শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মূলধন ঘাটতি পূরণে বরাদ্দ থাকবে বাজেটে

নতুনধারা
  ১৪ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট

রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ দেয়া হবে। সাত বছরের ধারাবাহিকতায় এ বছরও ব্যাংকগুলোকে বাঁচাতে অর্থ রাখবে সরকার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বরাদ্দের দেড় হাজার কোটি টাকা চলতি বছরের ফেব্রম্নয়ারির শেষের দিকে ছাড় করেছে অর্থ বিভাগ।

সরকারি ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি পূরণে বাজেট থেকে অর্থ বরাদ্দ করা শুরু হয় ২০১২-১৩ অর্থবছর থেকে। সবশেষ ২০১-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত মূলধন ঘাটতি পূরণে ব্যাংকগুলো পেয়েছে প্রায় ১৪ হাজার ৫শ' কোটি টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সোনালী ও জনতা ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ব্যাংক দুটি বিভিন্ন সময় মূলধন ঘাটতি পূরণে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কাছে অর্থ চেয়েছে। তখন কোনো বরাদ্দ না দেয়া হলেও বাজেটে একটি অংশ রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর জন্য রাখা হবে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হতে পারে চলতি বছরের ১৩ জুন।

এভাবে বাজেট থেকে বরাদ্দ না দিয়ে নিজেদের সক্ষমতা অর্জনের দিকে নজর দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ

ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গর্ভনর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। তিনি বলেন, খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির কারণে ব্যাংকগুলো মূলধন সংকটে পড়েছে। তাই মূলধন ঘাটতি পূরণের সক্ষমতা অর্জনের জন্য খেলাপি ঋণ কমানোর বিকল্প নেই। এজন্য সংশ্লিষ্টদের তদারকি জোরদার করার আহবান জানান সাবেক এই ব্যাংকার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে সরকারি চার বাণিজ্যিক ব্যাংকের মূলধন ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। এর মধ্যে জনতা ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ৫ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। সোনালী ব্যাংকের ঘাটতি ৫ হাজার ৩২০ কোটি টাকা। বেসিক ব্যাংকের ঘাটতি ৩ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকা। আগের বছর উদ্বৃত্ত থাকলেও গত বছর ৮৮৩ কোটি টাকা ঘাটতি হয়েছে অগ্রণী ব্যাংকের।

প্রতিবেদন বলছে, মূলধন ঘাটতির ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছে একমাত্র রূপালী ব্যাংক। ২০১৭ সালে ব্যাংকটির ৬৩৭ কোটি টাকা মূলধন ঘাটতি থাকলেও ২০১৮ সালের ডিসেম্বর ২০ কোটি টাকা মূলধন উদ্বৃত্ত রয়েছে রূপালী ব্যাংকের।

বড় অংকের মূলধন সংরক্ষণ করার কারণেই ২০১৮ সালে আগের বছরের তুলনায় মুনাফা কিছুটা কমেছে। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ অনেক কমিয়ে আনতে পেরেছে।

রূপালী ব্যাংকের ডিসেম্বর ২০১৮ ভিত্তিক অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ব্যাংকটি মুনাফা করেছে ৩৭৬ কোটি টাকা। এর আগের বছর মুনাফা ছিল ৫৪১ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে ব্যাংকটির নিট লোকসান হয়েছিল ১শ' কোটি টাকা।

এ বিষয়ে রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউর রহমান প্রধান বলেন, টানা দুই বছর বড় অংকের মুনাফা অর্জন ও খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার কারণেই ব্যাংকের মূলধন সংরক্ষণ স্থিতি উদ্বৃত্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, 'আমি দায়িত্ব নেয়ার পর লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছিলাম ২০১৭ সাল হবে রূপালী ব্যাংকের ঘুরে দাঁড়ানোর বছর। আর ২০১৮ সাল হবে শীর্ষে পৌঁছানোর। আমাদের সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১ হাজার ৫শ' কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ খাতে দুই হাজার কোটি টাকা করে বরাদ্দ রাখা হয়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। ওই বছর ব্যাংকগুলোকে দেয়া হয় ৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাজেটে বরাদ্দ ছিল ৪২০ কোটি টাকা; কিন্তু দেওয়া হয় পাঁচ হাজার কোটি টাকা। ২০১২-১৩ অর্থবছর এক হাজার ৬৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখলেও ছাড় করা হয় ৫৪১ কোটি।

জানতে চাইলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ আদায় করা গেলে ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি অনেক কমে যাবে। তাই আমরা চেষ্টা করছি খেলাপি ঋণ আদায় করার। এজন্য অর্থমন্ত্রী বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছেন।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<45426 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1