শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রথমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে বিচারপতি মানিক

যাযাদি রিপোর্ট
  ২১ জুন ২০১৯, ০০:০০

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে 'মিথ্যা তথ্য' সম্বলিত এ কে খন্দকারের '১৯৭১ : ভেতরে বাইরে' বইটি প্রকাশ করায় প্রথমা প্রকাশনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব বলে মনে করেন আপিল বিভাগে সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।

জাতীয় প্রেসক্লাবে বৃহস্পতিবার এক আলোচনা সভায় ওই প্রকাশনী সংস্থাকে নিষিদ্ধ করারও দাবি জানিয়েছেন তিনি।

বিচারপতি মানিক বলেন, যারা এই বইটি ছাপিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেওয়ার সমস্ত সুযোগ আছে।

বিশেষ করে এই প্রকাশনী সংস্থা, যারা এই মিথ্যা প্রকাশ করেছে তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এই সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি এবং এই প্রকাশনা সংস্থাকে বন্ধ করা হোক।

মুক্তিবাহিনীর উপঅধিনায়ক এ কে খন্দকারের লেখা বইটি ২০১৪ সালে প্রথমা থেকে প্রকাশিত হয়। বইটির ৩২ পৃষ্ঠায় তিনি লিখেছিলেন, বঙ্গবন্ধু তার একাত্তরের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণটি শেষ করেছিলেন 'জয় পাকিস্তান' বলে।

এমন তথ্যে বইটি প্রকাশের পর সমালোচনার মুখে পড়লেও নীরব ছিলেন শেখ হাসিনার ২০০৯-১৪ সরকারের মন্ত্রী এ কে খন্দকার।

সাড়ে চার বছরের নীরবতা ভেঙে গত ১ জুন সস্ত্রীক সংবাদ সম্মেলনে এসে নিজের লেখা বইয়ে ভুল তথ্য দেওয়ার জন্য ক্ষমা চেয়ে তিনি বলেন, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু 'জয় পাকিস্তান' বলেননি।

প্রথমা প্রকাশন বইয়ের ৩২ পৃষ্ঠার বিতর্কিত অংশটুকু বাদ দিয়ে পুনঃমুদ্রণ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন এ কে খন্দকার।

ওই সংবাদ সম্মেলনে এ কে খন্দকারের স্ত্রী ফরিদা খন্দকার দাবি করেন, বইটি প্রকাশের পর তারা তথ্য সংশোধনের চেষ্টা করলেও প্রথমার পক্ষ থেকে বাধা আসায় তা সম্ভব হয়নি।

এ কে খন্দকারের সংবাদ সম্মেলনের চারদিন পর প্রথমা প্রকাশনের পক্ষ থেকে বইটি বাজার থেকে তুলে নেয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

এ কে খন্দকার 'লোভে পড়ে' তার বইতে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন মন্তব্য করে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, '৯০ এ (বয়স) যখন তিনি পা দিলেন তখন তার মধ্যে মৃতু্য ভয় এলো। যখন তিনি বুঝতে পারলেন মৃতু্য তো বেশি দূরে নয়, তখন তিনি জাতির কাছে ক্ষমা চাইলেন, বললেন- তার বইয়ে এ বিষয়ে যা লেখা হয়েছে তা ভুল ও মিথ্যা।'

ওই সংবাদ সম্মেলনেও এ কে খন্দকার 'মিথ্যার আশ্রয়' নিয়েছেন দাবি করে সাবেক বিচারপতি মানিক বলেন, তিনি বলেছেন চাপের কারণে এতদিন পারেননি তার বইয়ের ভুল শোধরাতে। উনি ডা. জাফরুলস্নাহ ও মইদুল ইসলামের কথা বলেছেন, তাদের চাপে নাকি তিনি এতদিন সত্য প্রকাশ করতে পারেননি। যখন বইটি প্রকাশ হয় তখনও সরকারে ছিলেন শেখ হাসিনা। সুতরাং তার ভয়ের কোনো কারণই ছিল না।

প্রেসক্লাবে 'ইতিহাস বিকৃতি ও আমাদের দায়' শীর্ষক আলোচনা সভাটির আয়োজক ছিল বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বোয়াফ)। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময়।

আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য নূহ-উল-আলম লেলিন বলেন, রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে সব সময় ইতিহাস বিকৃতি হয়ে আসছে। যখন যার প্রয়োজন তখন নিজেদের প্রয়োজনেই এদেশে ইতিহাসের বিচু্যতি ঘটানো হয়েছে।

'ইতিহাস বিকৃতি শুধু যে বিএনপির পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর অবস্থানে জিয়াউর রহমানকে প্রতিস্থাপন করতে করা হয়েছে তা নয়, বিকৃতি করা হয়েছে বামদের একাংশের পক্ষ থেকেও। আবার করা হয় সো-কল্ড সুশীলদের পক্ষ থেকেও। এ বিকৃতিতে কেউ পিছিয়ে নেই।'

অন্যদের মধ্যে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য আব্দুল মান্নান চৌধুরী, ইতিহাসের শিক্ষক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, কলামনিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য মুহাম্মদ শফিকুর রহমান সভায় বক্তব্য দেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<54547 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1