রংপুরের মিঠাপুকুরে একটি দাখিল মাদ্রাসার মাঠ দিয়ে ফসলি জমির কাজ শেষ করে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে এক বিধবা নারীকে মুখ চেপে ধরে মাদ্রাসার শ্রেণিকক্ষের ভিতরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ওই দাখিল মাদ্রাসাটির নৈশ প্রহরীর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানায় একটি লেখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই বিধবা।
ওই নারীর অভিযোগ- তিনি স্বামী মারা যাওয়ার পর মিঠাপুকুর উপজেলার ১৪ নং দূর্গাপুর ইউনিয়ন্থ জয়ন্তীপুর গ্রামে স্বামীর বাড়িতে বসবাস করেন। জয়ন্তীপুর দাখিল মাদ্রাসার পিছনে তার আবাদি জমি রয়েছে। ঘটনার দিন শুক্রবার (১৯-এপ্রিল) তিনি তার বোরোধানের জমিতে পরিচর্যা শেষে বাড়ি ফেরার সময় সন্ধ্যা আনুমানিক ৬ঃ৫০ মিনিটে জয়ন্তীপুর দাখিল মাদ্রাসা মাঠে পৌঁছামাত্র ওই দাখিল মাদ্রাসার নাইট গার্ড সাইফুল ইসলাম (৫২) তাকে মুখ চেপে ধরে মাদ্রাসার একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করেন এবং শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেন।পরে ওই নারীর চিৎকারে মাদ্রাসার মাঠের কর্ণারে অবস্থানরত কয়েকজন যুবক বিষয়টি বুঝতে পেরে তাদের উভয়কেই একটি কক্ষে আটক রাখে এবং ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে মূহুর্তেই শতশত লোকজন মাদ্রাসায় ভিড় জমায়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাইফুলের দাবি, মাদ্রাসা মাঠে বহিরাগত যুবকরা রাতে মাদকসেবন করতেন।। মাদক সেবনে বাঁধা দেওয়ায় স্থানীয় মাদকসেবি যুবকরা তার উপর ক্ষীপ্ত ছিলো। ঘটনার দিন ওই যুবকদের চিৎকার চেঁচামেচিতে ভয়ে ওই নারী শ্রেণিকক্ষের একটি রুমে ঢুকে যায়। আমি তাকে বাঁচাতে গেলে আমাকেও তারা ভিতরে আটকিয়ে বাহির থেকে দরজা বন্ধ করে এমন অপবাদ রটায়।
জয়ন্তীপুর দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি-সাইদুর রহমান তালুকদার জানান, আমরা তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো। এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই ম্যানেজিং কমিটির একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। জয়ন্তীপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার সফিউল আজম জানান, ঘটনাটি আমি শুনেছি। প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ঘটনার সঠিক বিষয়টি জানতে পারছিনা। তবে নৈশপ্রহরী সাইফুল ছেলেটা ভালো নয়। এর পূর্বেও নারীঘটিত কেলেঙ্কারি ছিল। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে এমন কাজ মেনে নেওয়া হবেনা।লেখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ ইতিমধ্যেই বিষয়টি ধামাচাপার পর্যায়ে গিয়েছে। মানবাধিকার কর্মী বেলায়েত হোসেন বাবুর দাবি, মিঠাপুকুরে শিশু ধর্ষণ সহ বিভিন্ন অপরাধ বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হওয়ার পরে তুলনামূলক ভাবে মামলার সংখ্যা কম। আর এতে সম্ভবত অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে এবং অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে।
যাযাদি/এসএস