শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সন্ত্রাসী বিকাশের তথ্য জানাতে ভোলার এসপিকে তলব

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৮ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশ জীবিত না মৃত- এ বিষয়ে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রতিবেদন না পাঠানোর ব্যাখ্যা দিতে ভোলা জেলার পুলিশ সুপারকে (এসপি) তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ২০ আগস্ট আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সরওয়ার কাজল।

২০১২ সালের ১৪ ডিসেম্বর কঠোর গোপনীয়তায় কারাগার থেকে ছাড়া পান রাজধানীর শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশ কুমার বিশ্বাস (৪৬)। ওই দিন সকাল সোয়া ৮টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর-২ কারাগার থেকে তিনি

মুক্তি পান।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তারা সে সময় জানান, এ ধরনের সন্ত্রাসী কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার আগে বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে জানানো হয়। বহু বছর ধরে এ রীতি মেনে চলা হচ্ছে। কিন্তু বিকাশের ক্ষেত্রে সেটা মানা হয়নি।

১৫ বছর ধরে কারাবন্দি ছিলেন বিকাশ। কারাগারে বসেই মুঠোফোনের মাধ্যমে তিনি চাঁদাবাজি অব্যাহত রেখেছিলেন বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ রয়েছে।

২০০৯ সালের ১৭ জুলাই কাশিমপুর কারাগার থেকে একবার মুক্তি পেয়েছিলেন বিকাশ। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ওই দিনই গাজীপুরের গোয়েন্দা পুলিশ তাকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় (অপরাধে জড়িত সন্দেহে) গ্রেপ্তার করে আবার কারাগারে পাঠায়।

পরে তেজগাঁও থানার একটি হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেই মামলায় তিনি ঢাকার বিশেষ দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন পান।

কারা সূত্র জানায়, দ্বিতীয় দফায় ২০০৯ সালে ১ নভেম্বর কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এ বিকাশকে পাঠানো হয়। তিনি দীর্ঘদিন কারাগারের কর্ণফুলী ভবনে বন্দি ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র ওই সময় জানায়, বিকাশকে মুক্তি দেয়ার বিষয়ে কিছুদিন ধরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায় থেকে তৎপরতা চলছিল। একপর্যায়ে কারা কর্মকর্তাদের ডেকে বিকাশের মুক্তির বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়।

কারাগার থেকে বের হওয়ার পর বিকাশের আর কোনো খোঁজ জানে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

বিকাশ-কাহিনি

পুলিশের কাগজপত্র থেকে জানা গেছে, বিকাশের বাবার নাম বিমল চন্দ্র বিশ্বাস, বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার শিবনগরে। ঢাকার আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী প্রকাশ বিশ্বাসের ভাই বিকাশ। ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর তৎকালীন সরকার যে ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা করেছিল, তাতে প্রকাশের নাম ছিল। এর আগে বিএনপি সরকারের সময় করা পুলিশের তালিকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে বিকাশের নাম উলেস্নখ করা হয়েছিল। তালিকা প্রকাশের আগেই প্রকাশ দেশের বাইরে পালিয়ে যায় বলে তথ্য রয়েছে।

সূত্র জানায়, নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাভিত্তিক সন্ত্রাসী দল গড়ে উঠতে শুরু করে। এদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সুইডেন আসলাম, হারেসউদ্দীন, জোসেফ আহমেদ, প্রকাশ-বিকাশ, সুব্রত বাইন, মোলস্না মাসুদ, টিক্কা, মুরগি মিলন, লিয়াকত হোসেন প্রমুখ। ঠিকাদারিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আধিপত্য নিয়ে সন্ত্রাসী দলগুলোর নিজেদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়।

প্রকাশ-বিকাশ প্রথমে বাসাবো এলাকায় কর্মকান্ড চালালেও পরে তারা মিরপুর-আগারগাঁও এলাকায় আস্তানা গাড়েন। আগারগাঁওয়ে জোড়া খুন, এলজিইডি ভবনে খুনসহ আরও কয়েকটি খুনের দায়ে সরাসরি বিকাশকে আসামি করা হয়েছিল।

বিকাশকে ১৯৯৭ সালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের আলোচিত সহকারী কমিশনার (এসি) আকরাম হোসেন গ্রেপ্তার করেছিলেন। সেই সময়ে বিকাশের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি, অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগসহ ১২টি মামলা ছিল। এর মধ্যে ছয়টি মামলায় তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন। বাকি মামলাগুলোতে তিনি জামিনে রয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<58728 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1