শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ ভাবনা

৭ দফায় না হলে বিকল্প ক্ষেত্র প্রস্তুতের আশা

যাযাদি রিপোটর্
  ৩১ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

সাত দফা এবং ১১ লক্ষ্য নিয়ে কথা বলার আহŸানে সাড়া দিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যদিও আওয়ামী লীগ থেকে বলা হচ্ছে, ঐক্যফ্রন্টের দফাগুলো মানার মতো নয়। তবে শেষ পযর্ন্ত সংলাপ হতে যাওয়ায় ঐক্যফ্রন্ট অনড় না থেকে খোলা মনে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঐক্যফ্রন্টের দলগুলোর নেতারা মনে করছেন, সংলাপের টেবিলে নিবার্চনে যাওয়ার জন্য সাত দফা বা

অন্য কোনো বিকল্প ক্ষেত্র প্রস্তুত হতে পারে।

গত ১৩ অক্টোবর গণফোরাম, বিএনপি, জেএসডি এবং নাগরিক ঐক্য মিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়। এই জোট হওয়ার পর একাধিক বৈঠক করেছেন নেতারা। সিলেটে ২৪ অক্টোবর এবং চট্টগ্রামে ২৭ অক্টোবর সমাবেশও করে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল এবং সবাই বলেছিল আলোচনার চেষ্টা করতে। তারাও সাড়া দিয়েছে। উভয়পক্ষই মনে হয় চাচ্ছে একটা কিছু হোক। সাত দফা ছাড়াও অনেক বিষয় নিয়েও আলোচনা হতে পারে। বার বার যেন বসতে না হয়, কোনো ঝামেলা যাতে না হয়, সেভাবেই আলোচনা হতে পারে।’ দাবির বিষয়ে সমঝোতা প্রসঙ্গে মন্টু বলেন, ‘আমাদের তরফ থেকে সমঝোতার জন্য সবাই আমরা উদ্যোগী। একদম গ্রহণযোগ্য না হলে অবাধ সুষ্ঠু নিবার্চনের জন্য যেসব শতর্ আমরা দিয়েছি, সেসবের ক্ষেত্র যদি প্রস্তুত না হয়, তাহলে বিকল্প কোনো ক্ষেত্র যদি প্রস্তুত করে দিতে পারে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নিবার্চন হতে পারেÑ এমন যেকোনো কিছু অবশ্যই আমরা মেনে নেব।

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি, সংসদ বাতিলসহ কয়েকটি দাবি প্রসঙ্গে সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অবস্থান কেমন হতে পারেÑ সে বিষয়ে গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মন্টু জানান, অবস্থা বুঝে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।

ঐক্যফ্রন্টের এক নেতা বলেন, সাত দফার একটি বাদে প্রায় সবগুলোই বিবেচনা করার মতো। তবে এখানে ঐক্যফ্রন্টের পাশাপাশি বিএনপিরও গণতান্ত্রিক মনোভাব থাকতে হবে। বিএনপিকেও এই সংলাপে নিজেদের প্রজ্ঞার পরিচয় দিতে হবে। দেশের স্বাথের্ যেসব বিষয়ে সমঝোতা সম্ভব, সেগুলোতে একমত হতে হবে। তবে সরকারের কাছে নিজেদের দাবি-দাওয়া আরও আগেই তুলে ধরা উচিত ছিল বলে মনে করেন ওই নেতা। নাম প্রকাশ না করার শতের্ এই সদস্য বলেন, সংলাপ চেয়ে চিঠি দেয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর দিক থেকে দ্রæত সাড়া পেয়েছেন তারা। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকেও আলোচনা করেছেন। তার গণতান্ত্রিক মনোভাব রয়েছে এবং তিনি রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু অনেক আগে থেকেই ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে চিঠি দেয়ার জন্য বলা হয়েছিল। জোটের এই নেতা বলেন, ‘টেবিলে বসে শুধু কমিটি করলেই হবে না। আলোচনার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। সেখানেই সমাধান হয়। দাবি যেমন থাকে, দাবির বিকল্পও থাকে।’

ঐক্যফ্রন্টের এক নেতা নাম না প্রকাশের শতের্ বলেন, বিএনপিসহ সব দলকে খোলা মনে আলোচনা করতে অনুরোধ করা হয়েছে। সুযোগের কোনো কিছু যেন ঐক্যফ্রন্টের মনোভাবের কারণে নষ্ট না হয়, সে ব্যাপারে বিএনপিসহ অন্য দলগুলো একমত হয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুইজন নেতা বলেন, ‘সংলাপের আগে তারা কিছু বলতে চান না। এটা ঠিক ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণ গ্রহণ না করে বিএনপি যে ভুল করেছিল, সেই ভুল দলটি এবার করতে চায় না। সংলাপ সফল হোক বা না হোক, এর দায় যেন বিএনপির ওপর না পড়ে, সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে। জনগণের কাছে তারা ইতিবাচক ভাবমূতির্ তৈরি করতে সতকর্ থাকবে।’

অবশ্য, বিএনপি মহাসচিব মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ রয়েছে। এই সংলাপে আওয়ামী লীগ কতটুকু আন্তরিক, সংলাপ কতটুকু ফলপ্রসূ হবে, সেটা জনগণ বুঝতে পারছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘মিথ্যা’ মামলায় সাজা ও সাজার মেয়াদ বাড়ানোর কারণে সংলাপের সফলতা নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।’

ঐক্যফ্রন্টের সাত দফাকে আওয়ামী লীগ নেতা ও মন্ত্রীরা অসাংবিধানিক ও মানা সম্ভব নয় বলে আসছেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ঐক্যফ্রন্টকে পাঠানো চিঠিতেও বলা হয়েছে, সংবিধানসম্মত সব বিষয়ে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দ্বার সবর্দা উন্মুক্ত। এ ছাড়া ২০১৪ সালের নিবার্চনের আগে বিএনপির সঙ্গে সংলাপে যাওয়া নিয়ে আওয়ামী লীগ নিজেদের তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে জানিয়ে আসছে।

আগামী সপ্তাহেই নিবার্চনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জোট হয়ে নিবার্চনে অংশ নেবে কিনা সে ব্যাপারে সরাসরি কিছু না বললে জোটগতভাবেই অংশ নেয়ার কথা ভাবছেন নেতারা। এই জোটের এক নেতা বলেন, ঐক্যফ্রন্ট হয়েছে নিবার্চনের জন্য। এই জোট নিবার্চনে যাবে। সেভাবেই এগোচ্ছে। আর সরকারের তরফ থেকেও জোটকে নিবার্চনমুখী করতে হবে। নয়তো সরকারেরই বদনাম হবে। তবে ওই নেতা জানান, সবার চোখই এখন সংলাপের দিকে। আলোচনার ওপরই অনেক কিছু নিভর্র করবে।

এ ব্যাপারে ঐক্যফ্রন্টের নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, জোট নিবার্চনকেন্দ্রিক। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নিবার্চনের ক্ষেত্র প্রস্তুত হলে তখন সিদ্ধান্ত হবে নিবার্চনের যাওয়ার ব্যাপারে। সেটা জোটগতভাবে বা আলাদাভাবেও হতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<20212 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1