শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আবারও অস্থির পেঁয়াজের বাজার

দ্রম্নত কার্যকর উদ্যোগ নিন
নতুনধারা
  ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

রাজধানীর বাজারগুলোতে রোববার হঠাৎ করে কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা। সোমবার পণ্যটির দাম আরও এক দফা বেড়ে ১২০ টাকা হয়েছে। কদিন আগে একইভাবে দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল পণ্যটির। বারবার পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ভোক্তারা। তারা বলছেন, পেঁয়াজের বাজারে কারসাজি অব্যাহত রয়েছে। এ ক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়ীরা মুনাফা লুটলেও সাধারণ ভোক্তাদের নাভিশ্বাস বাড়ছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, এ মাসের শেষে দাম স্বাভাবিক হয়ে আসবে। সোনামসজিদে গত দুদিনে ৮শ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এটা আশার খবর।

আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কি কম? বলা হচ্ছে, বাজারে সংকট থাকায় হু হু করে বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। যা মোকাবিলায় সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছে। একইসঙ্গে টিসিবি খুচরা ৪৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে। বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা গেলে প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ দেশেই উৎপাদন করা সম্ভব। তখন আর বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে না। আমরা দীর্ঘদিন থেকেই লক্ষ্য করে আসছি, আমদানিকৃত পেঁয়াজের আগ্রাসনের কারণে বাংলাদেশের কৃষক পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য পান না। অন্যদিকে প্রয়োজনীয় সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় শতকরা ৩০ ভাগ পচে নষ্ট হয়ে যায়।

উলেস্নখ্য, ভারতে বছরে দুইবার পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। একবার শীতকালে আর একবার গ্রীষ্মকালে। বাংলাদেশে শীতকালেই অধিকাংশ পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়। গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশে তেমন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় না বললেই চলে। যদিও গ্রীষ্মকালে চাষ করার মতো উন্নতজাতের বারি পেঁয়াজ-২ ও বারি পেঁয়াজ-৫ নামের দুটি উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে মসলা গবেষণা কেন্দ্র। ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ তেমন জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি। আমরা মনে করি, পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতা কমাতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সেদিকেই বিশেষ মনোযোগ দেয়া উচিত।

পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে নিম্ন আয়ের মানুষের এখন করুণ অবস্থা। পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধিতে উৎপাদকারী কৃষকের কোনো লাভ হচ্ছে না। তাদের ঘরে এখন কোনো পেঁয়াজ মজুত নেই। দেশি পেঁয়াজ মজুত রয়েছে মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ী ও মজুতদারদের গুদামে। তারা বিশেষ ব্যবস্থায় দেশি পেঁয়াজ কৃষকের কাছ থেকে কিনে মজুত করে রেখেছেন।

আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, পেঁয়াজ নিয়ে ব্যবসায়ীদের কারসাজি আর কতদিন চলবে। এর আগেও তারা পেঁয়াজ ও চিনি নিয়ে এমন কারসাজি করেছিল। তখন পেঁয়াজের দাম উঠেছিল ১৩০ টাকা কেজি। এবারও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এক কেজি পেঁয়াজের দাম যদি ১২০ টাকা হয় তা হলে স্বল্প আয়ের মানুষ পেঁয়াজ কিনবে কী করে? যে করেই হোক, সরকারকে দ্রম্নত বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তবে সবার আগে অসৎ ও অতিমুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। তাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<71272 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1