এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বিভিন্ন খাতের উন্নয়নের মধ্য দিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া নানা ধরনের সূচকেও দেশের অগ্রগতি দৃশ্যমান। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল যে, বিশ্বব্যাংকের বিচারে গত এক বছরে ব্যবসার পরিবেশের উন্নয়ন ঘটানো সেরা ২০টি দেশের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। যা সন্দেহাতীতভাবেই ইতিবাচক। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, বর্তমান বিশ্ব প্রতিযোগিতাপূর্ণ। দেশের সার্বিক সমৃদ্ধি অর্জনের প্রশ্নে প্রতিযোগিতা করেই এগিয়ে যেতে হবে। সঙ্গত কারণেই দেশকে সমৃদ্ধির ধারায় এগিয়ে নিতে হলে ব্যবসার অগ্রগতি অপরিহার্য বিষয়। তাই ব্যবসার উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে ব্যবসার পরিবেশের বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সঙ্গত কারণেই যখন বিশ্বব্যাংকের বিচারে গত এক বছরে ব্যবসার পরিবেশের উন্নয়ন ঘটানো সেরা ২০টি দেশের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ; তখন তা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে বলেই প্রতীয়মান হয়।
জানা গেছে, ব্যবসাবাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে এই উন্নতি হয়েছে। এ ছাড়া এই তালিকার অন্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান ও মিয়ানমার। আরও আছে চীন, আজারবাইজান, বাহরাইন, জিবুতি, জর্ডান, কেনিয়া, কসোভো, কুয়েত, কিরগিজ প্রজাতন্ত্র, নাইজেরিয়া, কাতার, সৌদি আরব, তাজিকিস্তান, টোগো, উজবেকিস্তান ও জিম্বাবুয়ে। তবে এ ক্ষেত্রে আমলে নেয়া দরকার, বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, আগামী ২৪ অক্টোবর প্রকাশ করা হবে সেরা ব্যবসাবান্ধব দেশের মূল তালিকা। আর এতে বাংলাদেশেরর্ যাংকিং প্রকাশ করা হবে। 'ডুয়িং বিজনেস-২০২০' প্রতিবেদন প্রকাশের আগেই বৈশ্বিক এ ঋণদাতা সংস্থার ওয়েবসাইটে শীর্ষ দেশগুলোর তালিকা প্রকাশ করা হয়।
আমরা বলতে চাই, দেশের ব্যবসার পরিবেশের ক্ষেত্রে যে অগ্রগতি হচ্ছে তা এই প্রতিবেদনের মধ্যে দিয়েও স্পষ্ট হয়। সঙ্গত কারণেই সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে এই ধারাহে অব্যাহত রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখা। বলা দরকার, তথ্যানুযায়ী, এ দেশে ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবসা শুরুর প্রক্রিয়া, বিদু্যৎ সংযোগ ও ঋণপ্রাপ্তির সুযোগ আগের চেয়ে সহজ হয়েছে। পাশাপাশি নতুন কোম্পানি নিবন্ধনে খরচ কমেছে। ডিজিটাল সনদ পেতেও কোনো ফি দিতে হচ্ছে না। শেয়ার ক্যাপিটালের ভিত্তিতে কমানো হয়েছে রেজিস্ট্রেশন ফি। রাজধানী ঢাকায় নতুন বিদু্যৎসংযোগ পেতে জামানত কমিয়ে অর্ধেক করা হয়েছে। এ খাতের জনবল বৃদ্ধি ও ডিজিটালকরণে বিনিয়োগ বেড়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ঋণতথ্য বু্যরোর (সিআইবি) কার্যক্রমের আওতা বেড়েছে এবং ঋণের পাঁচ বছরের তথ্য সহজেই পাওয়া যায় বলেও উলেস্নখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। আমরা মনে করি, এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের মধ্য দিয়ে যেমন ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি হয়েছে এটা স্বস্তিকর ও ইতিবাচক বিষয়, তেমনিভাবে এই ধারাকে এগিয়ে নিতেও সংশ্লিষ্টদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার কোনো বিকল্প নেই।
সর্বোপরি আমরা বলতে চাই যে, দেশের অর্থনীতি এগিয়ে চলেছে এবং এখন ব্যবসার পরিবেশের উন্নয়নের বিষয়টিও সামনে এলো, ফলে দেশেকে সমৃদ্ধির ধারা আরো বেশি এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সংশ্লিষ্টদের ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে যে কোনো ধরনের সংকট থাকলে তা অগ্রগাধিকার ভিত্তিতে নিরসন করতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, যত বেশি ব্যবসাবান্ধব পরিরেবশ সৃষ্টি হবে ততই তা দেশের অর্থনীতিকে যেমন শক্তিশালী করবে, তেমনিভাবে উদ্যোক্তা তৈরি হবে এবং ব্যবসার পথ প্রশস্ত হবে। সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে দেশকে
অগ্রগতির ধারায় এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্টরা সব ধরনের প্রচেষ্টা বজায় রাখুক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।