শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

থমকে গেছে ঈদ নাটকের গতি

বিনোদন রিপোর্ট
  ১২ জুলাই ২০২০, ০০:০০
ঈদের নাটক 'বাবা'র একটি দৃশ্যে শহীদুজ্জামান সেলিম ও ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর

দেখতে দেখতে ঘনিয়ে এলো কোরবানি ঈদ। আর রোজার ঈদের মতো কোরবানি ঈদেও ধুম পড়ে খন্ড ও ধারাবাহিক নাটক নির্মাণের। দম ফেলার ফুরসত থাকে না অভিনয় শিল্পী, নাট্যনির্মাতা ও কলাকুশলীদের। তবে এবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। গত রোজার ঈদে তো পুরোপুরি বন্ধ ছিল নাটকের শুটিং। হাতে গোনা দুয়েকটি নতুন নাটক আর পুরনো নাটক দিয়েই পার করতে হয়েছে ঈদ। কিন্তু ঈদের পর কিছুদিন ধরে শর্ত সাপেক্ষে শুরু হয়েছে শুটিং। শুরুতে করোনা আতঙ্কের কারণে শীর্ষ অভিনয়শিল্পীরা কাজ করতে না চাইলেও পরবর্তীতে নির্মাতাদের একান্ত অনুরোধে অনেকেই শুটিংয়ে অংশ নেন। এতে অনেকটাই প্রাণ ফিরে আসে নাটকপাড়ায়। এরই মধ্যে বহুমুখী জটিলতায় থমকে গেছে ঈদ নাটকের শুটিংয়ের গতি। হঠাৎ করেই করোনাভাইরাস নিয়ে নতুন শঙ্কা তৈরি হওয়ায় বেশিরভাগ অভিনয়শিল্পী ও পরিচালকের মধ্যে শুটিং নিয়ে অনীহা তৈরি হয়েছে। আবার কেউ কেউ বাধ্য হয়ে কাজ করলেও, সংখ্যার বিচারে সেটা খুবই নগণ্য। অন্যসব বছর যে নির্মাতা দশটি নাটক নির্মাণ করত, তিনি এবার সতর্কতার জন্য নির্মাণ করছেন দুটি। শিল্পীদের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা। গত বছরও চাহিদাসম্পন্ন শিল্পীরা একেকজন ১৫ থেকে ২০টি নাটকে অভিনয় করেছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ এবার দুই থেকে তিনটির বেশি নাটকে কাজ করতে চাইছেন না। ফলে এবার ঈদেও উলেস্নখযোগ্যসংখ্যক নাটক নির্মাণ ও প্রচার হবে না বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বেশ কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার দুই শতাধিক নাটক প্রচার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যসব বছর এই সংখ্যাটা হাজারের কাছাকাছি থাকে।

এদিকে অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে বেশকিছু নাটক নির্মিত হয়েছে। আদিবাসী মিজানের 'চড়া তালুকদার' ও 'মেষরাশি' শিরোনামে দুই সাত পর্বের ধারাবাহিক নাটকের শুটিং শেষ করেছেন অভিনেত্রী নাহিদায় আহমেদ। ইরফান সাজ্জাদ ও টয়াকে নিয়ে সরদার রোকন নির্মাণ করেছেন ঈদের নাটক 'বেসামাল'। এই পরিচালক 'যে বিকেল বিষণ্ন' নামে আরেকটি নাটক শেষ করেছেন। এতে অভিনয় করেছেন জোভান ও তাসনুভা তিশা। 'তিনি মহান ঘরজামাই', 'স্বপ্নপুরুষ', 'লাবু বিএসসি'সহ চারটি নাটকের শুটিং শেষ করেছেন অভিনেতা মীর সাব্বির। ফরিদুল হাসানের পরিচালনায় অভিনেত্রী নাজিরা মৌ শুটিং শেষ করেছেন 'সুন্দরী বাইদানী' নামে ঈদ ধারাবাহিকের কাজ।

এছাড়া 'বনে ভোজন' শিরোনামে ঈদের বিশেষ ধারাবাহিকে কাজ করেছেন অভিনেতা জাহিদ হাসান ও তারিন জাহান। এন্টারটেইনমেন্টের প্রযোজনায় এটি পরিচালনা করেছেন গোলাম সোহরাব দোদুল। অভিনেত্রী ঊর্মিলা শ্রাবন্তী করও করেছেন তিনটি নাটকের শুটিং। 'জিম জসিম' নামে নাটকের শুটিং করেছেন শামীম জামান। এ নির্মাতা বলেন, 'সুরক্ষা, ভয় এবং মানসিক কষ্ট নিয়ে নিয়ম মেনে কাজ করছি। করোনার কারণে স্ক্রিপ্টে অনেক ছাড় দিতে হচ্ছে। এটুকু বুঝতে পারছি, অনেক কিছু মেনে ভালো কাজ করাটা কঠিন হবে। তবে নির্মাতা ও অভিনেতা হিসেবে মনে করি, স্ক্রিনে থাকা জরুরি।'

ধীরগতিতে শুটিংয়ে ফিরলেও করোনা নিয়ে আতংক কাটেনি অভিনয় শিল্পীদের। অন্যসব বছর অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম ডজন খানেক ঈদ নাটকে কাজ করেন। এবার অনেক অনুরোধের পর একটি নাটকে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন। 'মুনিরা মঞ্জিল' শিরোনামের এজাজ মুন্না রচিত নাটকটি পরিচালনা করছেন অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন। একই অবস্থা মুমতাহিনা টয়া, সাফা কবির ও সালস্নাহ খানম নাদিয়ার। করোনার কারণে তারা এবার স্বল্পসংখ্যক কাজকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। এর মধ্যে টয়া 'পারমিশন' ও 'বেসামাল' নামের দুটি নাটকে অভিনয় করেছেন। খুব বেশি হলে আর দু'তিনটি নাটকের কাজ করবেন বলে জানা গেছে।

একেকটি ঈদে ২০-২২ নাটকে অভিনয় করা মোশাররফ করিম এবার ঈদে একটি মাত্র নাটকে অভিনয় করেছেন। রাফাত মজুমদার রিংকুর পরিচালনায় 'বড় লোকের বেটি' নামে এ নাটকে মেশাররফ করিমের বিপরীতে অভিনয় করেছেন ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর।

এছাড়াও করোনার কারণে আগের মতো যত্রতত্র শুটিং করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে আউটডোর শুটিংয়ের ক্ষেত্রে অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। অনেক শিল্পী ইনডোরের বাইরে শুটিং করতেও চাইছেন না। ফলে নির্মিতব্য বেশিরভাগ নাটক নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। কাটছাঁট করতে হচ্ছে গল্পে। আবার কিছু কিছু নাটক শুটিং সংক্রান্ত জটিলতায় নির্মাণও হচ্ছে না। নাট্যাঙ্গনে বিশেষ করে ঈদ উৎসবে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন নাট্যজনরা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<105562 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1