বর্তমান ফেব্রম্নয়ারি মাস, এই ফেব্রম্নয়ারি মাস ঐতিবাহী মাস, ঐতিহাসিক মাস, ভাষা-শহিদের মাস। এই মাসে শহিদদের স্মরণে একটি গান আমার মনে পড়ে-
সালাম, সালাম হাজার সালাম।
শহিদ ভাইয়ের স্মরণে।
১৯৫২ সালে ২১ ফেব্রম্নয়ারি ভাষা আন্দোলনের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা ও স্মৃতি আজও বাঙালি জাতির হৃদয়ে প্রবাহমান। বাংলা ভাষাকে বাস্তবায়ন ও রক্ষার জন্য অনেক আগে থেকেই সুনামধন্য ব্যক্তিরা চেষ্টা ও সমর্থন করেছিলেন। যেমন- ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, ড. শহীদুলস্নাহ, বদরুদ্দীন উমর এবং আরও অনেকে।
৪৭-এর জুলাই মাসে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. জিয়াউদ্দীন বলেছিলেন, রাষ্ট্র ভাষা হতে হবে উর্দু, কিন্তু বঙ্গবন্ধু বললেন 'না বাংলা', তাই আমি মনে করি বঙ্গবন্ধুই একমাত্র ভাষা আন্দোলনের দ্রষ্টা এবং শ্রষ্টা। ৪৭ সালের পাকিস্তানের করাচিতে গণভবনে ভাষাবিষয়ক অধিবেশন শুরু হলে উর্দুর পরিবর্তে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা বাংলা প্রস্তাব করেন ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। পাকিস্তান সরকার তার প্রস্তাবে কোনো প্রকার সমর্থন না দিয়ে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা উর্দুই গৃহিত করেন। ১৯৪৮ সালের মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় আসেন। এটি তার জীবনের প্রথম এবং শেষ সফর। তিনি ১৯৪৮ সালের একুশে মার্চ ঢাকার রেডকোর্স ময়দানে বিশাল সমাবর্তন জনসভায় বাংলার ছাত্র-জনতার অনুভূতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন না করে বাংলার ছাত্র-জনতার অনুভূতিকে আঘাত করে ঘোষণা দিয়েছিলেন উর্দু এবং উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা। সঙ্গে সঙ্গে ছাত্র-জনতা আওয়াজ তুলে ছিল 'নো নো, ইউ ওয়ান্ট বাংলা লেঙ্গুয়েজ' অর্থাৎ আমরা বাংলা ভাষা চাই। তার পর থেকে শুরু হয় সর্বদলীয় রাষ্ট ্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের ডাকে ঢাকায় তীব্র ভাষা আন্দোলন।
আন্দোলন চলতে চলতে ঘনিয়ে এলো ২১ ফেব্রম্নয়ারি ওই দিনেই বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠার জন্য ছাত্র-জনতা মিছিল করে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার চেষ্টা করলে পুলিশ মিছিলের ওপর গুলি চালায়। সঙ্গে সঙ্গেই ছালাম বরকত, রফিক জব্বার শহিদ হন। বাংলা ভাষা শহিদের আত্মাহুতির ফসল হিসেবে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।