শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জিমের আক্ষেপে পুড়ছেন মাবিয়া

ক্রীড়া ডেস্ক
  ১৫ জুলাই ২০২০, ০০:০০
পল্টনের জিমনেসিয়ামে অনুশীলনরত সাফ স্বর্ণজয়ী নারী ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্ত -ওয়েবসাইট

দেশে অনেক খেলারই চর্চা রয়েছে। কিন্তু সাউথ এশিয়ান গেমসে হাতে-গোনা কয়েকটি খেলাই স্বর্ণ এনে দিয়েছে দেশকে। ২০১০ (বাংলাদেশ), ২০১৬ (ভারত) ও সর্বশেষ নেপাল এসএ গেমসের ভারোত্তোলনে স্বর্ণ জিতেছে বাংলাদেশ। ভারত ও নেপালের আসরের দুটি স্বর্ণই জিতেছে মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। অথচ এই নারী ভারোত্তোলক একটি জিমের আক্ষেপে পুড়ছেন দিনের পর দিন।

চার বছর ধরে ফেডারেশন কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ জানিয়ে আসছেন স্বর্ণকন্যা মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। তাদের দেওয়া আশ্বাস পরিণত হয়েছে দীর্ঘশ্বাসে। একটি জিমনেসিয়ামের জন্য এ ভারোত্তোলকের আর্তনাদ দেখার যেন কেউ নেই!

২০১৬ সালে সাউথ এশিয়ান গেমসে (এসএ) ভারোত্তোলনে দেশকে স্বর্ণ পদক এনে দিয়ে কোটি মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন মাবিয়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে উপহার হিসেবে পেয়েছেন ফ্ল্যাট। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন দিয়েছে আর্থিক পুরস্কার।

দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসায় বিভিন্ন মহল থেকে ছোট ছোট অঙ্কের অনুদানও পেয়েছেন। তবে খেলাটিতে আরও উন্নতির জন্য ফেডারেশন ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে যে চাওয়া ছিল, তা আজো পাওয়া হয়নি।

ফেডারেশন থেকে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা না পেলেও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ মাবিয়া নিজেকে ধরে রেখেছেন কক্ষপথে। গত বছর নেপাল এসএ গেমসেও জিতেছেন স্বর্ণ। আগের বছর গোল্ড কোস্ট কমনওয়েলথ গেমসে ষষ্ঠ হন। টোকিও অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার লক্ষ্যে তিন বছর ধরে চলা বাছাইপর্বে মোট সাতটির মধ্যে ছয়টি ধাপ সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন। এপ্রিলে উজবেকিস্তানে আরেকটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিলেই শেষ হতো পুরো প্রক্রিয়া। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে স্থগিত হয়ে গেছে শেষ ধাপটির কার্যক্রম। পিছিয়ে গেছে মূল আসরও।

অলিম্পিকে লড়ার সুযোগ এলে নিজেকে কতটা মেলে ধরতে পারবেন সেটি নিয়ে সংশয়ে মাবিয়া। ফেডারেশনের অধীনে জীর্ণশীর্ণ একটি কক্ষে অনুশীলন, প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অভাব, সঠিক গাইডলাইন না পাওয়াসহ অনেক কারণেই হতাশার পাহাড় জমেছে সফল এ ক্রীড়াবিদের মনে।

মাবিয়া আক্তার সীমান্ত বলেন, 'ভারতের গৌহাটি থেকে পদক নিয়ে আসার পর আমি দুটা জিনিস চেয়েছি ফেডারেশনের কাছে। জিমনেসিয়াম আর ট্রেনিং ফ্যাসিলিটি। চার বছরেও পাইনি। পল্টনের সুইমিংপুলের পেছনে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ছোট্ট গুদামঘরের মতো অনুশীলন ভেনু্যতেই সারাবছর বারবেল তুলতে হয় আমাদের। তিন রুমের একটি ফ্ল্যাটে ডাইনিং স্পেস যতটুকু হয়, ততটুকু হচ্ছে আমাদের জিমনেসিয়াম। ইকুইপমেন্ট যা আছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। যদি আমার সর্বোচ্চ ইনটেন্ড নিয়ে অনুশীলন করি, সাথের আরেকজন খেলোয়াড়কে বসে থাকতে হবে আমার সেট শেষ হওয়া পর্যন্ত। আমি শেষ করে আসলে আমার পেস্নট নিয়ে সেটি সাজিয়ে ওনার সেট সম্পন্ন করবেন। ছোট্ট গুদামঘরের মতো জায়গায় এভাবে জোড়াতালি দিয়ে ট্রেনিং হয় না। এয়ারকন্ডিশন দূরে থাক, কিছু ফ্যানও ঘোরে না। আমাদের জিমের চেয়ে একটা স্টোররুম বড় হয়ে থাকে। যদি সেখানে যান দম বন্ধ হয়ে আসবে।'

'ওয়েটলিফটিং এয়ারকন্ডিশন ছাড়া কোথাও হয় না। খেলার সুবাদে অনেক দেশে গেছি। সবখানেই দেখেছি জিমনেসিয়ামে এসি আছে এবং আমরা যেখানে প্রতিযোগিতা করি সেখানেও এসি থাকে। ওয়েটলিফটিং পাওয়ারফুল গেম। অনবরত ঘাম ঝরলে শক্তি কমে আসতে শুরু করে। আমি কিন্তু নিজের জন্য কিছু চাইনি। গাড়ি, বাড়ি, আর্থিক অনুদান চাইনি, শুধু চেয়েছি আমরা যেখানে অনুশীলন করি সেটি যেন একটু উন্নত করে দেওয়া হয়। সবাই যেন একত্রে ট্রেনিং করতে পারি। যেন ভাগে ভাগে ট্রেনিং করতে না হয়। অনেকদিন ধরে বলা হচ্ছে। জানি না কেন হচ্ছে না। হয়তো আমি অবসরে গেলে হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<105908 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1