শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অবহেলা-বঞ্চনার জবাব শামসুরের ব্যাটে

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে আফসোসের এক নাম শামসুর রহমান শুভ। বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে আলো ছড়িয়ে পেয়েছিলেন জাতীয় দলে খেলার সুযোগ। যদিও দেড় বছরের বেশি টিকতে পারেননি আন্তজাির্তক পযাের্য়। ২০১৪ সালের নভেম্বরের পর আর আসতে পারেননি বাংলাদেশ দলের আঙিনায়। নানা তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাওয়া এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান বিপিএলের ষষ্ঠ আসরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জাসিের্ত নিজেকে মেলে ধরেছেন নবরূপে। অবহেলা-বঞ্চনার জবাব দিচ্ছেন ব্যাট হাতেই।

মিরপুরে প্রথম পবের্র চার ম্যাচে কুমিল্লার একাদশে সুযোগ পাননি শামসুর। তবে সিলেট পবর্ থেকে নিয়মিত খেলছেন ৩০ বছর বয়সী এ ক্রিকেটার। ৭ ম্যাচের মধ্যে তিন, চার ও সাত নম্বরে খেলার অভিজ্ঞতা হয়েছে। করেছেন ১৬৪ রান। বিভিন্ন পজিশনে ব্যাট করলেও দেখিয়েছেন রান তোলায় ধারাবাহিকতা। ফিফটি নেই, তবে ছোট ছোট কাযর্করী ইনিংস খেলে রেখেছেন অবদান। দুটি ম্যাচে ছিলেন অপরাজিত। যে কারণে গড় ৩২.৮০। ১৩০ ছাড়ানো স্ট্রাইকরেটটাও চোখে লাগার মতো।

শামসুরের পারফরম্যান্সে দারুণ খুশি কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। আক্ষেপ করলেন অল্পদিন খেলেই জাতীয় দল থেকে এই ব্যাটসম্যান ছিটকে যাওয়ায়, ‘শামসুরকে নিয়ে বলার কিছু নেই। ভালো খেলোয়াড়। জাতীয় দলেও খেলেছে। দুভার্গ্য জাতীয় দলের বাইরে চলে গেছে। রান করতে, নিজেকে ফিট রাখতে অনেক পরিশ্রম করেছে। সম্ভবত দ্বিতীয় বিপিএলে সে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবোর্চ্চ রান (৪২১) করেছে। এ বছরও ভালো সময় যাচ্ছে তার। নিজের সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে।’

শামসুরকে দলে পেয়ে খুশি কুমিল্লার অধিনায়ক। অথচ গত আসরে কী বাজে অভিজ্ঞতাই না হয়েছিল শামসুরের! পড়তে হয়েছিল লজ্জাজনক এক পরিস্থিতিতে। প্লেয়াসর্ ড্রাফটে তাকে কেউ না নিলেও পরে রংপুর রাইডাসর্ যোগ করে নেয় স্কোয়াডে। ম্যাচ খেলানো দূরে থাক; আসরের মাঝপথে চট্টগ্রামের মাঠে খেলতে রাইডাসর্রা চলে যায় শামসুরকে ঢাকায় রেখেই। তাকে জানানো হয় দলের পরিধি ছোট করায় সে এখন স্ট্যান্ডবাই ক্রিকেটার।

সেই ঘটনায় মনের কষ্ট চাপা রাখতে পারেননি শামসুর। ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছিলেন সাংবাদিকদের কাছে। পরের বছর জাতীয় লিগের দল ঢাকা মেট্রোর কোচের কথায় অপমানিত বোধ করে দল থেকেই সরে যান শামসুর। পারফরম্যান্স, ফিটনেস নিয়ে তোলা হয় নানা প্রশ্ন! তবে বিপিএল শুরুর আগে গত বছরের নভেম্বরে বিসিএলে দক্ষিণাঞ্চলের এই ওপেনার সবশেষ চার ম্যাচে করেন দুটি সেঞ্চুরি। ৬ ইনিংসের ব্যবধানে দুটিতে করেন ১৫৩ ও ১২১।

৩০ পেরিয়ে আসা শামসুর এক মৌসুম পর বিপিএলে প্রত্যাবতের্নর ম্যাচে চার নম্বরে নেমে খেলেন ৩৭ বলে ৩৪ রানের অপরাজিত ইনিংস। সিলেট সিক্সাসের্র বিপক্ষে সেই ম্যাচে কুমিল্লার লক্ষ্য ছিল মাত্র ৬৯ রান। পরের ম্যাচে খুলনা টাইটানসের বিপক্ষে ১ রান করে হন রানআউট। মিরপুরে দ্বিতীয় পবের্ রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে তিনে নেমে এক ছক্কায় করেন ১১ বলে করেন ১৫। মিরপুরে ফিরে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে চারে নেমে করেন ৩৫ বলে ৪৮ রান। শুরুতেই দুই ওপেনার ফিরে যাওয়ায় চাপ ছিল। সেখান থেকে কুমিল্লার ইনিংস মেরামত করেন শামসুর। ইনিংস সাজান ৩ চার ও ১ ছক্কায়।

চট্টগ্রামে এসে আগের ম্যাচে খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে সাতে নেমে করেন ১৫ বলে ২৮ রান, থাকেন অপরাজিত। মঙ্গলবার তিনে ফিরে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে করেন ২২ বলে ৩৬। ইনিংসে ছিল ৩ চার ও ২ ছয়ের মার। কুমিল্লার লক্ষ্য ছিল ছোট, ১১৭ রানের। শুক্রবার অবশ্য ঢাকা ডায়নামাইটের বিপক্ষের বিপক্ষে ভালো করতে পারেননি, মাত্র ২ রান করে আউট হয়েছেন দলের বিপদ বাড়িয়ে।

বয়সভিত্তিক ক্রিকেট পেরিয়ে আসার পরপরই শামসুর দেখেন বাজে সময়। জাতীয় দলে ডাক পেয়েও কোনো ম্যাচ খেলতে পারেননি। ২০০৯ সালে টি২০ বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকলেও তাকে প্র্যাকটিস ম্যাচেও খেলানো হয়নি। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট স্কোয়াডে থাকলেও খেলার সুযোগ পাননি। কোনো ম্যাচে না খেলে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন। না খেলেই কেনো বাদ পড়েছিলেন আজও সেটি প্রশ্ন হয়েই আছে!

২০১৩ সালে বিপিএলের দ্বিতীয় আসরে নজরকাড়া ব্যাটিং করে আলোয় আসেন শামসুর। হন তৃতীয় সবোের্চ্চ রান সংগ্রাহক। সেবার ১২ ম্যাচের ৬টিতে পান ফিফটি। সেই পারফরম্যান্সের আবার খুলে যায় জাতীয় দলের দরজা। পরে বাংলাদেশের হয়ে ৬ টেস্ট, ১০ ওয়ানডে ও ৯ টি২০ খেলেছেন। আন্তজাির্তক ক্যারিয়ার থমকে আছে সেখানেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<34907 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1