শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
কার্যকর পদক্ষেপ নিন

স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পোশাকশ্রমিকরা

নতুনধারা
  ১০ জুলাই ২০২০, ০০:০০

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা খোলার কথা থাকলেও অনেক কারখানাই কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে মালিকরা চালু করেছে। এতে শ্রমিক ও তাদের পরিবার চরমভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। ফলে যতই দিন যাচ্ছে দেশের তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের মধ্যে বাড়ছে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) আক্রান্তের সংখ্যা। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, এ পর্যন্ত প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে ১৯৩টি কারখানার ৪৫৬ জন পোশাক শ্রমিক সংক্রমিত হয়েছেন। আর আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬ জন। যা খুবই উদ্বেগজনক। যদি কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়া হয় তবে, এই আক্রান্ত ও মৃতু্যর সংখ্যা দ্রম্নত বাড়বে এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। বিজিএমইএর তৈরি প্রটোকল বা স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী কারখানা চালানোর নির্দেশের পরেও কোনোভাবেই সংক্রমণ ঠেকানো যায়নি। বিজিএমইএর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ দিন দিন বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে কোনো পোশাক শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হলে দ্রম্নত চিকিৎসা দেয়ার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আক্রান্ত শ্রমিকের তথ্য দেয়ার জন্য চালু করা হয়েছে হটলাইন। পাশাপাশি চারটি জোন ভাগ করে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া যে শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন তাকে এবং ওই শ্রমিকের সংস্পর্শে আসা অন্যদেরও ছুটিতে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হচ্ছে।

এখানে বিশেষভাবে উলেস্নখ্য, গত ২৫ এপ্রিল থেকে ধাপে ধাপে চালু হয়েছে তৈরি পোশাক কারখানাগুলো। প্রথম দিকে সাভার, গাজীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা আক্রান্ত হয়েছিল, আর এখন আক্রান্ত হচ্ছে ব্যাপকভাবে। বিদেশি ক্রয়াদেশ থাকা সাপেক্ষে বর্তমানে সব কারখানাই চালু রয়েছে, তবে তাতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য নিরাপত্তা ইসু্যগুলো পালন করা হচ্ছে কি না তা তদারকিতে কাজ করছে অন্তত ছয়টি দল। যে সব শ্রমিক গ্রামে গিয়েছিল তাদের মধ্যে অনেকেই বহন করে নিয়ে এসেছে করোনাভাইরাস। ফলে সুস্থ শ্রমিকদের মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা আরও ঘনীভূত হয়। এর ফল এখন সংক্রমণের মাত্রা দেখে বোঝা যাচ্ছে। এর দ্বারা এটাই প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত হয়, কারখানাগুলো প্রটোকল কিংবা স্বাস্থ্যবিধি মান্য করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতার দায় মালিকপক্ষকেই নিতে হবে। এ মধ্যে আবার শ্রমিক ছাঁটাই হচ্ছে। অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। খোলা থাকলেও অনেক কারখানা শ্রমিকদের বেতন দিতে পারছে না। এমন পরিস্থিতি কোনোভাবেই সুখকর নয়। করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে শ্রমিক ছাঁটাই হলে তা 'মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা' হবে মন্তব্য করে কারখানা মালিকদের মানবিক দিক বিবেচনা করে শ্রমিকদের প্রতি সদয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আমরাও তাই মনে করি। সুতরাং শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে তাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা।

মনে রাখতে হবে, তৈরি পোশাকশিল্প দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছে, পাশাপাশি মালিকরাও বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়েছেন এদেরই অক্লান্ত পরিশ্রমের বিনিময়ে। যদিও করোনাকালে এই শিল্পের অবস্থা ভালো নয়। তারপরেও যাদের শ্রমে-ঘামে এই শিল্প দাঁড়িয়ে আছে, বিশ্বে সুনাম কুড়িয়েছে, তাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বা সুরক্ষা মালিকদেরই নিশ্চিত করতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<105302 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1