ক্রীড়া ডেস্ক
দক্ষিণ আফ্রিকার হারটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল আগের দিনই। রাঁচি টেস্টের চতুর্থ দিনে বাকি ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। সেটা সারতেও খুব একটা সময় নেয়নি ভারত। তৃতীয় ও সিরিজের শেষ টেস্টের প্রথম দুই ওভারের মধ্যে বাকি ২ উইকেট তুলে নিয়ে প্রোটিয়াদের হোয়াইটওয়াশ করে রেকর্ড গড়েছে বিরাট কোহলির দল।
দ্বিতীয় ইনিংসে সফরকারী আফ্রিকাকে ১৩৩ রানে গুটিয়ে দিয়ে রাঁচি টেস্ট ইনিংস ও ২০২ রানের বড় ব্যবধানে জিতেছে ভারত। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে টেস্টে এটিই তাদের সবচেয়ে বড় জয়। পুনেতে সিরিজের আগের টেস্টে ইনিংস ও ১৩৭ রানে জয়ের রেকর্ড ভেঙে নতুন করে ইতিহাস লিখল বিরাট কোহলির দল। আর তাতে এই প্রথম কোনো টেস্ট সিরিজে প্রোটিয়াদের হোয়াইটওয়াশ করল ভারত। একই সঙ্গে ঘরের মাঠে টানা ১১টি টেস্ট সিরিজ জয়ের কীর্তিও গড়ল তারা।
রাঁচি টেস্টের চতুর্থ দিন সকালে পর পর দুই বলে শেষ দুই উইকেটই তুলে নেন অভিষিক্ত শাহবাজ নাদিম। আগের দিনের ৮ উইকেটে ১৩২ রানের সঙ্গে আর মাত্র ১ রান যোগ করে বাকি ২ উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান থিউনিস ডি ব্রম্নইনকে ফেরান অভিষিক্ত পেসার শাহবাজ নাদিম। তিনি আগের ৩০ রানের সঙ্গে আর কিছু যোগ করতে পারেননি।
এরপর ওভারের শেষ বলে লুঙ্গি এনগিডির উইকেটও তুলে নেন নাদিম। ১ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। আইনরিখ নরকিয়া অপরাজিত থাকেন ৫ রানে। ভারত প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেটে ৪৯৭ রান তোলার পর এই টেস্টেও ব্যাটিংয়ে অসহায় ছিল প্রোটিয়ারা। প্রথম ইনিংসে ১৬২ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে তারা ৪৮ ওভারে অসহায় আত্মসমর্পণ করেন ভারতীয় বোলারদের সামনে। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনটি উইকেট নেন মোহাম্মদ শামি। দুটি করে নেন উমেশ যাদব ও শাহবাজ নাদিম। শেষ টেস্টে একমাত্র ডাবল সেঞ্চুরি করা রোহিত শর্মা পেয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। গোটা সিরিজে এক ডাবল সেঞ্চুরি ও দুই সেঞ্চুরিতে ৫২৯ রান করে সিরিজ সেরাও হয়েছেন তিনি।
এই নিয়ে কোহলির নেতৃত্বে ঘরের মাঠে টানা ১১টি টেস্ট সিরিজ জিতল ভারত। আর দক্ষিণ আফ্রিকা দলকে এই প্রথম হোয়াইটওয়াশ করল কোহলির দল। আর মোহাম্মদ শামির নেতৃত্বে ভারতের বোলিং ডিপার্টমেন্ট প্রোটিয়ারা ভালোভাবে সামলাতে পারেনি, তেমন ব্যাটিং সামলাতেও নাজেহাল হয়েছে। এই সিরিজে শামি নিয়েছেন মোট ১৩টি উইকেট।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বিশাখাপত্তমে সিরিজের প্রথম টেস্ট ২০৩ রানে জিতেছিল ভারত এবং দ্বিতীয় টেস্টে জয় ১৩৭ রানের। ওপেনার হিসেবে রোহিত শর্মার সিরিজে ৫২৯ রান অবশ্যই এই জয়ের নেপথ্য নায়ক। ঠিক তেমনি করতে হবে মায়াঙ্ক আগরওয়ালের নামও। প্রথম টেস্টে ভারতীয় এই ওপেনার ডাবল সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন।
আর এই জয়ের ফলে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে জয়ের ধারাতেই থাকল ভারত। টানা ৫ টেস্ট জিতে ২৪০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে সবার উপরে বিরাট কোহলির দল। আবার ঘরের মাঠে এটি ১২তম টেস্ট সিরিজ জয় তাদের।