শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
সড়ক নিরাপদ হবে কবে?

১৩ জনের মৃতু্য

নতুনধারা
  ২৩ মার্চ ২০২০, ০০:০০

সড়কে প্রাণ ঝরছেই। একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে একইসঙ্গে ঝরে যাচ্ছে তরতাজা প্রাণ। সঙ্গত কারণেই সৃষ্ট পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগের এবং ভয়ানক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে তা আমলে নেওয়ার বিকল্প নেই। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় ট্রাক ও হিউম্যান হলারের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৩ জনের মৃতু্য হয়েছে। তথ্য মতে, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার চুনতি এলাকায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রামের পুলিশ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম অভিমুখী লবণবাহী একটি ট্রাকের সংঘর্ষে বিপরীত দিক থেকে আসা হিউম্যান হলারটির (স্থানীয়ভাবে ম্যাজিক গাড়ি নামে পরিচিত) মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ১০ জনের এবং পরে আরও তিনজনের মৃতু্য হয়।

প্রসঙ্গত আমরা বলতে চাই, যখন সড়ক পথে দুর্ঘটনার এমন চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে- তখন এই পরিস্থিতি কতটা ভয়ঙ্কর বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রতিনিয়ত সড়কে কোথাও না কোথাও দুর্ঘটনা ঘটছে এবং মানুষ চলে যাচ্ছে না ফেরার দেশে। ফলে সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেওয়া দরকার যে, মৃতু্যর এই বিভীষিকা কতটা ভয়ঙ্কর। পরিস্থিতি এমন, যেন সড়ক পথ একটা মৃতু্যর ফাঁদ! আমরা মনে করি, সামগ্রিক বাস্তবতা পর্যবেক্ষণ করে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার দুর্ঘটনার কারণগুলো আমলে নেওয়া এবং সেই মোতাবেক কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা। নানা ধরনের অব্যবস্থাপনা ও বেপরোয়া গতির কাছে হারিয়ে যাচ্ছে মানুষের জীবন, গণপরিবহণে অসুস্থ প্রতিযোগিতা এবং রেষারেষির কারণেও দুর্ঘটনা ঘটছে- যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।

প্রসঙ্গত আমরা বলতে চাই, সারাদেশে গত বছর ৫ হাজার ৫১৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে তথ্য প্রকাশিত হয়েছিল, যেসব ঘটনায় ৭ হাজার ৮৫৫ জনের মৃতু্য হয়, আহত হয় ১৩ হাজার ৩৩০। জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছিল বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এ ছাড়া এমন বিষয়ও জানা গেছে যে, ২০১৯ সালের সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ছিল আগের বছর ২০১৮ সালের প্রায় সমান। আমরা মনে করি, এই তথ্য-উপাত্ত যেমন আমলে নিতে হবে, তেমনি সড়ক দুর্ঘটনা রোধে করণীয় নির্ধারণপূর্বক তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে।

এ কথা ভুলে যাওয়া যাবে না, মানুষের যাতায়াত যদি নির্বিঘ্ন না হয়, যদি ঘর থেকে বের হয়ে ফিরে আসার নিশ্চয়তা ঝুঁকির মুখে পড়ে, দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছড়িয়ে থাকে সড়ক পথে, তবে সামগ্রিকভাবে এই ভয়াবহ বাস্তবতা এড়ানোর সুযোগ নেই। আমরা মনে করি, একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটতে থাকবে আর ঝরে যাবে একেকটা তরতাজা প্রাণ, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। বলা দরকার, বিভিন্ন সময়েই সড়ক দুর্ঘটনা রোধে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনার কারণ এবং দুর্ঘটনা রোধে সুপারিশও সামনে এসেছে নানা সময়ে। বারবার আলোচনায় এসেছে সড়ক পথের ভয়াবহতা। কিন্তু বাস্তবতা এটাই যে, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ হচ্ছে না এবং দুর্ঘটনায় বাড়ছে লাশের মিছিল, যা অত্যন্ত পরিতাপের জন্ম দেয়।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এবারের ঘটনাটি আমলে নিতে হবে, একইসঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ এবং সড়ক দুর্ঘটনা রোধে করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সার্বিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নতি হচ্ছে ক্রমাগত। অথচ সড়ক যদি নিরাপদ না হয় তবে যোগাযোগ সহজ হলেও তার সুফল অনিশ্চিতই থেকে যাবে- যা পরিতাপের। সড়ক পথের নিরাপত্তা এবং দুর্ঘটনা রোধে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<93688 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1