ফেনীর পরশুরামের চিথলিয়া ইউনিয়নের সিলোনিয়া নদীতে একটি সেতুর অভাবে বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাচ্ছে আট গ্রামের অসংখ্য মানুষ।
দুই বছর আগে এলাকার যুবকরা প্রথমে বাশের সাঁকু পরে কাঠ দিয়ে সাঁকু তৈরি করে দিলেও গত ছয়মাস আগে সেটাও ভেঙ্গে গেছে। বর্তমানে পানি দিয়ে পার হতে হয় নদী এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিশু, শিক্ষার্থী, নারী পুরুষ, বৃদ্বসহ অসুস্থরা। বর্তমানে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন পার হচ্ছে স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা সিমা আক্তার জানান, বর্ষা মৌসুমে ভরা নদীতে বাঁশের সাঁকু দিয়ে পার হতে গিয়ে তাঁর ছেলে সাঁকু থেকে পড়ে পানিতে ডুবে মারা গেছে এছাড়াও এই গ্রামের চারজন শিশু মারা গেছে।
এলাকাবাসী জানায় সাবেক সংসদ সদস্য শিরীন আখতার, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন গত পনের বছর ধরে সিলোনিয়া নদীতে সেতু করে দিবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু কেউ কথা রাখেননি। এত বছর পরও সেতু না হওয়ায় শুধু মানুষ যাতায়াতে নয় পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রেও নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এ অঞ্চলের বাসিন্দারা।
সোমবার (৫ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়নের পাগলিরকুল, রাজেষপুর, নোয়াপুর, শালধরসহ প্রায় আট গ্রামের বাসিন্দাদের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম ওই সিলোনিয়া নদী।
ওই নদীর পুর্ব পাশে ধনিকুন্ডা বাজার ও উপজেলায় সদরের সাথে সংযুক্ত সড়কটি এলজিইডির অর্থায়নে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যায় রাস্তা করা হয়েছে। একই ভাবে নদীর পশ্চিম পাশেও রাস্তা করা আছে কিন্তু নেই শুধু সেতু। সিলোনিয়ার নদীতে সেতু হলে ওই এলাকার বাসিন্দারা ধনিকুন্ডা বাজারে যাতায়াত, শিক্ষার্থীরা স্কুল,কলেজ ও মাদ্রাসায় যেতে সহজ হবে এবং কি উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে।
চিথলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বলেন, সিলোনিয়া নদীতে সেতুটি নির্মাণ করা জরুরি প্রয়োজন কিন্তু সাবেক সংসদ সদস্যকে একাধিকবার অনুরোধ করলেও তিনি তা শুনেননি।
ওই এলাকার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্বা ছিদ্দিকুর রহমান জানান জন্মের পর থেকে কষ্ট করে যাচ্ছি গত পনের বছর ধরে জনপ্রতিনিধিরা শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছে কেই সেতু করে দেয়নি। সাঁকু ভেঙ্গে যাওয়ায় গত কয়েকমাস ধরে নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে পারে না এই এলাকার শিক্ষার্থীরা। উৎপাদিত কৃষি পণ্যের সঠিক মূল্য ও বাজারজাত করতে পাচ্ছে না কৃষকরা। চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শতাধিক শিক্ষার্থীসহ অসংখ্য মানুষ।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মরত একরাম বলেন, ‘এই নদীতে সেতু না থাকায় সারা বছর আমাদের খুবই কষ্ট করতে হয়। জরুরি ভিত্তিতে সেতু নির্মাণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এলজিইডির পরশুরাম উপজেলা প্রকৌশলী এস এম শাহ আলম ভুইয়া বলেন, সিলোনিয়ার নদীতে বিশ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করতে হবে। সেতুর জন্য আড়াই কোটি টাকা বরাদ্বের জন্য ইতিপুর্বে একাধিকবার এলজিইডির ফেনী, নোয়াখালি লক্ষিপুর উন্নয়ন প্রকল্পে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল কিন্তু বরাদ্ব পাওয়া যায়নি। উপজেলা প্রকৌশলী আরো বলেন, ওই সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেতুর কারনে ওই ইউনিয়নের বিশাল একটি জনগোষ্টি চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সেতুটি নির্মাণ হলে ওই এলাকার শিক্ষার্থীরা ধনিকুন্ডা বাজার, শালধর স্কুল, মাদ্রাসা, রাজষপুর স্কুল, মাদ্রাসা ও রাজষপুর বাজারে যাতায়াতের সুবিধা হবে।
যাযাদি/এসএস