শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বৈঠক

ইতিবাচক ফল বয়ে আনুক
নতুনধারা
  ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৮:১৪

বাংলাদেশ-ভারত প্রতিবেশী দেশ। দীঘির্দনের বন্ধু। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত বাংলাদেশকে সাহায্য করেছিল। ভারতের সহযোগিতা না পেলে এত দ্রæত সময়ে আমরা স্বাধীনতা পেতাম না। তবে দুই দেশের সীমান্ত সমস্যা দীঘির্দনের। এই সমস্যার কারণে দুই দেশের মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়েছে বহুবার। অতীতে ভারত আমাদের আশ্বস্ত করেছে কিন্তু বিদ্যমান সমস্যার সমাধান হয়নি। বিশেষ করে ফেলানি হত্যা বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।

এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে প্রতিরোধমূলক যৌথ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে সম্মত হয়েছেন বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। ইচ্ছাকৃত সীমান্ত লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে নিজ নিজ দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অসতকর্তাবশত সীমান্ত অতিক্রমকারী নাগরিকদের নিজ দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে হস্তান্তরের কথা জানিয়েছেন তারা। বডার্র গাডর্ বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় বডার্র সিকিউরিটি ফোসের্র (বিএসএফ) মহাপরিচালক পযাের্য় ৪৭তম সীমান্ত সম্মেলনে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ৩ সেপ্টেম্বর ভারতের নয়াদিল্লিতে শুরু হওয়া এ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করেন। অন্যদিকে, বিএসএফ মহাপরিচালক শ্রী কে কে শমার্র নেতৃত্বে ২০ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধি দল সম্মেলনে অংশ নেন।

ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মতে চলতি বছরে সীমান্তে একজনেরও মৃত্যু হয়নি। এর কারণ সীমান্তে হতাহতের ঘটনা এড়াতে বিএসএফ নন-লিথেল অস্ত্র ব্যবহার করছে। আর বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) ধারণা বাংলাদেশে জীবনযাত্রার মানের অব্যাহত উন্নতির কারণে ব্যাপক হারে ভারতে চলে যাওয়ার ঘটনা অনেক দিন ধরেই বন্ধ।

অবশ্য বাংলাদেশের দুটি বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং অধিকারের তথ্যানুসারে চলতি বছরের জুন পযর্ন্ত বিএসএফের নিযার্তনে ৩ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। চলতি বছরে দুই দেশের দীঘর্ সীমান্তে অবৈধ পারাপারের চেষ্টায় বাংলাদেশের ১ হাজার ৫২২ জন নাগরিককে আটক করে বিজিবির হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। তবে এটা সত্য সীমান্তে গরু পাচারের ঘটনা অনেক কমে গেছে। এর প্রধান কারণ বাংলাদেশও গরুর বিষয়ে স্বনিভর্র হয়ে উঠছে। বাংলাদেশের সীমান্তবতীর্ এলাকায় কোথাও কোনো ভারতবিরোধী গোষ্ঠীর অস্তিত্বও নেই এ কথাও উঠে এসেছে সম্মেলনে। তবে ভারতের দুশ্চিন্তার একটা বড় কারণ জাল নোটের কারবার। বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয় ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকের আমদানি। এসব অপরাধ কমিয়ে আনতে হবে। ইচ্ছাকৃত সীমান্ত লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে নিজ নিজ দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সীমান্তে উন্নয়নমূলক অধিকাংশ কাজ বাস্তবায়নের ব্যাপারে দুই দেশই আশাবাদী। উভয়পক্ষ এর পারস্পরিক সুসম্পকর্ বৃদ্ধির লক্ষ্যে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ ও যৌথ প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।

আমরা মনে করি এই বৈঠকের ফলে দুদেশের সীমান্তে শান্তি রক্ষিত হবে। সীমান্ত হত্যা স্থায়ীভাবে বন্ধ হবে। পাশাপাশি সীমান্ত চোরাচালানও একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে। বিশেষ করে ভারতীয় জাল মুদ্রা, মাদক, অস্ত্র, স্বণর্ পাচারসহ সব ধরনের চোরাচালান বন্ধে উভয় দেশকে সক্রিয় হতে হবে। আমরা বিশ্বাস করতে চাই একে অন্যের গৃহীত পদক্ষেপ ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে। দূর করতে হবে সব ধরনের সন্দেহ-অবিশ্বাস। সীমান্তে ভবিষ্যতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটুক এটা আমরা কোনোভাবেই প্রত্যাশা করি না। দুদেশের সদিচ্ছা ও কাযর্কর উদ্যোগই কেবল পারে সীমান্তে শান্তি ফিরিয়ে আনতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<11349 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1