শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রবীন্দ্রকাছারিতে বিনোদন প্রেমীদের উপচেপড়া ভিড়

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা
  ১৭ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্রকাছারিতে বিনোদনপ্রেমীদের ভিড় -যাযাদি

ঈদুল আজহার আনন্দকে অনেকটাই ম্স্নান করে দিয়েছে কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি আবার কখনো মুষলধারে বৃষ্টি। ঈদুল আজহার দিন দুপুর থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের ফলে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের প্রধান বিনোদন কেন্দ্র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছারিবাড়ী ও করতোয়া নদীর উপর নির্মিত দুটি সেতুতে বিনোদনপ্রেমীদের আগমনে ভাটা পড়ে। কিন্তু গত মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকেই শাহজাদপুরের রবীন্দ্র কাছারিবাড়ী ও থানাঘাট করতোয়া সেতু এবং গাড়াদহ করতোয়া সেতুতে বিনোদনপ্রেমীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। পরিবার পরিজন নিয়ে সবাই ছুটে আসছে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ী আর করতোয়ার সেতুর দু'পাশের নৈস্বর্গিক দৃশ্য উপভোগ করতে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, রবীন্দ্র কাছারিবাড়ীতে রবীন্দ্র স্মৃতি জাদুঘর দেখতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা দর্শনার্থীদের ভিড়। ঈদুল আজহা উপলক্ষে কাছারিবাড়ীতে দর্শনার্থীদের বাড়তি চাপ সামলাতে হচ্ছে বলে জানালেন, কাছারিবাড়ীর কাস্টডিয়ান। বাংলা সাহিত্যের নোবেল বিজয়ী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শৈশব ও যৌবনের নানা স্মৃতি জড়িয়ে আছে শাহজাদপুর কাছারিবাড়ীকে ঘিরে। আর তাই প্রতিদিন দেশ-বিদেশ থেকে রবীন্দ্র কাছারিবাড়ীতে আগমন ঘটে পর্যটকদের। কলকাতার বিখ্যাত জোড়া সাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্ম নেয়া এই কবি ৩০ বছর বয়সে বিলেতে লেখাপড়া করে (১৮৯০-৯৬) সালে ছায়াছন্ন খালবিলে ভরা পূর্ব বাংলার অনেকাংশ শিক্ষা সভ্যতা বিবর্জিত শাহজাদপুরে আসেন। তিনি কুষ্টিয়ার শিলাইদহ হয়ে নৌকাযোগে শাহজাদপুর ও নওগাঁর পতিসর আসেন। এর পূর্বে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূর্ব পুরুষ নাটোরের রানী ভবানীর নিকট থেকে তেরো টাকা দশ আনায় শাহজাদপুরের জমিদারি কিনে নেন। আর এই জমিদারি দেখাশোনার জন্যই ১৮৯০-৯৬ সাল পর্যন্ত শাহজাদপুরে নিয়মিতভাবে আসা যাওয়ার পাশপাশি সাময়িক বসবাস করেছেন। শাহজাদপুরে বসে তিনি সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালী, পঞ্চভূতের ডায়েরি, ছিন্নপত্র, সমাপ্তি, তত্ত্ব ও সৌন্দর্য, মানসী, অসময়, শেষ কথা উলেস্নখযোগ্য গ্রন্থ রচনা করেছেন। যদিও বিশ্ব কবি শিলাইদহ ও পতিসরের চেয়ে শাহজাদপুরে কম সময় অবস্থান করেছেন তবুও শাহজাদপুরের যমুনা, বড়াল, হুরাসাগর, করতোয়া, ইছামতি নদী রবীন্দ্র সাহিত্যের বিশাল স্থান দখল করে আছে। এখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যবহৃত খাট, পালকি, খরম, জুতা, চশমা, তোষক, চেয়ার, পানির ট্যাপ, টেবিল, আলনা, ড্রেসিং টেবিল, থালা, বাসন, বদনাসহ নানা সামগ্রী। ১৯৬৯ সালে এই কাছারিবাড়ীকে পরিচ্ছন্ন করে সরকার প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতা এনে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়।

\হএবং ১৯৯৯ সালে কাছাড়িবাড়ীর পশ্চিম আঙিনায় ৫০০ আসন বিশিষ্ট উত্তর বঙ্গের সবচেয়ে নান্দনিক অডিটরিয়াম নির্মাণ করে। এদিকে করতোয়া সেতুর পশ্চিম থেকে পূর্বপাড়ে প্রেমিক-প্রেমিকা, স্বামী-স্ত্রী, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনকে নিয়ে ছুটে আসছে ঈদ আনন্দ উপভোগ করার জন্য। সেতুর উপর রয়েছে চটপটির দোকান। চেয়ার পেতে অনায়াসেই মেলে পুচকা, চটপটি, হালিম, বাদাম, ঝালমুড়ি। সেতুর উপরে যেন নারী-পুরুষের এখন মিলনমেলা। বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে তরুণ-তরুণীদের জমকালো আড্ডা। ঈদপরবর্তী আরও কয়েকদিন করতোয়া সেতু ও রবীন্দ্র কাছারিবাড়ী থাকবে বিনোদনপ্রেমীদের দখলে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<62594 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1