শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের দিকে যাচ্ছে সিরিয়া :যুক্তরাষ্ট্র

ম ‘বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা শেষ অঞ্চলে আগ্রাসন বেপরোয়া উত্তেজনা ছড়িয়ে দেবে’
যাযাদি ডেস্ক
  ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা শেষ ঘঁাটি ইদলিব প্রদেশে দেশটির সরকারি বাহিনীর রাসায়নিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন নতুন নিয়োগ পাওয়া সিরিয়া বিষয়ক মাকির্ন প্রতিনিধি জেমস জেফরি। তিনি বলেছেন, ‘বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা শেষ অঞ্চলে পূবার্নুমিত আগ্রাসন বেপরোয়া উত্তেজনা ছড়িয়ে দেবে।’ তবে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে যেকোনো ধরনের রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ও তার অনুগত বাহিনী। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টাসর্

ইদলিব এখন দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর শেষ আশ্রয়স্থল। সিরিয়ার অন্যান্য প্রদেশে বাশার সরকারের কাছে পরাজিত হয়ে বিদ্রোহীরা সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। সেখান থেকে তাদের হঠাতে গত মঙ্গলবার থেকে যুদ্ধবিমান দিয়ে হামলা শুরু করেছে সিরিয়া ও তাদের প্রধান মিত্র রাশিয়া। এখন সেখানে স্থল অভিযানের প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া ইদলিবে প্রায় ৩০ লাখ সিরীয় নাগরিক বাস করে। চারিদিক দিয়ে ঘেরাও হয়ে পড়েছে ইদলিবের বাসিন্দা ও সেখানে আশ্রয় নেয়া বিদ্রোহীরা। ফলে সেখানে নতুন করে বহু লোক হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই বহু লোক পরিবার নিয়ে ইদলিব থেকে যাচ্ছে।

জেমস জেফরি দাবি করেন, রাসায়নিক হামলার প্রস্তুতির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে কাছে প্রচুর প্রমাণ আছে। তিনি সতকর্ করে বলেন, আসাদ সরকার এমন কিছু করলে মারাত্মক উত্তেজনা সৃষ্টি হবে। উল্লেখ্য, গত ১৭ আগস্ট জেমস জেফরিকে মাকির্ন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সিরিয়া-বিষয়ক বিশেষ উপদেষ্টা ঘোষণা করা হয়। নিয়োগ পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার দেন তিনি। সে সময় জেফরি সতকর্ করে বলেন, ইদলিবে বড় ধরনের অভিযান ও রাসায়নিক হামলা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি খুব নিশ্চিত এসব সতকর্তা দেয়ার পেছনে খুব শক্ত ভিত্তি আছে। যেকোনো আক্রমণই আমাদের জন্য আপত্তিযোগ্য। এ ধরনের হামলাকে বেপরোয়া বিবেচনা করি আমরা।’ জেফরি মনে করেন, শাসক হিসেবে সিরিয়ায় বাশারের কোনো ভবিষৎ নেই। তবে তাকে উৎখাত করার দায়িত্ব ওয়াশিংটনের ওপর বতার্য় না। তিনি জানান, সিরিয়ায় রাজনৈতিক পটপরিবতর্ন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করবে।

এর আগে, গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স যৌথ বিবৃতিতে পুনরায় রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করলে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কড়া হুশিয়ারি দিয়েছিল। আন্তজাির্তক ক‚টনীতিকরা ইদলিবে হামলার বিষয়ে সিরিয়াকে বারবার সতকর্ করে আসছেন। সেখানে হামলা হলে মারাত্মক মানবিক বিপযর্য় সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি নতুন করে ইউরোপসহ পাশ্বর্বতীর্ রাষ্ট্রগুলোতে শরণাথীর্র স্রোত নামবে। তুকির্ প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান রাশিয়ার সঙ্গে ইদলিব বিষয়ে কয়েক দফা আলোচনা করেছেন। সম্ভাব্য ইদলিব হামলার ধ্বংসযজ্ঞ ও মানবিক বিপযর্য় নিয়ে তুরস্ক ব্যাপক উদ্বিগ্ন।

বিদ্রোহীদের সবের্শষ শক্ত ঘঁাটি ইদলিবের ভাগ্য কী হবে, তা শুক্রবার তেহরানে অনুষ্ঠিত বৈঠকের ওপর নিভর্র করছে। বাশারের মিত্র রাশিয়া ও ইরান এবং বিদ্রোহীদের মিত্র তুরস্কের মধ্যে এ বৈঠক হয়েছে। বৃহস্পতিবার জেফরি বলেন, ‘রাশিয়া যদি তুকির্ আলোচকদের সঙ্গে সমঝোতায় আসতে চায়, তবে আমরা কোনো একটা পথ খুঁজে বের করব।’

উল্লেখ্য, সিরিয়ায় বাশারের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া বিক্ষোভ থেকে যে সংঘষের্র শুরু, তা পরবতীর্ সময়ে বহুধা বিভক্ত হয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, তুরস্ক, ইরান ও ইসরাইলের মতো বিদেশি শক্তিগুলো যুদ্ধরত ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। রাশিয়া দীঘির্দন ধরে সমথর্ন করছে বাশার সরকারকে। নিজের সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে অস্ত্র পযর্ন্ত সবই রাশিয়া দিয়েছে বাশারের সমথের্ন। এমন কি জাতিসংঘে ক‚টনৈতিক সমথর্নও নিশ্চিত করেছে সিরিয়ার জন্য। ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে রাশিয়া দেশটিতে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। তারা ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের ভাষায়, এসব সন্ত্রাসী আইএসের সদস্য। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছে, রাশিয়া আইএস দমনের অজুহাতে তাদের সমথির্ত বিদ্রোহীদের ওপর বিমান হামলা করছে। অন্যদিকে, রাশিয়াও অভিযোগ করেছে, যুক্তরাষ্ট্র আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধকে এমনভাবে ব্যবহার করছে, যেন রাশিয়া ও সিরীয় বাহিনীর অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়। রাশিয়ার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্ব›দ্বী ইরানও সমথর্ন করে বাশারকে।

সিরিয়া যুদ্ধের শুরু থেকেই তুরস্ক বাশার-বিরোধীদের সমথর্ন করছে। কুদির্ ছাড়া অন্যান্য সরকারবিরোধী শক্তি; যেমন ‘ফ্রি সিরিয়ান আমির্র’ সঙ্গে তারা বাশার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ জোটের অংশ তুরস্ক আইএসের অবস্থানের ওপর যেমন হামলা করেছে, তেমনি একতরফাভাবে কুদিের্দর অবস্থানের ওপরও হামলা করেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<11293 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1