শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

করোনায় জেলেদের দুর্দিন

এমএইচ শিপন, বোরহানউদ্দিন, (ভোলা)
  ০৭ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
ভোলার বোরহানউদ্দিনে অলস সময় পার করছেন জেলেরা -যাযাদি

ভোলার বোরহানউদ্দিনে একদিকে টানা দুই মাস মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা অন্যদিকে করোনাভাইরাসের কারণে বিকল্প কাজ করতে না পারায় ২০ হাজার জেলে পরিবারে দুর্দিন চলছে। পরিবারগুলোর কাছে তিনবেলা খাবার খেয়ে জীবন বাঁচানোটাই দায় হয়ে পড়েছে। গত এক মাস ধরে তাদের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ।

১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মেঘনা নদীর ৯০ কিলোমিটার ও তেঁতুলিয়া নদীর ১০০ কিলোমিটার অভয়াশ্রমে মাছ ধারা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে মৎস্য বিভাগ। এ ছাড়া অক্টোবর মাসে ওই এলাকায় ১৫ দিন মা ইলিশ রক্ষায় জাল ফেলা বন্ধ থাকে।

জেলেরা জানান, অন্য পেশার মানুষ ১২ মাস আয় করতে পারেন। কিন্তু বছরে কয়েক দফা মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকে জেলেদের। এখন চলমান দুই মাস নিষেধাজ্ঞার এক মাস ছয় দিন গেল।

উপজেলায় ১৭ হাজার ৯২৪ জন নিবন্ধিত জেলে আছেন। এর মধ্যে ১০ হাজার ৪৫১ জন জেলে ফেব্রম্নয়ারিও মার্চ মাসের বরাদ্দের ৮০ কেজি করে চাল পেয়েছেন। তবে মৎস্যজীবী সমিতির নেতারা বলছেন, নিবন্ধনের বাইরেও অন্তত ৫-৬ হাজার জেলে আছেন। আবার নিবন্ধিত জেলেদের মধ্যে প্রায় সাড়ে সাত হাজার জেলে সরকারি চাল পাচ্ছেন না।

গঙ্গাপুর ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া নদীর জেলে জসিম খান, আবুল হাসান, আ. মালেক, মাইনউদ্দিন ও মো. ফখরুল জানান, তারা তিনবেলা খাবার জোগাতে পারছেন না। এখন আর ধার-দেনা চেয়েও পাচ্ছেন না। ছেলেমেয়েদের আবদারে চোখে পানি চলে আসে। কিন্তু কিছুই করতে পারছেন না।

উপজেলা ক্ষুদ্র মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর মেম্বার বলেন, সব নিবন্ধিত জেলেদের খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি আর্থিক প্রণোদনা দেয়া উচিৎ। এক সঙ্গে সারাদেশে অবরোধ না দিলে এর সুফল পাওয়া যাবে না বলে তিনি দাবি করে বলেন, নিবন্ধিত জেলেদের মধ্যে অনেক অন্য পেশার লোক ঢুকে প্রকৃত জেলেদের খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত করেছেন।

পক্ষিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাগর হাওলাদার জানান, ইউনিয়নে নিবন্ধিত জেলে দুই হাজার ৩০ জন, কিন্তু চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এক হাজার ৩০০ জনের নামে, হাসাননগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মানিক হাওলাদার জানান, তার ইউনিয়নে নিবন্ধিত জেলে দুই হাজার ৪০৭ জন। চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এক হাজার ৫০০ জনের। তারা জানান, এ রকম বরাদ্দে তারা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন।

সিনিয়র উপজেলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুস সালেহীন জানান, জেলেদের আরও সুবিধা দিতে প্রস্তাবনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. বশির গাজী জানান, জেলেদের নাম হালনাগাদ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া জেলেদের সুবিধা পর্যায়ক্রমে বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর বেড়েছে, ভবিষ্যতে আরও বাড়ানোর প্রস্তাবনা প্রক্রিয়াধীন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<95482 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1