লাহোরে অসময়ের বৃষ্টি আর থামল না। তৈরি হলো না টস করার পরিস্থিতিও। শেষ পর্যন্ত তাই পরিত্যক্তই হলো বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের তৃতীয় ও শেষ টি২০ ম্যাচ। টানা বৃষ্টির কারণে কাট অফ টাইমের আধঘণ্টা আগেই ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন আম্পায়াররা। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ আগেই নিশ্চিত করায় নিয়মরক্ষার ম্যাচ থেকে সান্ত্বনারও কিছু পেল না বাংলাদেশ।
পূর্বনির্ধারিত সিদ্ধান্ত মোতাবেক সোমবার রাতেই বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে ক্রিকেটাররা দেশে ফিরে আসেন মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদ, তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকার আর মুস্তাফিজরা। তবে দেশে ফিরেও বিশ্রাম মিলবে না। কারণ আগামী ফেব্রম্নয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে আবার এক ম্যাচের টেস্ট। এবারের গন্তব্য রাওয়ালপিন্ডি।
এদিন লাহোরে নির্ধারিত সময়েই মাঠে পৌঁছে যায় ক্রিকেটাররা। টস হবার কিছুক্ষণ আগে দুপুর সোয়া ২টার দিকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি নামতে থাকে। অল্প সময়ের মধ্যেই মুষলধারে বৃষ্টি নামতে শুরু করে। বৃষ্টি কমলে বার কয়েক ম্যাচের দুই আম্পায়ার মাঠ পরিদর্শন করেন। কিন্তু খেলার মতো মাঠ উপযোগী তখনো হয়ে ওঠেনি। পরে সে বৃষ্টি না থামায় নির্ধারিত সময়ের আধা ঘণ্টা আগে বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫টায় ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন আম্পায়াররা।
শেষ ম্যাচে ব্যাপক পরিবর্তনের কথা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। তাই এ ম্যাচে দেখা যেতে পারত আগের দুই ম্যাচে একাদশের বাইরে থাকা খেলোয়াড়দের। পাকিস্তানও আগেই সিরিজ জিতে নেওয়ায় পরীক্ষানিরীক্ষা চালাতে পারত। তবে এ ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার পরও আইসিসি টি২০ র?্যাংকিংয়ের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে পাকিস্তান। এ ম্যাচে হারলে দ্বিতীয় স্থানে নেমে যেত দলটি। শীর্ষে থাকতে এ সিরিজে অপরাজিত থাকতে হতো তাদের।
পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি২০ সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেই অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেটে হারের পর দ্বিতীয় টি২০তে ৯ উইকেটে বিধ্বস্ত হয় মাহমুদউলস্নাহ রিয়াদের দল। ফলে সিরিজ খুইয়ে বসে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে কিছুটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারলেও দ্বিতীয় ম্যাচেও এক অর্থে উড়ে গেছে তারা। ১৪১ রানের পুঁজি নিয়ে ৫ উইকেটে হারে প্রথম ম্যাচে। দ্বিতীয় ম্যাচে পুঁজি পায় আরও কম। ১৩৭ রানের লক্ষ্য ছুড়ে ৯ উইকেটে হারে সফরকারীরা।
তবে দুই ম্যাচেই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং স্টাইল বেশ সমালোচনা হয়েছে। কারণ প্রথম ম্যাচে ওপেনিং জুটি টিকেছিল প্রায় ১১ ওভার। কিন্তু তারপরও পাওয়ার পেস্নতে মেলে ৩৫ রান। ১০ ওভারে রান আসে মাত্র ৬২। এরপর মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরাও স্ট্রাইক রোটেড করতে পারেননি। ফলে মাঝারি পুঁজি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদের।
আর দ্বিতীয় ম্যাচে অবস্থা আরও শোচনীয়। রানের গতি আরও মন্থর। তার ওপর শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় দলটি। ফলে সাদামাটা লক্ষ্য ছুড়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদের। এরপর নির্বিষ বোলিংয়ে হারতে হয় বড় ব্যবধানে।
সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেই বাংলাদেশের ব্যাটিং ঠিক ম্যাচ জেতার মতো মানসম্মত কিছু হয়নি। লাহোরের বৃষ্টিতে সিরিজের শেষ ম্যাচটা পরিত্যক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশ দলের প্রথম দফা সফরও শেষ হলো। ফেব্রম্নয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে আইসিসির টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হিসেবে একটি টেস্ট ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশ দল দ্বিতীয় দফা পাকিস্তান সফরে যাবে। ৭ ফেব্রম্নয়ারি রাওয়ালপিন্ডিতে শুরু হবে সেই টেস্ট। এরপর তৃতীয় দফা বাংলাদেশ দল পাকিস্তান সফরে যাবে এপ্রিলের শুরুতে। সেই দফার সফরে করাচিতে বাংলাদেশ একটি ওয়ানডে এবং একটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে।