্থ দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪৬৫।

তামিম-জয়ের অনবদ্য ব্যাটিংয়ের পর বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়েছেন মুশফিক (১০৫) ও লিটন (৮৮)। লংকানদের বিপক্ষে টাইগারদের লিড ৬৮ রানে। এর আগে

তামিম ইকবাল ১৩৩ ও মাহমুদুল হাসান জয় ৫৮ রানে ফিরেছেন। সাকিব আল হাসানের সংগ্রহ ২৬।

পাঁচ হাজার রানের কীর্তির দিনে সেঞ্চুরির পর ১০৫ রানে ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম। সপ্তম উইকেটে দলীয় ৪৩৯ রানের মাথায় এম্বুলদেনিয়ার লেগ স্ট্যাম্প বরাবর করা বলে সুইপ করতে চেয়েছিলেন মুশফিক। ব্যাটে-বলে সংযোগ হয়নি। সরাসরি লেগ স্ট্যাম্প ভেঙে দেয়। ২৮২ বলে চারটি চারে মুশফিকের ইনিংস থামে ১০৫ রানে। ক্রিজে নাঈম হাসানের সঙ্গী তাইজুল ইসলাম। ২০২০ সালের ২২ ফেব্রম্নয়ারি মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সপ্তম সেঞ্চুরিকে দুইশতকে নেন মুশফিক। এরও আগের সেঞ্চুরিকে রূপ দেন ডাবলে। বুধবার চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ দিন দ্বিতীয় সেশনের শেষ দিকে ২৭০ বলে চারটি চারে করলেন সেঞ্চুরি। এর আগে সকালের সেশনে করেন পাঁচ হাজার রানের কীর্তি।

গত মঙ্গলবার সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে মুশফিককে পেছনে ফেলে কিছু সময়ের জন্য সিংহাসনে বসেছিলেন তামিম ইকবাল। তার সামনেও ছিল রেকর্ডের হাতছানি। তবে পানিশূন্যতার কারণে হাতের পেশিতে টান লাগায় ১৩৩ রানের ইনিংস খেলে রিটায়ার্ড হার্ট হন তিনি। পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ হতে তিনি ১৯ রান পেছনে আছেন।

মাত্র ১৮ বছর বয়সে মুশফিকের শুরুটা হয়েছিল লর্ডসে, ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে প্রথমবার পান টেস্ট ক্যাপ। ৮১ টেস্ট খেলে সেই মুশফিকুর রহিম এমন কীর্তি গড়লেন সবার আগে, যা করতে পারেননি বাংলাদেশের কেউই।

এরপর টানা ১৭ বছর ধরে বাংলাদেশের জয়-পরাজয় কিংবা রেকর্ডের সঙ্গী এই উইকেটকিপার ব্যাটার। ২০১৬ সালে তার অধীনে ইংল্যান্ডকে প্রথবারের মতো টেস্টে হারায় বাংলাদেশ। এ ছাড়াও এর পরের বছরই মুশফিকের অধিনায়কত্বে অস্ট্রেলিয়াকে হারায় টাইগাররা।

স্বপ্নডানায় চড়ে মুশফিক প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে পাঁচ হাজার টেস্ট রানের

মালিক হলেন। বুধবার শ্রীলংকার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে এই অর্জনে নাম লিখলেন তিনি। কাকতালীয় হলো, এই চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি হাঁকান। যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়ে আটে। ৮১ ম্যাচ খেলে পাঁচ হাজারি ক্লাবে মুশফিক।

সর্বোচ্চ টেস্ট রানের মালিক হওয়ার পথে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ২০১৩ সালে গলেতে স্বাগতিক শ্রীলংকার বিপক্ষে করেছিলেন ২০০ রান, বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবার আগে। সেই লংকানদের বিপক্ষে সবার আগে পাঁচ হাজারি টেস্টের কীর্তি মুশফিকের। এরপর ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন ২০১৮ ও ২০২০ সালে মিরপুরে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানও তার, অপরাজিত ২১৯।

এই কীর্তি গড়তে চট্টগ্রামে ৬৮ রান করতে হতো মুশফিককে। বুধবার দ্বিতীয় ঘণ্টায় তার ব্যাটে রাঙা হয় নতুন ইতিহাস। দ্বিতীয় ঘণ্টার দ্বিতীয় ওভার। পেসার আসিথা ফার্নান্দোর শর্ট বল ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু তার গস্নাভসে লেগে বল যায় ডিপ ফাইন লেগে।

২০১১-২০১৭ সাল পর্যন্ত রেকর্ড ৩৪ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে মুশফিক সর্বোচ্চ সাতটি জয়ে বাংলাদেশের সফল টেস্ট অধিনায়ক। ড্র ৯টি ও হার ১৮টি। সবকিছুতেই এগিয়ে মুশফিক। এবার তামিম ইকবালকে পেছনে ফেলে সবার আগে গড়লেন অনন্য কীর্তি, আর নিজের এই অর্জনকে রাঙালেন অষ্টম সেঞ্চুরিতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে