শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মার ভাঙনে সবর্স্বান্ত মানুষ কাযর্কর উদ্যোগ নিতে হবে

নতুনধারা
  ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

নদীভাঙন নদীমাতৃক বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা। নদীভাঙনের ফলে বাড়ি-ঘর আবাদি জমি গাছপালাসহ নানা ধরনের গুরুত্বপূণর্ স্থাপনা অবলীলায় বিলীন হয়ে যায়। ভাঙন কবলিত নিঃস্ব মানুষই কেবল জানে কী তার মমের্বদনা। নদীর এ ক‚ল ভাঙে ও ক‚ল গড়ে এই তো নদীর খেলা। দেশের প্রধান প্রধান নদীগুলো সব সময়েই ভাঙনের খেলায় মেতে ওঠে প্রকৃতির নিষ্ঠুর নিয়মে। তবে পদ্মার ভাঙন সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। পদ্মার ভাঙন মুহূতের্ সবকিছু বিলীন করে দেয়। এই কারণে বলা হয় সবর্নাশা পদ্মা নদী। পদ্মার পানি প্রবাহের হু হু শেঁা শেঁা ভেঁা ভেঁা শব্দ কত ভয়ঙ্কর তা কেবল পদ্মা পারের মানুষই জানে।

এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, পদ্মা নদীর ভাঙনে ১৯৬৭ সাল থেকে ৬৬ হাজার হেক্টরেরও (২৫৬ বগর্মাইল) বেশি জমি নদীগভের্ বিলীন হয়ে গেছে। যা প্রায় যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম শহরগুলোর একটি-শিকাগোর সমান। ২০১৮ সালের আগস্টে মাকির্ন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (নাসা) আথর্ অবজারভেটরি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। যা রীতিমতো বিস্ময়কর।

গবেষকরা মনে করেন, পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙনের দুটি প্রধান কারণ রয়েছে। প্রথমত, এটি প্রাকৃতিক, মুক্ত প্রবাহিত নদী সুরক্ষার তেমন ব্যবস্থা নেই। দ্বিতীয়ত, নদীর তীরে বড় বালুচর রয়েছে যা দ্রæতই ভেঙে যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা স্যাটেলাইটের ছবিতে পদ্মা নদীর প্রস্থ, গভীরতা, গঠন এবং সামগ্রিক আকারের পাথর্ক্য উল্লেখ করে ভাঙন পরিমাপ করে। পদ্মা সেতু নিমাের্ণ নদীর ভাঙন কিছু হুমকি সৃষ্টি করতে পারে এমন উদ্বেগের কথাও ওই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। পদ্মা সেতু নিমাের্ণর ফলে জমি প্রকৃতপক্ষে স্থির হতে পারে এবং এটি শেষ হওয়ার পর নদীভাঙন হ্রাস পেতে পারে এমন ধারণাও করা হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোর, পদ্মার ভাঙনের হার প্রকৃতপক্ষে হ্রাস পেয়েছে। নদীটি বক্ররেখার পরিবতের্ জমির মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে ভাঙন থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব।

অন্য এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় অব্যাহত পদ্মার ভাঙনে সচ্ছল ও গরিব পরিবারগুলো এবারও নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। কেবল শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা নয় ভাঙনের কবলে পড়েছে ঢাকার দোহার উপজেলার একটি বড় অংশ এবং মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা। যাদের একসময়ে ছিল বাড়ি, ছিল গাড়ি; তারা সবাই এখন ভূমিহীনদের কাতারে। বতর্মানে কেউ আত্মীয়স্বজন, কেউ অন্যের জমিতে, আবার কোনো কোনো পরিবার রাস্তার পাশে খুপরি ঘর তুলে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। তাদের দেখার কেউ নেই। সরকারকে এ ব্যাপারে মনোযোগ দিতে হবে।

আমরা মনে করি পদ্মাভাঙনকে কেবল প্রকৃতির ওপর ছেড়ে দিলে চলবে না। ভাঙন রোধে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে কাযর্কর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে পানি উন্নয়ন বোডের্ক সক্রিয় হতে হবে সবচেয়ে বেশি। নদীর গতিপথ পরিবতর্ন করতে পারলে ভাঙন রোধ করা সম্ভব। সেজন্য সরকারকে বড় ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। অবশ্য ইতোমধ্যে সরকার ভাঙন রোধে কিছু কিছু উদ্যোগ নিয়েছে যা প্রশংসনীয়। এই উদ্যোগের ক্ষেত্রটি আরও বাড়াতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<12612 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1